কেমন ভালোবাসা চান আপনার মনের মানুষ, জেনে নিন রাশি অনুযায়ী তার উপায়
কেমন ভালোবাসা চান আপনার মনের মানুষ, জেনে নিন রাশি অনুযায়ী তার উপায়
দু’জন মানুষের মধ্যে সম্পর্ক থাকলে একজন যদি অন্যজনের ভালোবাসার কায়দাটা জেনে যায় তবে সম্পর্কের পথ চলা আরও মসৃণ হয়ে ওঠে। প্রত্যেকটি মানুষের বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদা হয় এবং তাঁদের প্রত্যাশাও আলাদা হয় ভালোবাসার ক্ষেত্রে। অনেকে ভালোবাসেন সারপ্রাইজ দিতে আবার অনেকে তাঁদের ভালোবাসাকে লুকিয়ে রাখতে চান। তবে যদি মনের মানুষের রাশি কি তা জানা যায় তবে সেই রাশি বলে দিতে পারে আপনার প্রিয় মানুষটি আসলে কি চায় আপনার থেকে।
মেষরাশি
মঙ্গল গ্রহের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, কর্মের গ্রহ, এই অগ্নি চিহ্নের লোকেরা তারা জীবনে যা কিছু করে তা নিয়ে খুব আবেগী হয়। সর্বদা তুলনাহীন শক্তিতে ভরপুর, তারা স্বতঃস্ফূর্ততা এবং আবেগ পছন্দ করে; এবং একই জিনিস তারা তাদের জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে একই আশা করে। মেষ রাশির হৃদয় জয় করার দ্রুততম উপায় হল বার বার ডেটে যান বা দুঃসাহসিক কিছু করার পরিকল্পনা করুন। তবে যে কোনও মূল্যে একঘেয়েমি এড়িয়ে চলুন।
বৃষরাশি
বৃষরাশিরা তাদের যৌক্তিক এবং ব্যবহারিক প্রকৃতির জন্য পরিচিত, যা তাদের জীবনের সমস্ত দিক (পেশাদার এবং ব্যক্তিগত উভয়) প্রতিফলিত করে। তাদের ব্যবহারিক প্রকৃতির দিকে যেতে গিয়ে লোকেরা প্রায়শই একজন বৃষরাশিকে ভুল হিসাবে বিবেচনা করে যে তার জীবনে রোম্যান্সের অবকাশ নেই। তবে বৃষ রাশির প্রেম এবং সৌন্দর্যের গ্রহ ভেনাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তারা সুন্দর জিনিসগুলির প্রশংসা করে এবং অর্থপূর্ণ উপহারের জন্য একটি নরম কোণ রয়েছে। আপনি যদি কোনও বৃষরাশিকে মুগ্ধ করতে চান তবে আপনাকে সে কী পছন্দ করে তা জানতে হবে এবং সেই অনুসারে উপহার হিসাবে একটি ছোট কিছু দিলেও সে খুশি হবে। উপহারটি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনি যে প্রচেষ্টা করেছেন এবং তা তাকে বিশেষভাবে অনুভব করতে পারে সে সম্পর্কে এটি বৃষরাশিকে মনে করিয়ে দেবে। অসম্মানজনক এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল উপহার এবং অঙ্গভঙ্গিগুলি এড়িয়ে চলুন যার কোনও বৃষরাশির জীবনে কোনও জায়গা নেই।
মিথুন
যমজদের প্রতিনিধিত্ব করে যে রাশি তাঁদের মন জয় করা কিছুটা কঠিন হতে পারে। তাদের ধারালো অস্ত্র হল তাদের বুদ্ধি এবং দ্রুত তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যারা তাদের তীক্ষ্ণ মনের সঙ্গে মেলে। যেহেতু তারা তাদের মতামত বা জীবনযাত্রা পরিবর্তন করতে তাৎপর্যপূর্ণ, তাই তারা এমন কাউকে চায় যে তাদের আবেগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে। কেউ তাদের জীবনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে না। মিথুন রাশির হৃদয় জয় করার সেরা উপায় হল তার মনকে উদ্দীপিত করা। যখনই আপনি আপনার মিথুন প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে থাকবেন, সে শোওয়ার ঘরে হোক বা রেস্তোঁরা, নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন; এটি উভয়ের সম্পর্ককে দৃঢ় করতে সাহায্য করবে। সেই ব্যক্তিকে ভালবাসার জন্য আপনার উপায়গুলি যেন কিছুটা রহস্যময় হয়, যা মিথুনকে আপনার আগ্রহী করে তুলবে। তবে কিছু দাবী করা এবং কুরুচিপূর্ণ কোনও বিষয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
কর্কট রাশি
কর্কটদের কাছে পরিবার সবার আগে প্রাধান্য পায় আর তারা যদি সম্পর্কে জড়ায় তবে সেখানে ১০০ শতাংশ দেয় নিজেদের। কর্কট রাশির জাতক বা জাতিকা প্রেমে পড়লে তার প্রেমিক বা প্রেমিকার জন্য সে সবকিছু করতে পারে শুধু তাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ ও সুরক্ষিত রাখতে। নিজেদের ভালোবাসার প্রতি খুব আবেগপ্রবণ হয়। কর্কট রাশির জাতক বা জাতিকাকে বিশেষ অনুভব করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো একসঙ্গে কিছু সময় কাটানো। সেটা একসঙ্গে টিভি দেখা হতে পারে বা একসঙ্গে বিছানায় একান্ত সময় কাটানো হতে পারে। তবে সম্পর্কে এরা কোনও তিক্ত অনুভূতিক প্রশ্রয় দেয় না।
সিংহ রাশি
এই রাশি সিংহ দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করে এবং জঙ্গলের রাজার মতো এই রাশির জাতকরাও মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়। সিংহ রাশিরা পছন্দ করতে লাইমলাইট, অমিতব্যয়ী রোম্যান্স এবং দামি উপহার। সিংহ রাশির জাতক-জাতিকাদের ভালোবাসার বারআ, উপহার ও বিভিন্ন ভঙ্গিমার মাধ্যমে বোঝাতে হয় যে সে কতটা মূল্যবান। এগুলি সিংহ রাশিকে প্রভাবিত করে। সিংহ রাশির জাতক-জাতিকারা একটু রাজার মতো বাঁচতে মতো পছন্দ করে, তাই মাঝে মধ্যে দামী উপহার এবং বিদেশে ছুটি এই রোম্যান্সকে বাঁচিয়ে রাখে।
কন্যারাশি
পারফেকশনিস্ট কন্যারাশি সর্বদা তার প্রেমিক-প্রেমিকার আগ্রহ এবং সুখকে তার নিজের আগে রাখে। কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে, কোনও কন্যারাশি অন্য ব্যক্তিকে খুশি রাখতে এবং তার সম্পর্কের সমস্ত উপাদানগুলির নিখুঁত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সমস্ত কিছু করতে পারে। সুতরাং, কোনও কন্যা রাশির বেশিরভাগই নিজেকে ভালবাসা অনুভব করার জন্য প্রশংসা পেতে চায়, উদাহরণস্বরূপ যখন তার সঙ্গী ডিনার বা উপহারের মতো ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে কন্যা রাশির মন জয়ের চেষ্টা করে তখন অবশ্যই পারফেকশনিস্টের হৃদয় জয় করবে। তবে কোনও কন্যা রাশির কখনও সমালোচনা করবেন না বা পারফেকশনিস্ট হওয়ার কারণে তাকে নিয়ে ঠাট্ট তামাশা করবেন না।
তুলারাশি
ভালো মানের প্রেমিক/প্রেমিকা তুলা রাশির জাতকরা। জন্মগতভাবেই তুলা রাশির জাতক-জাতিকারা প্রেম-ভালবাসার দিক দিয়ে পরিপক্ব হয়ে থাকেন। আচার আচরণের তুলাদের বৈশিষ্ট্য ব্যতিক্রমী। যে কারনে তারা সহজেই বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে আকর্ষণ করে থাকে। তুলার সংস্পর্শে বিপরীত লিঙ্গ অনেক বেশি রোমাঞ্চ অনুভব করে থাকেন। তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই তাদের প্রতি বিপরীত লিঙ্গের আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলা। তবে তুলাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা কম হয়ে থাকে। অতিরিক্ত চাপ বা দায়িত্ব এরা কাঁধে নিতে পারেন না। এদের কখই ভালবাসার মানুষের জন্য অধীর অপেক্ষায় বসে থাকতে দেয়া যায় না তাদের। অথচ ভালবাসায় মানুষটির মনে তার প্রতি তীব্র আকর্ষণ তৈরি করে তুলা। শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এদের দৃষ্টিভঙ্গি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ। অনেকসময় আপনার তীব্র শারীরিক আকর্ষণ আপনার ব্যক্তিত্বকে আপনার জীবনসঙ্গীর কাছে সন্দেহজনক করে তুলবে।
বৃশ্চিক
বারো রাশির জাতক-জাতিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ যার ভালবাসার হরমোন রয়েছে সে হলো বৃশ্চিক। বৃশ্চিক ভালবাসার বারুদ। যেমন মনে, তেমন শরীরে। বৃশ্চিকের সুন্দর শারীরিক গঠন ও আবেদন তাকে শারীরিকভাবে আকষণীয়, প্রচণ্ড কামুক ও আকর্ষণ করে তোলা। এক কথায় ভালবাসার ক্ষেত্রে বৃশ্চিক অতুলনীয়। কিন্তু বৃশ্চিককে সহজে বুঝতে পারা যায় না। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে ও বৃশ্চিক সবচেয়ে দুর্বোধ্য। বৃশ্চিক ভালবাসে মন-প্রাণ-দেহ সবকিছু নিয়ে। বিপরীত লিঙ্গকে পেতে চায় সেভাবেই। এজন্য বলা যেতে পারে বৃশ্চিক একজন আদর্শ প্রেমিক। কিন্তু সমস্যা হলো, বৃশ্চিকের বিপরীত লিঙ্গটি তার এ ব্যাপারগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বুঝতেই পারে না। অনেক ক্ষেত্রে ভুল ঝুঝে বসে। সে কারণে বৃশ্চিক অনেক সময় হতাশায় আক্রান্ত হয়। আর বৃশ্চিকের হতাশার বহিপ্রকাশ হলো, তীব্র আক্রামণত্মক ও নিমর্ম আচরণ।
ধনু
ধনুর চারিত্রিক মিশ্রণটা বড় অদ্ভুত। এ কিছুটা দাম্ভিক স্বভাবের হয়ে থাকে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত আচরণ প্রদর্শন করে থাকে ধনুর চরিত্রের এই দিকটি বিশ্লেষণ করা বলা যেতে পারে, যাকে ভালো লাগে তাকে পাত্তাই দেন না, আর যাকে ভালো লাগে তার সঙ্গে অনেকটা বেহায়ার মতো মেশেন ধনু। আবার ঘন ঘন আবেগ পরিবর্তন হতে বেশি দেখা যায় ধনুর মধ্যে অর্থাৎ যার সঙ্গে এখন মিশছেন, একটু আরেকজন আরো আকর্ষণীয় কাউকে ধরে গেলে আগের জনকে অবহেলা নতুন জনের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাতে করেন ধনু। নতুন সুর্দশন মুখ বা সম্পর্কের হাতছানি পেলে আগ্রহী ওঠেন। সেই অর্থে সঙ্গী হিসেবে ভালো প্রেমিক/প্রেমিকা হিসেবেও ভালো বিশ্বাসী নন ধনু।
মকর
প্রেমের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেরসিক জাতক-জাতিকা হলো মকর। প্রেম-ভালবাসা বিষয়টা মকরকে খুব একটা নাড়া দেয় না। এটা মকর জাতক-জাতিকার একটি বড় বৈশিষ্ট্য। আবার তাদের স্বভাবচরিত্রও অমন হয় না যে, তারা অন্যদের খুব বেশি আকর্ষণ করতে পারেন। প্রেমের ব্যাপারে অতটা আগ্রহী না হলেও টাকা-পয়সা, আরাম-আয়েশ, থাকা-খাওয়া, সংসার ইত্যাদি ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে মকরের। স্বভাবগতভাবেই মকর সুবিধাবাদী, সীমাবদ্ধ মানসিকতার অধিকারী।
কুম্ভ
ভালবাসার ক্ষেত্রে প্রায় ধনুর মতো আরেকটি গোত্র কুম্ভ। তবে এদের ঠিক বেরসিক বলা যায় না, বলতে হয় এরা নির্লিপ্ত। একটু বেশি খুঁতখুঁতে হয়ে থাকে কুম্ভরা। বড় বেশি যাচাই-বাছাই করার মানসিকতার কুম্ভের। এ ব্যাপারগুলো সর্ম্পকে গড়ার পথে এবং দীর্ঘ স্থায়িত্বের পথে বড় বাধা। কুম্ভের ধারণা থাকে, তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অন্যের ভালবাসা পাওয়ার অধিকার রাখে। অন্যকে সুখী করার পথে এটা একটা বড় বাধা। কুম্ভরা স্বভাবগতভাবে অহঙ্কারী ও হয়ে থাকে। নাক উঁচু একটা ভাব থাকে তাদের মাঝে। যার ফলে বিপরীত লিঙ্গ তাদের সংস্পর্কে এসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। কুম্ভের এর স্বভাবটি একান্তভাবেই পরিবর্তন করা দরকার। না হলে নিঃসঙ্গ হয়ে বাস করতে হতে পারে। অবশ্য কুম্ভদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন অবস্থা মেনে নিতে হয়।
মীন
রাশিগত কারণেই মীন বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করে থাকে। কারণ তার প্রতীক এক নয়, দুই। একা থাকা মীনের ধর্ম নয়। যে কারণে কখনো কোনো সম্পর্কে ভেঙে গেলে ও আবার তা জোড়া লাগে। অথবা মীনের কপালে জুটে যায় নতুন কেউ। এভাবে চলতে থাকে মীনের প্রেম-ভালবাসা বা দাম্পত্য জীবন। কিন্তু একটা কথা বলতেই হয় যে, প্রেম-ভালবাসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অদ্ভুত চরিত্রটির নাম মীন। এক্ষেত্রে কারণ হলো, মীন রাশির প্রতীক দ্বৈত। আর এই দ্বৈততার কারণে মীন একদিকে যেমন মোহময় বৈচিত্র্য খোঁজেন, অন্যদিকে তেমনি তার পছন্দ নিঃসঙ্গতারও। তাই কোনো সম্পর্কে ভেঙ্গে গেলে মীন তেমন একটা ব্যথিত হন না। বরং তার জীবনের এটা এক সময় অভ্যস্ততায় পরিণত হয় যে, এক হৃদয় ভাঙে বহুবার, আবার তা জোড়াও লাগে বহুবার। দ্বৈততার কারণেই মীনের মনে ভালবাসার একটা স্বতঃস্ফুর্ত অনুভূতি তৈরি হয়।