অফিসে ঢোকার ব্যস্ততা নিয়েই ডালহৌসিতে নিজের দফতরে ঢুকেছিল ক্যান্ডিস ব্রাসিও। এক চা-কোম্পানির উচ্চপদে কর্মরত ক্যান্ডিস। সকালে তখন সবে দু'একজন করে সহকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। সকলের সঙ্গে চলছে গুড মর্নিং সম্ভাষণ। আর এমন সময়ই আচমকা যেন দুলে উঠল গোটা বাড়িটা।
এমন অভিজ্ঞতা এর আগে কখনও হয়নি ক্যান্ডিসের। দশ বছরের বেশি সময় ধরে এই সংস্থায় কাজ করছেন। কিন্তু, অফিসটা কোনওদিনই এমনভাবে দুলে ওঠেনি। অনেকে ভেবেছিলেন অফিস বাড়িটা পুরনো নির্মাণ হওয়ায় হয়তো সমস্যা হয়েছে। আতঙ্কে ক্যান্ডিস ও তাঁর সহকর্মীরা অফিস লবিতে ছুটে চলে আসেন। তথনও দুলুনি থামেনি এরই মধ্যে কেউ কেউ বলতে থাকেন এটা ভূমিকম্প। তখন যেন আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছিল প্রত্যেকের। অধিকাংশ মানুষ লবির মধ্যে ছোটাছুটি করতে থাকেন। বাইরে বেরবেন কি না এমন চিন্তা যখন সকলে করতে শুরু করেছে তখন কম্পন থমকে যায়। হাফ ছেড়ে বাঁচেন সকলে। আর একটুক্ষণ কম্পন অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি কোথায় যেত তা যেন অনুধাবন করতে পারছেন ক্যান্ডিস। ভূমিকম্প বহুবার অনুভূত করেছেন কিন্তু কোনও দিনই অফিস শুরু সময়ে খোদ অফিসের মধ্যে ভূমিকম্প অনুভূত করেননি। ক্যান্ডিসের আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছিল কারণ বুধবার ভোরেই তিনি ভূমিকম্পের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই ভূমিকম্পের স্বপ্নের কথা তিনি আবার কানাডায় থাকা দিদি ও জামাইবাবুকেও বলেছিলেন। ভোরবেলায় এমন স্বপ্ন ফলে যাওয়াতেই স্বাভাবিকভাবে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। যদিও, এসএসকেএম-এর সাইক্রিয়াটিক বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর ইন্দ্রনীল সাহা জানিয়েছেন, এমনসব ঘটনা কাকতালীয়। কোনও স্বপ্ন দেখা হল আর তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও ঘটনা মিলে গেল, এগুলির কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হয় না। তবে, তার মতে বাস্তবে আমরা অনকেকেই অনেক ঘটনা দেখি, কল্পনা করি। আর সেই সব ঘটনার অনেক কিছু আমাদের অবচেতন মনে প্রভাব ফেলে। ঘুমের ঘোরে এই সব ঘটনা স্বপ্নের মাধ্যমে ফিরে আসে। কম্পনের সময় ক্য়ান্ডিসের স্বামী সুনীল গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তাঁকেও ফোন করেন ক্যান্ডিস। কিন্তু গাড়ি চালানোয় কম্পন সেভাবে বুঝতে পারেননি সুনীল। বাড়িতে বৃদ্ধা মা রয়েছেন। তিনি ঠিক আছেন কি না তাও খোঁজে নেন। সবাই সুস্থ আছে জানার পর আতঙ্ক কাটে ক্য়ান্ডিসের। যিসাস-কে ধন্যবাদও জানান।