পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে কেন শোনা যায় না সমুদ্রের আওয়াজ, নেপথ্যে কোন পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্যময় পৌরাণিক কাহিনি, কেন মন্দিরে আসেনা সমুদ্রের আওয়াজ
পুরীর জগন্নাথ মন্দির ঘিরে একাধিক রহস্যময় ঘটনা প্রচলিত রয়েছে। যে রহস্যের সমাধানে বহু বাস্তুবিদ থেকে বাস্তুকারবিদ বহু গবেষণা চালিয়েছেন। এমনই একটি রহস্যময় ঘটনা হল ,পুরীর সমুদ্রের কোনও রকমের শব্দ এই জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করলে পাওয়া যায় না। কেন এমন হয়?এর নেপথ্যে কোন পৌরাণক কাহিনি প্রচলিত রয়েছে দেখা যাক।
'মহাদধী' থেকে সিংহদ্বারের মাঝে কী ঘটে?
কথিত রয়েছে, পুরীর উপকূলকে বলা হয় মহাদধী। এই মহাদধী এলাকা থেকে পুরীর মন্দিরের সিংহদ্বারের মধ্যেই এক অদ্ভুত ফারাক লক্ষ্য করা যায়। সিংদ্বার পেরিয়ে পুরীর মন্দিরে প্রথম পা রাখলেই আচমকা উবে যায় সমুদ্রের শব্দ। এদিকে যখন মন্দির থেকে বের হন কেউ, তখনই স্পষ্ট সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়। কেন এমনটা হয়, তা নিয়েই রয়েছে বহু রহস্য। রয়েছে কিছু পৌরাণিক কাহিনি।
একবার নারদ আসেন জগন্নাথের দ্বারে , তখন..
শোনা যায়, সমুদ্রের শব্দ মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ না করার নেপথ্যে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। শোনা যায়, একবার পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ দেবের দর্শনে আসেন নারদ। সেই সময় মন্দিরের দরজায় পাহাড়ারত ছিলেন বজরংবলী হনুমানজি। নারদকে সরাসরি হনুমানজি জানান, জগন্নাথ দেব সেই সময় বিশ্রাম নিচ্ছেন। ফলে দেখা হবে না।
জগন্নাথের ঘুম আসছিল না একবার...
এদিকে, নারদ তখন একবার ভিতরে উঁকি দিয়ে দেখেন যে , শ্রীজগন্নাথ দেব উদাসী মনে বসে রয়েছেন। তখন তিনি জানতে পারেন যে সমুদ্রের আওয়াজে জগন্নাথ দেবের ঘুম আসছিল না। কথিত রয়েছে এরপরই নারদ ঘটনার কথা জানান হনুমানজিকে। কথিত রয়েছে, তখনই বজরংবলী সমুদ্রকে দূরে চলে গিয়ে নিজের আওয়াজকে রুখে দিতে বলেন। সমুদ্রে জানায়, তার পক্ষে আওয়াজ বন্ধ করার উপায় নেই। সমুদ্র জানান, হনুমানজি যদি তাঁর পিতা পবনের কাছে প্রার্থনা করেন যে হাওয়া বন্ধ করতে , তাহলেই সমুদ্রের আওয়াজ বন্ধ হবে। কারণ হাওয়া চললেই আওয়াজ সমুদ্র থেকে আসবে।
এরপর কী ঘটে যায়
পুত্রের আবেদন শুনেও পবনদেব জানান যে , হাওয়া রোখা অসম্ভব কাজ। তবে মন্দিরের আশপাশে একটি গোলা যদি নির্মাণ করা যায়, তাহলেই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে হনুমানজিকে জানান পবনদেব। এরপর পিতার পরামর্শে, বায়ু দিয়ে নির্মিত একটি চক্র সেখানে তৈরি করেন হনুমানজি। যার ফলে সেখানে হাওয়া মন্দিরের দিকে আর বইতে পারেনা। আর জগন্নাথদেব স্বস্তিতে নিদ্রা যেতে পারেন। এমনই পৌরাণিক কাহিনি পুরীর মন্দির নিয়ে কথিত রয়েছে।