এবার হোলিকা দহনে তৈরি হচ্ছে মহাযোগ, সামান্য উপায় করলেই হবে সব মুশকিল আসান
হোলিকা দহনে মহাযোগ
হাতে মাত্র একটা দিন। তারপরেই হোলিকা দহন আর হোলি উৎসবে উড়বে রঙের ফোয়ারা। পিচকারিতে একে অপরকে ভালবাসা, ভাতৃত্ব আর স্নেহের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার পালা। আনন্দ উপভোগ তো বটেই, পাশাপাশি জ্যোতিষ এবং পৌরাণিক মতেও এই উৎসবের মহত্ব আর গুরুত্ব অনেক। হোলিকা দহনের দিন গাথা অনুযায়ী হিরণ্যকাশ্যপ-এর ছেলে ভক্ত প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য রাক্ষসী হোলিকা তাঁকে কোলে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেন। হোলিকার কাছে বর ছিল যে তিনি কখনও আগুনে পুড়বেননা। কিন্তু শ্রী হরি বিষ্ণুর আশীর্বাদে ঝলসে যান হোলিকা, আর বেঁচে যান প্রহ্লাদ। সেই থেকেই অশুভকে নাশ করতে পালন করা হয়ে থাকে হোলিকা দহন। বাংলিরা এই উৎসবকে 'ন্যাড়াপোড়া' বলে থাকেন। আর সেক্ষেত্রে জীবনের সব অশুভ বিনাশ করতে এই পরব পালিত হয়ে থাকে।
হোলিকা দহনে বিশেষ যোগ
পঞ্চাঙ্গ মতে, এ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে হোলিকা দহন হবে ১৭ মার্চ। পরের দিন অর্থাৎ ১৮ মার্চ শুক্রবার, রঙের উৎসব হোলি খেলা হবে। এই বছর হোলিতে হতে চলেছে চার মহা যোগ, যথা সর্বার্থসিদ্ধি যোগ, অমৃত যোগ, ধ্রুব যোগ এবং বৃদ্ধি যোগ। বৃদ্ধি যোগে করা কাজ সুফল দেয়। এই যোগ ব্যবসার জন্য বিশেষ বিবেচিত হয়। এছাড়াও হোলিতে বুধ-গুরুর আদিত্য যোগও তৈরি হচ্ছে। এমন অবস্থায় হোলিকা দহনের দিন অর্থাৎ ফাল্গুন পূর্ণিমার দিনে ২টি পদক্ষেপ নিলে সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আর্থিক সমস্যা মেটানোর উপায়
জীবনে ধন-সম্পত্তির সমস্যা থাকলে বা ঘরে কোনো ধরনের নেতিবাচক শক্তি থাকলে ভগবান হনুমান ও মা লক্ষ্মীর সহজ কিছু উপাচার করলেই সব সমস্যা মিটে যায়। যদিও অর্থ সংক্রান্ত সমস্যাগুলি দূর করার এবং দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়ার অনেক উপায় রয়েছে, তবে হোলিকা দহনের দিনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অর্থ সংক্রান্ত সমস্যাগুলি দূর করা যায়। হোলিকা দহন অর্থাৎ ফাল্গুন পূর্ণিমার দিনে দেবী লক্ষ্মীর বিশেষ পূজা করতে হবে।
মা লক্ষ্মীর পুজো
হোলিকা দহনের বিশেষ দিনে ঘরে একটি আসনে লাল বস্ত্র পেতে তার উপর মা লক্ষ্মীর মূর্তি স্থাপন করতে হবে। স্নানের পর ফুল, হলুদ, ধূপ, প্রদীপ, মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করলে তা খুবই শুভ। পূজার সময় 'ওম মহা লক্ষ্মায়ায় নমঃ' এই মন্ত্রটি ১০৮ বার জপ করুন। এই প্রতিকারে অর্থ সংক্রান্ত সমস্যা দূর হয়। এর সঙ্গে এটি চাকরি এবং পদোন্নতিতেও সহায়তা করে।
হনুমানজির পূজা
প্রতিটি কাজে সাফল্য এবং ঘরে সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য হোলিকা দহনের রাতে হনুমানজির পূজা করা খুব শুভ। এই দিনে হনুমানজির পূজা করতে হলে প্রথমে স্নান করতে হবে। এর পরে, একটি পরিষ্কার জায়গায় ঈশ্বরের মূর্তি স্থাপন করে তাঁকে মেটে সিঁদুর ও জুঁইফুলের গন্ধ যুক্ত তেল অর্পণ আরতি করতে হবে। তবে মহিলাদের কখনোই বজরংবলীর মাথায় বা গায়ে সিঁদুর লাগানো উচিত নয়। মহিলা হলে তাঁদের হনুমানজির পায়ে সিঁদুর অর্পণ করা উচিত। আরতির পর হনুমানজিকে গুড় ও ছোলা নিবেদন করুন। পূজার পর এই প্রসাদ সবার মাঝে বিতরণ করুন। এছাড়া সম্ভব হলে শিব মন্দিরে শিবলিঙ্গের কাছে প্রদীপ নিবেদন করুন। এতে পারিবারিক সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।