মহালয়া ২০২০:মহাভারত থেকে পুরাণ ঘিরে কোন কোন কাহিনী প্রচলিত এই দিনটি ঘিরে
মহালয়া পালনের নেপথ্য়ে কোন কাহিনি প্রচলিত! মহাভারত থেকে পুরাণ কী বলে
মাঝে মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই মহালয়া। বাঙালির প্রাণের উৎসবের কাউন্টডাউন এই দিন থেকেই শুরু হয়। এই মহালয়া কেন পালিত হয়, তা নিয়ে পুরাণ থেক মহাভারত সহ বিভিন্ন জায়গায় বহু কাহিনি বর্ণিত রয়েছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই সমস্ত কাহিনি।
রামায়ণ ঘিরে কোন কাহিনী প্রচলিত?
কথিত রয়েছে, শ্রী রামচন্দ্র লঙ্কার যুদ্ধ ঘিরে দেবীকে অকাল সময় তিথিতে ,পূজা করেছিলেন। সেই বোঝন অকাল বোধন নাম পরিচিত। শাস্ত্র মতে, অকালে কোনও পুজো অনুষ্ঠান করতে গেলে, পিতৃ মাতৃ , তথা ইষ্ট দেব , দেবী, গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তর্পণ করতে হয়। আর সেই মতোই অকাল বোধনের আগে তর্পণ করেন শ্রীরামচন্দ্র। আর মহালয়ার দিনেই তা করা হয়েছিল বলে কথিত রয়েছে। কথিত রয়েছে সেই থেকেই দুর্গাপুজোর আগে মহালয়ার প্রচলন।
পুরাণ কী বলছে?
পুরাণ বলছে, যে কোনও জীবিত ব্যক্তির তিন পুরুষ পিতৃলোকে বসবাস করেন। এই পিতৃলোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি জায়গা। ফলে এই তিন প্রজন্মকে জল দান করার প্রয়োজন পড়ে, কারণ তাঁরা কোনও একটি লোকে বসবাস করতে পারেন না। আর সেই কারণে জীবিত ব্যক্তির শেষ তিন প্রজন্মেরই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। সেই থেকেই তর্পণের প্রচলন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই আত্মা স্বর্গে প্রবেশাধিকার পায় বলে চর্চিত রয়েছে।
মহাভারতে কোন কাহিনি?
এদিকে রামায়ণ বাদে মহাভারতেও রয়েছে তর্পণ ঘিরে আরও এক কাহিনি। মহাভারতে বর্ণিত রয়েছে, কর্ণের আত্মা যখন স্বর্গে বসবাস করতে শুরু করে, তখন তাঁকে খাবার হিসাবে শুধু সোনা আর রত্ন দেওয়া হয়। হতবাক কর্ণ, তখন জিজ্ঞাসা করেন, এমন দ্রব্য খাবারের জন্য তাঁকে কেন দেওয়া হল। এরপর , তাঁকে জানানো হয় যে, দাতা হিসাবে কর্ণ সারা জীবন ধরে শুধুই সোনা আর রত্ন দান করেছেন। পিতৃপুরুষকে তিনি খাবার বা জল দেননি। তাই খাবার হিসাবে তিনি রত্ন আর সোনাই পাচ্ছেন।
মহলয়া ও তর্পণ ঘিরে ঘটনা
রপর কর্ণ জানান, পিতৃপুরুষ সম্পর্কে তিনি জানা ছিলনা। কারণ, শুধু যুদ্ধের আগের রাতেই তিনি মা কুন্তীর থেকে পিতা সম্পর্কে তিনি আসল তথ্য জানতে পারেন। ফলে তার আগে পর্যন্ত যে , তিনি পিতৃপুরুষকে জলদান করেননি, তা তাঁর অনিচ্ছাকৃত ভুল। সেই ভুল সংশোধন করতেই তর্পণের পরামর্শ।
কর্ণের জলদান
কথা মতো ইন্দ্রকে ১৬ দিনের জন্য মর্ত্যে গিয়ে ভুল সংশোধন করে তর্পণ করার ছাড়পত্র দেন এরপর যমরাজ। এই ১৬ টি দিনই সেই থেকে পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত। এই তিথিতেই পূর্ব পূর্বপুরুষকে জলদান করার রীতি রয়েছে শাস্ত্রে। আর তা যদি কেউ করতে না পারেন , তাই অমাবস্যায় পিতৃপক্ষের শেষ দিনেও তর্পণ করে পূর্বপুরুষকে জলদান করা যায়।
পিতৃপক্ষ ও কিছু নিয়ম
যেহেতু এই পিতৃপক্ষের ১৬ দিন প্রেতকর্ম ও শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, তাই মনে করা হয়, এই পিতৃপক্ষে কোনও কাজই শুভ নয়। পক্ষ কেটে গেলে যে কোনও শুভ কাজ মহালয়া থেকে করা যেতে পারে।
মহালয়া ২০২০: তর্পণ থেকে অমাবস্যার সময়, তিথি একনজরে