
আজ জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা, এরপর কী কী রীতি পালন, কবে রথযাত্রা জেনে নিন সব
ওড়িশায় অবস্থিত পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা ভারত সহ গোটা বিশ্বে যথেষ্ট জনপ্রিয়। যদিও ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা দেশের অনেক জায়গায় ধুমধাম করে উদযাপিত হয়, তবে ওড়িশায় এটি দেখার মতো। আজ জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার দিনে ভগবান জগন্নাথ, বোন সুভদ্রা ও বড় ভাই বলরামকে আনুষ্ঠানিক স্নান করানো হবে। এরপর তিনজনকেই মন্দিরের গর্ভগৃহে রাখা হবে এবং দ্বিতীয় দিন থেকে গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর ১৫ দিন পর ভক্তদের দর্শন দিতে রথে চড়ে বের হবেন ভগবান জগন্নাথ।

মঙ্গলবার ভক্তদের দর্শন দেবেন ভগবান জগন্নাথ
ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রার প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়। জ্যোতিষীদের মতে, ১৪ জুন ভগবান জগন্নাথ ভক্তদের দর্শন দেবেন, তারপর বিকেল ৪টে থেকে ভগবানকে গর্ভগৃহ থেকে বের করে স্নান করানো হবে। ভগবান জগন্নাথের পাশাপাশি বোন সুভদ্রা ও বড় ভাই বলরামকে স্নান করানো হবে। এরপর ১৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে মন্দিরের দরজা। রথদ্বিতিয়ার দিনে মন্দিরের দরজা খুলবে। আগামী ৩০ জুন ভগবান জগন্নাথের নেত্র খোলার রীতি পালন করা হবে।

স্নানযাত্রা দর্শনের ফল
জগন্নাথ দেব হলেন স্বয়ং নারায়ণ। জগন্নাথ শব্দের অর্থ হলো এই জগতের ঈশ্বর।স্কন্দপুরাণে জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে গুন্ডিচা মন্দির অর্থাৎ জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়িতে ভগবানের শ্রীবিগ্রহ কে যে দর্শন করবেন তিনি অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল লাভ করবেন। যদি কেউ ভক্তিসহকারে একবার স্নানযাত্রা মহোৎসব দর্শন করেন তিনি এই সংসারের বন্ধন থেকে সুনিশ্চিতভাবে মুক্তি লাভ করবেন।

পুরাণ কাহিনী অনুযায়ী
স্কন্দ পুরাণ অনুসারে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন জগন্নাথ দেবের কাঠের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে এই স্নান যাত্রা উৎসব শুরু। স্নানযাত্রাকে জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব তিথি বা জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। এইদিন জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা দেবীকে বিশেষভাবে তৈরি বেদীতে নিয়ে আসা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে বিশেষভাবে তৈরি করা এই বেদীকে স্নান বেদী বলা হয়। তোরণ পতাকা সমস্ত কিছু দিয়ে সুসজ্জিত ধূপ দীপ এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয় বিগ্রহকে।স্নানযাত্রার পর জগন্নাথ দেবের মন্দির পনেরো দিন বন্ধ থাকে। পনেরো দিন পর নেত্রউৎসবে তার নয়ন খোলে বলে মনে করা হয়। পুরীকে মর্তের বৈকুণ্ঠ বা দ্বারোকা বলে মনে করা হয়।

স্নানযাত্রার পর জ্বর আসে জগন্নাথ দেবের
উৎসবের পর জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা থেকে আষাঢ়ী আমাবস্যা পর্যন্ত ভগবানকে জনসাধারণের থেকে দূরে রাখা হয়। এই কয়দিন ভগবানের নিত্যপুজা শুধু চালু থাকে। পনেরো দিন পর ভগবানকে আবার নবসাজে ফিরিয়ে আনা হয়। আবার জগন্নাথ দেবকে সবার সামনে জনসাধারণের দর্শনের জন্য নিয়ে আসা হয়। বলা হয় নাকি স্নানযাত্রার পর জগন্নাথদেবের জ্বর আসে। তাই রথযাত্রার পর্যন্ত তিনি বিশ্রাম নেন, আবার রথের দিন আত্মপ্রকাশ করেন এবং রাজবেশে সামনে আসেন।

১ জুলাই জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা বের হবে
আগামী ১ জুলাই থেকে ভক্তদের দর্শন দেবেন জগন্নাথ। এর জন্য ভগবান জগন্নাথ, তাঁর বোন সুভদ্রা এবং বড় ভাই বলরামকে নিয়ে রথে চড়বেন। এই বিখ্যাত এবং পবিত্র রথযাত্রায় অংশ নিতে সারা দেশ ও বিশ্বের লক্ষাধিক ভক্ত পুরী এসে পৌঁছান। বিশ্বাস করা হয় যে এই রথযাত্রায় অংশ নিলে ১০০টি যজ্ঞ করার ফল পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি ধর্মীয় শাস্ত্রে এ কথাও বলা হয়েছে যে, যে রথযাত্রায় যোগ দিয়ে যে গুন্ডিচা নগর পর্যন্ত যায়, সে জীবন-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পায় এবং বৈকুণ্ঠধামে স্থান পায়।
(উপরের এই তথ্য ধর্মীয় আস্থা ও লৌকিক মান্যতার উপর আধারিত)
ভরণী নক্ষত্রে প্রবেশ করেছে রাহু, ছায়া গ্রহের আশীর্বাদ পেতে করুন এই উপায়