হোলিকা দহনের সময় করুন এই সহজ প্রতিকারগুলি, থাকবে আর্থিক সঙ্কট
হোলিকা দহনের সময় করুন এই সহজ প্রতিকারগুলি, থাকবে আর্থিক সঙ্কট
হোলি বা দোল উৎসব আসতে আর মাত্র একমাস বাকি রয়েছে। রঙের এই উৎসবে মেতে উঠতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে সকলে। দশেরা এবং দেওয়ালির মতো, অঞ্চল বৈভিন্নে দোলেরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা৷ উত্তর ভারতে যা 'হোলি’ নামে পরিচিত, দক্ষিণে সেটাই আবার 'মদনদাহন’ বা 'কামায়ন’ উৎসব ৷ মধ্য ভারতে এই উৎসবকে বলে 'হোরি’৷ আবার গোয়া-কঙ্কন অঞ্চলে একই ধরণের অনুষ্ঠান 'শিমাগা’ নামে পরিচিত৷ ওডিশায় যাকে 'দোলোৎসব’ বলে, বাংলায় সেটাই 'দোলযাত্রা’৷ তবে এই হোলির আগে পালন হয় হোলিকা দহন বা বাংলায় যাকে আমরা বলি 'নেড়াপোড়া’ বা 'বুড়ির ঘর পোড়ানো’। এ বছর হোলির আগে হোলিকা দহন পালন করা হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি।
হিন্দুদের কাছে শুভ হোলিকা দহন
হোলিকা দহন হিন্দুদের কাছে খুবই শুভ বলে মানা হয়। এইদিন মানুষ নিজেদের মধ্যেকার ভুল-ভ্রান্তি, ভেদাভেদ ভুলে একে-অপরকে আলিঙ্গন করে নতুন কিছুর সূচনা করেন। এরকম করলে মানুষের মধ্যেকার নেতিবাচকতা দূর হয়। মনে করা হয় যে এইদিন বিশেষ কিছু উপায় করলে মা লক্ষ্মীর কৃপা বর্ষণ হয় আপনার ওপরে এবং আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হোলিকা দহনের দিন করুন এই উপায়
বলা হয় যে হোলিকা দহনের সময় আগুনে সর্ষের দানা দিন এবং সেই সময় মা লক্ষ্মীর পুজো করুন। এরকম করলে জীবনে অর্থের অভাব হবে না। এতে জীবনে যশ ও সম্মান প্রাপ্তি হবে।
হোলির দিন মুক্ত শঙ্খকে স্নান করিয়ে তার পুজো করলে আর্থিক সঙ্কট কেটে যায়। জীবনে অর্থের অভাব থাকে না। ম লক্ষ্মীও প্রসন্ন হন।
হোলিকা দহনের সময় আগুনে তিসি, গম, মটর ও ছোলা দিলে অর্থের সঙ্কট দূর করা যায়। এইদিন সকালে উঠে শাহী স্নান করে দান-পুণ্য করলে ব সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।
হোলিকা দহনের দিন ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো এবং বস্ত্র দান করলে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। এই দিনে ব্রাহ্মণকে অন্ন দান করা এবং দক্ষিণা দান করাও শুভ বলে বিবেচিত হয়।
পুজোর মাধ্যমে থেমে থাকা কাজ সম্পন্ন হয়
জেনে রাখুন যে হোলি উৎসব প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। এর একদিন আগে, ছোট হোলির দিন সন্ধ্যায় হোলিকা দহন করা হয়। এই দিনে পুজার বিশেষ স্বীকৃতিও রয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে যথাযথভাবে পুজো করলে সব সমস্যা দূর হয় এবং অমীমাংসিত কাজগুলি সম্পন্ন হয়।
হোলিকা দহনের পৌরাণিক গুরুত্ব
হোলি শব্দটা এসেছে হিন্দি 'হোলিকা-দহন' থেকে। এই হোলিকা ছিলেন, দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর বোন। বিষ্ণুপুরাণের বর্ণনায় বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার হিসেবে পাওয়া যায় নৃসিংহ বা নরসিংহ অবতারের নাম। ব্রহ্মার কাছ থেকে বকলমে অমরত্ব লাভের পর হিরণ্যকশিপু নিজেকে একচ্ছত্র সম্রাট বলে ভাবতে শুরু করেন এবং ক্রমেই অনমনীয় হয়ে উঠতে থাকেন। এ দিকে নারদের প্রশ্রয়ে থেকে হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ বিষ্ণুভক্ত হয়ে ওঠেন। হিরণ্যকশিপুর কানে এই খবর যাওয়া মাত্র ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি এবং নিজের পুত্রকেই হত্যা করতে উদ্যোগী হন। অথচ কী আশ্চর্য, বিভিন্ন চেষ্টার পরেও অক্ষত থেকে যান প্রহ্লাদ! অবশেষে ডাক পড়ে হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকার, আগুন যাকে স্পর্শ করতে পারে না৷ নির্ধারিত দিনে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করে হোলিকা৷ বিষ্ণুর আশীর্বাদে আগুন থেকে অক্ষত বেরিয়ে আসে প্রহ্লাদ, আর জীবন্ত দগ্ধ হয়ে যায় হোলিকা৷ পর দিন ফাল্গুন পূর্ণিমা৷ হোলিকার মৃত্যুতে খুশি মানুষের মধ্যে শুরু হয় রঙিন খুশির উৎসব 'হোলি'৷ আগুনের গ্রাসে হোলিকার মৃত্যুর ঘটনাটিই 'হোলিকা দহন'।
সূর্যের গোচরের ফলে ১৫ মার্চ পর্যন্ত এই রাশির জাতকরা বিশেষ লাভ পাবেন