দুর্ভোগ কাটিয়ে সৌভাগ্য ফেরাতে তৃতীয়াতে দুর্গা কী রূপে পূজিতা হন! নেপথ্যে রয়েছে কোন পৌরাণিক কথা
পিতৃপক্ষের অবসানে দেবীপক্ষের প্রারম্ভে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাতৃশক্তি আরাধনার পর্ব চলছে। বৈচিত্রময় ভারতের এক একটি প্রান্তে 'মা'-য়ের আরাধনায় বিভিন্ন আচার-রীতির মধ্য দিয়ে নিজের সংস্কৃতি তুলে ধরে। আর এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্য দিয়ে এখন দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি। নবরাত্রি , অর্থাৎ আশ্বিনের শুক্লপক্ষের প্রথমা থেকে নবমী পর্যন্ত মাতৃশক্তির নয়টি ভিন্ন রূপের পুজোর উৎসব। ২০১৯ নবরাত্রিতে আজ তৃতীয়া। এদিন দেবী চন্দ্রঘণ্টার পুজো করা হয়। শাস্ত্র মতে এই পুজোতে কাটে বহু বিপদ। এছাড়াও শাস্ত্রে এই পুজো নিয়ে বর্ণিত রয়েছে এক অসামান্য পৌরাণিক কাহিনি।

চন্দ্রঘণ্টার রূপ
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী চন্দ্রঘণ্টার হাতে অর্ধচন্দ্রের আকারের ঘণ্টা থাকে। আর সেই অর্ধচন্দ্রাকৃতি ঘণ্টা থেকেই এই নামের উৎপত্তি। অনেকে দেবীর এই রূপকে চন্দ্রিকা নামেও পূজা করেন। বলা হয়, চন্দ্রিকা রূপে দেবীর তৃতীয় নয়ন সর্বদা খোলা থাকে। যা দুরাত্মা, অসুরের বিরুদ্ধে সদা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিপাত করে।

পাবর্তীকে বিবাহকালে শিবের ক্রোধ ও চন্দ্রঘণ্টার আবির্ভাব
কথিত রয়েছে, দেবী পার্বতীকে শিব জানিয়েছিলেন যে তিনি কোনও দিনই বিবাহে আগ্রহী নন। এমন সময় দেবী পার্বতীর দুঃখ-কষ্ট দেখে শিব নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি। পাবর্তীকে বিয়ে করতে চেয়ে শিব নিজের সঙ্গী নন্দী -ভ্রিঙ্গি সহ বহু প্রেতকে নিয়ে হিমালয়রাজ হিমবানের প্রাসাদের সামনে হাজির হন। হিমবান-কন্যা পার্বতী তখন চঞ্চলা হয়ে ওঠেন। কারণ, হিমবান শিবকে পছন্দ করতেন না। এমন সময় শিব হিমবানের প্রাসাদ আক্রমণে উদ্যত হলে, পার্বতী চন্দ্রঘণ্টা রূপ ধারণ করে শিবকে প্রতিহত করেন। দেবী তখন রক্ষা করেন নিজের কূল,পরিবার। পাশাপাশি, শিবকে সুন্দর বেশে সেজে এসে তাঁর বাবা হিমবানের কাছে পাণী-প্রার্থনার পরামর্শ দেন পাবর্তী।

চন্দ্রঘণ্টা পুজো
নবরাত্রির তৃতীয় দিনে দেবী চন্দ্রঘণ্টাকে শান্তি স্থাপন ও দুর্যোগ-দুর্ভোগ কাটিতে তুলতে পুজো করা হয়। পাশাপাশি, জীবনে নিরাপত্তা পেতেও ওই দেবীর আরাধনা করা হয়। মনে করা হয় , যাবতীয় মানসিক যন্ত্রণাও কাটিয়ে তুলতে পারেন দেবী চন্দ্রঘণ্টা।
[ ২৪২ বছরে মহিষাদল রাজবাড়ির পুজো: কামান রয়েছে, রীতি মেনে সন্ধি পুজোয় এখন আর তোপধ্বনি হয় না]