আগামীকাল ভাইফোঁটা, জেনে নিন কেন পালন করা হয় ভাইয়েদের জন্য এই উৎসব
আগামীকাল ভাইফোঁটা, জেনে নিন কেন পালন করা হয় ভাইয়েদের জন্য এই উৎসব
কালীপুজো, দিওয়ালি–দীপাবলির পর এবার হিন্দুদের পবিত্র উৎসব ভাইফোঁটা বা ভাইদুজ আসতে চলেছে। যেখানে বোন বা দিদারা নিজেদের দাদা বা ভাইদের মঙ্গলকামনায় ব্রতী হন। দিওয়ালির পর দু’দিন ধরে এই উৎসব চলে। এ বছর ভাইফোঁটা বা ভাইদুজ অনুষ্ঠিত হবে ১৬ নভেম্বর।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিত
দেশের বিভিন্ন কোণায় এই উৎসবের আলাদা আলাদা নাম রয়েছে। যেমন ভাউবিজ, ভাই টিকা বা ভাইফোঁটা। রাখির মতোই এই ভাইফোঁটা কিছুটা হলেও এক, ভাইবোনের বন্ধন ও ভালোবাসা উদযাপন করা হয়। এইদিন মহিলারা তাঁদের ভাইকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান এবং তাঁদের কপালে তাঁদের মঙ্গল কামনায় টিকা ব তিলক পরিয়ে দেন। ভগবানের কাছে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং ভাইয়েরা বোনেদের হাতে উপহার তুলে দেন।
যমুনা ও যমরাজের ফোঁটা
ভাইদুজ বা ভাইফোঁটা নিয়ে বহু পুরাণ রয়েছে। কিছুজনের মতে, মৃত্যুর দেবতা যমরাজ এইদিন তাঁর বোনের বাড়ি যান। যমরাজের বোন যমি বা যমুনা, যমরাজকে আরতি করে তাঁকে বাড়িতে স্বাগত জানান এবং যমরাজের কপালে তিলক পরিয়ে দেন এবং তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। যমরাজ যমুনাকে ভালোবাসা ও তাঁর প্রতি স্নেহের পরিচয় দেয় এমন একটি উপহার দেন। যমরাজের প্রতি যমের ভালোবাসা দেখে যমরাজ ঘোষণা করেন যে কোনও ভাই যদি তাঁর বোনের থেকে তিলক ও আরতি গ্রহণ করেন এইদিনে, তবে তাঁকে আর মৃত্যুভয় পেতে হবে না। দেশের বেশ কিছু জায়গায় এটিকে তাই যম দ্বিতীয়া বলে।
সুভদ্রার শ্রীকৃষ্ণকে ফোঁটা
অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলে, ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।'
ভাইফোঁটা পালন সমারোহের সঙ্গে
পশ্চিমবঙ্গে ভাইফোঁটা একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান হলেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। পশ্চিম ভারতের ভাউবিজ একটি বর্ণময় অনুষ্ঠান। সেখানে এই উপলক্ষ্যে পারিবারিক সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয়। মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাউবিজ পালন অবশ্যকর্তব্য। এমনকি, যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ পালন করতে হয়। এই রাজ্যে বাসুন্দি পুরী বা শ্রীখণ্ড পুরী নামে একটি বিশেষ খাবার ভাইবিজ অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করার রেওয়াজ আছে।