এ বছর দোল পূর্ণিমা ও হোলি কবে জানেন, জানুন রঙের উৎসবের দিনক্ষণ, শুভ মুহূর্ত
হোলি বা দোল উৎসবের জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে। অনেক রঙের সঙ্গে প্রিয়জনদের সঙ্গে মজা, সুস্বাদু খাবারের স্বাদ এমন হয় যে মানুষ এই উৎসবে নিজেকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য দিন গুণতে শুরু করে দেন। এ বছর হোলি ও দোল উৎসব ১৮ ও ১৯ মার্চ শুক্র–শনিবার পালন করা হবে। হোলিকা দহন ১৭ মার্চের রাতে হবে। বিশ্বাস করা হয় যে হোলি উৎসবটি ভক্ত প্রহ্লাদের ভক্তি এবং ভগবান দ্বারা তাঁর জীবন রক্ষার আনন্দ হিসাবে পালিত হয়।
হোলিকা দহনের শুভ মুহূর্ত ও বিধি
এই বছর, হোলিকা দহন করার শুভ সময় ১৭ মার্চ, ২০২২ বৃহস্পতিবার রাত ০৯:২০ থেকে ১০:৩১ পর্যন্ত থাকবে। অর্থাৎ হোলিকা দহন করতে মাত্র ১ ঘন্টা ১০ মিনিট সময় পাওয়া যাবে। হোলিকা দহন করতে, হাওয়া-বাতাস রয়েছে এমন জায়গা বেছে নিয়ে, সেখানে শুকনো কাঠ এবং পাতা জমা করে স্তুপ বানাতে হয়। তারপর শুভক্ষণে সেটাকে পুজো করার পর সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন রং ও আবীর দিয়ে হোলি উদযাপন করা হয়।
হোলি উদযাপনের পেছনে থাকা পৌরাণিক কাহিনী
পুরাণ অনুসারে, রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর পরম ভক্ত ছিল। অসুর রাজার তাঁর ছেলের এই ভক্তি বিশেষ পছন্দ হয়নি। তিনি তাঁর পুত্রকে ভগবান বিষ্ণুর পুজো থেকে বিরত রাখার জন্য অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন এবং যখন তিনি প্রতিবার ব্যর্থ হন, তখন তাঁর বোন হোলিকা এই দায়িত্ব নিজের উপর নিয়ে নেন। হোলিকা এমন বর পেয়েছিলেন যে আগুন তাঁকে পোড়াতে পারবেনা। তাই তাঁর ভাগ্নে প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য সে তাঁকে কোলে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করলেন। শিশু প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ করতে থাকল এবং সে বেঁচে গেলেও হোলিকা দগ্ধ হয়ে মারা যান। সেই থেকে, প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমায় অশুভের অবসানের প্রতীক হিসেবে হোলিকা দহন পালন করা হয়।
দোল পূর্ণিমা
রঙের উৎসবে কম বেশি সামিল হন সকলেই। আর এই বিশেষ দিন উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় পুজোও হয়। দোল পূর্ণিমা হিন্দু ধর্মের জন্যে খুব শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন রাধা-কৃষ্ণের পুজো করা হয় বিশেষত। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, দোল পূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপিনীদের সঙ্গে রং খেলায় মেতেছিলেন। আবার শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্ত উৎসব চালু করেছিলেন। তাই রঙিন এই উৎসবের দিকে মুখিয়ে থাকেন অনেকেই।
বসন্ত ও দোল উৎসব
বসন্তে চারিদিকে এক অন্যরকম হাওয়া বয়। প্রকৃতিও তার চারিপাশ ঢেলে সাজায় এই সময়ে। বসন্তকে নিয়ে রয়েছে একাধিক গান। তা সে রবীন্দ্র সঙ্গীত হোক কিংবা আধুনিক। চারিদিক যেন রঙিন হয়ে ওঠে এই সময়ে। সে জন্যেই হয়তো বসন্তকে বলা হয় 'ঋতুরাজ'।