হোলি অসম্পূর্ণ হোলিকা দহন ছাড়া, জেনে নিন এর ইতিহাস, তাৎপর্য ও পুজোর দিনক্ষণ ও বিধি
হোলি অসম্পূর্ণ হোলিকা দহন ছাড়া
রঙের উৎসব হোলি দোরগোড়ায়। আর সকলেই এই উৎসবে মাততে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে। হোলি উৎসবকে অনেকে বসন্ত উৎসব বলেও অভিহিত করেন, ,কারণ দীর্ঘ শীতকালের পর বসন্ত আমাদের মনকে শান্তি দেয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমাতে ২দিন ধরে চলে এই রঙের উৎসব।
এ বছর হোলি পালন করা হবে ২৯ মার্চ এবং হোলিকা দহন ২৮ মার্চ হবে বলে জানা গিয়েছে। হোলির ঠিক আগের দিন সূর্যাস্তের পর খড়, শুকনো কাঠ এক জায়গায় জড়ো করে আগুন ধরানো হয়, এই হোলির দহন মন্দের ওপর শুভ শক্তির জয়কে চিহ্নিত করে। এই আগুনের চারপাশে মানুষ ঘুরতে ঘুরতে গান–নাচ করে থাকেন। হোলিকা দহনের পরই এই হোলি উৎসব শুরু হয়। বাংলার মানুষ এই রীতিকে ন্যাড়াপোড়া নামে চেনেন যা দোল উৎসবের আগের দিন হয়ে থাকে। এই হোলিকা দহনকে ঘিরে সামাজিক ও ব্যক্তিগত এবং ঘরোয়া অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে এ বছর করোনা মহামারি আবহে উৎসব পালনে অনেক বিধি–নিষেধ রয়েছে। দেশে করোনা কেস বৃদ্ধির জন্য জনসমাগম করতে নিষেদ করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
হোলিকা দহনের তাৎপর্য ও ইতিহাস
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, হিরণকাশ্যপ বলে একজন রাজা ছিলেন। যিনি চাইতেন তাঁকেই সবাই ইশ্বর বলে মনে করুক। কিন্তু তাঁর নিজের পুত্র প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর অন্ধ ভক্ত ছিলেন এবং হিরণ্যকাশ্যপের কাছে মাথা নত করতে অস্বীকার করেছিল। হিরণ্যকাশ্যপের বোন হোলিকা জ্বলন্ত চিতায় প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে বসেন তাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে। হোলিকা বর পেয়েচিলেন যে তাঁকে অগ্নি কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। প্রহ্লাদ ক্রমাগত বিষ্ণুসর নাম স্মরণ করতে থাকেন, দেখা যায় প্রহ্লাদের কোনও ক্ষতি হয়নি বরং আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় হোলিকার।
হোলিকা দহনের দিনক্ষণ
হোলিকা দহন পূর্ণিমার অর্ধভাগে হয় এবং কোনও শুভ কাজ ভাদ্রমাসে করতে নেই।
হোলিকা দহনের সময়
রবিবার, ২৮ মার্চ ২০২১ হোলিকা দহন
কতক্ষণ থাকছেঃ সন্ধ্যা ৬টা ৩৭ থেকে রাত ৮টা ৫৬ পর্যন্ত
সময়ঃ ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট
পূর্ণিমা তিথি শুরুঃ ২৮ মার্চ দুপুর ৩টে ২৭ মিনিটে
পূর্ণিমা তিথি শেষঃ ২৯ মার্চ দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটে
হোলিকা দহনের পুজোর বিধি
হোলিকা দহনে সবাই শুকনো কাঠ, খড়, গাছের ডাল, শুকনো পাতা জোগাড় করে চিতা সাজায় এবং সন্ধ্যার শুভ সময়ে আগুন ধরায়। আগুন ধরানোর পর সকলে ঋক বেদের রক্ষোঘ্ন মন্ত্র উচ্চারণ করে, যাতে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়। হোলিকা দহনের ছাই পরের দিন সকালে সংগ্রহ করে তা শরীরে লাগানো হয়, এতে পবিত্র হয় বলে মনে করা হয়। গোবরের মালা, রোলি, চাল (ভাঙা নয়), ধূপকাঠি, ফুল, পৈতে, হলুদের টুকরো, ভআঙা নয় এমন মুগ ডাল, বাতাশা, আবির ও নারকেল প্রয়োজন হয় এই পুজোতে।
হোলির আগের দিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে এই হোলিকা দহনের পুজো করা হয়।
করোনাকালে ভারতের তরফে বাংলাদেশ পেল নয়া 'উপহার'