পুরীর রথযাত্রা ২০২১: কোন চিহ্ন দেখে বেছে নেওয়া হয় জগন্নাথদেবের মূর্তি নির্মাণের কাঠ, 'নবকলেবর' উৎসব একনজরে
পুরীর জগন্নাথধাম সম্পর্কে বিভিন্ন রহস্যময় ঘটনার কথা শোনা যায়। মন্দিরের ছায়া আজ পর্যন্ত কারোর দৃষ্টিগোচর হয়নি যেমন, তেমনই মন্দিরের শীর্ষরেখার আশপাশ দিয়ে পাখি উড়ে বেড়াতে পারে না বলেও কথিত রয়েছে। তবে কোন রহস্যময় বাস্তু গুণে এমনটা হয়, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা। এদিকে, এরই মাঝে পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরে রথযাত্রার আগে একধিক রীতি পালিত হয়। তারই মধ্যে একটি হল 'নবকলেবর'। যা কয়েক বছর পর পর আয়োজিত হয়। কী এই উৎসব জেনে নেওয়া যাক।
নবকলেবর উৎসব
প্রতি ১৯ বছর পর পর পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরে নকুন করে দারু মূর্তি স্থাপিত হয়। এই বিশেষ উৎসব ঘিরে করোনাকালের আগে পর্যন্ত বহু মানুষের সমাগম দেখা গিয়েছে পুরীতে। মনে করা হয় , এই উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন করে শ্রীজগন্নাথ,বলভদ্র, ও সুভদ্রাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। পুরনো মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয়। আর নতুন মূর্তি গড়ার সময় যে কাঠ বেছে নেওয়া হয়, তার কয়েকটি বৈশিষ্ট থাকে।
খুঁজে বের করতে হয় সুলক্ষণ নিম কাঠ
যে কোনও নিমকাঠ ব্যবহার করেই পুরীর মন্দিরের তিন দেবদেবীর মূর্তি গড়া যায় না। ফলে দারু মূর্তি নির্মাণের জন্য ১৯ বছর পর পর সুলক্ষণ নিমকাষ্ঠ খুঁজে বের করে তা থেকে মূর্তি নির্মাণ চলে। সেই গাছ খুঁজে বরে হতেই পালিত হয় বিশেষ আচার রীতি। তারপর তা থেকে তৈরি হয় মূর্তি।
জগন্নাথদেবের মূর্তির জন্য কী ধরনের কাঠ প্রয়োজন?
জগন্নাথ দেবের মূর্তি নির্মাণের জন্য যে দারুবৃক্ষ প্রয়োজন তাতে চারটি ডাল থাকতে হবে। গাছের ছালের রঙ গাঢ় কালো হবে। তাতে শঙ্খ ও চক্রের চিহ্ন থাকবে। গাছের নিচে সাপের গর্ত থাকতে হবে। গাছে পরগাছা থাকলে চলবে না। পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলাশয় থাকতে হবে। গাছের ভিকর পাখির বাসা থাকবে না। পুরীর মন্দিরে সুদর্শনের মূর্তি নির্মাণের জন্য নিম গাছের ছাল লাল হতে হবে। গাছটির কোনও অংশে একটি চক্র থাকতে হবে। গাছে ৩ টি ডাল থাকবে।
বলভদ্রের মূর্তির জন্য কোন চিহ্ন থাকবে?
বলভদ্রের মূর্তির জন্য যে নিমগাছ বেছে নিতে হবে, তাতে ৭ টি ডাল থাকবে। গাছের ছালের রঙ হালকা খয়েরি হবে। একটি হালের আকারের চিহ্ন এতে থাকবে। কোনও অন্ত্যেষ্টীস্থলের কাছাকাছি এটা থাকবে।
সুভদ্রার মূর্তির কাঠ কেমন হবে?
বলা হচ্ছে যে নিমকাষ্ঠ ব্যবহার করে সুভদ্রার মূর্তি নির্মাণ হবে, তাতে একটি পদ্মের চিহ্,ন থাকবে। গাছের ছালের রঙ হলদে ধরনের হবে।