যোগী গড়ে দাঙ্গাবাজদের রুখে দিয়েছেন! এই রাজমিস্ত্রির কাজ জানলে শ্রদ্ধায় মাথা নত করবেন

বছরের পর বছর ধরে যোগী গড়ে এক মসজিদ রক্ষা করে চলেছেন এক হিন্দু। মুজফ্ফরনগরের নানহেদার ওই ব্যক্তির নাম রামবীর কাশ্যপ। ভোর হতেই মসজিদ পরিষ্কার করেন তিনি। আর সন্ধেয় জ্বালান মোমবাতি।


বছরের পর বছর ধরে যোগী গড়ে এক মসজিদ রক্ষা করে চলেছেন এক হিন্দু। মুজফ্ফরনগরের নানহেদার ওই ব্যক্তির নাম রামবীর কাশ্যপ। ভোর হতেই মসজিদ পরিষ্কার করেন তিনি। আর সন্ধেয় জ্বালান মোমবাতি। আর প্রত্যেক বছর রমজানের আগে মসজিদকে শ্বেতশুভ্র করার দায়িত্বও নেন তিনি। ২০১৩ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় মসজিদ ভাঙতে যাওয়া দুষ্কৃতীদের একা হাতে রুখে দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

প্রায় ১২০ বছরের পুরনো মসজিদ রক্ষাকে নিজের ধর্মীয় কাজ বলেই মনে করেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ৫৯ বছরের রামবীর। আর বলেন, তাঁর বিশ্বাস তাকে সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শিখিয়েছে।

Advertisement

আশ্চর্যজনকভাবে মুজফ্ফরনগরের নানহেদা গ্রামে কোনও মুসলিম বসতি নেই। জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত নানহেদা গ্রামটি জাঠ অধ্যুষিত। তবে গ্রামে কিছু দলিত এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষও বাস করেন।

রামবীর কাশ্যপ জানিয়েছেন, ব্রিটিশ শাসনের সময়ে গ্রামে প্রচুর মুসলিম বাস করতেন। স্বাধীনতার পর থেকে আস্তে আস্তে তাঁরা গ্রাম ছাড়েন। বর্তমানে পর্যটকরা মাঝে মধ্যে সেখানে যান বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নমাজেও অংশ নেন।

Advertisement

রামবীর জানিয়েছেন, মসজিদ থেকে তাঁর বাড়ি খুব বেশি হলে ১০০ মিটার। এই পরিকাঠামো দেখেই তিনি বড় হয়েছেন। এর চারপাশেই তিনি ছোটবেলায় খেলা করেছেন। তাঁর কাছে সেটি পুজোর জায়গা, যা সম্মানের দাবি করে বলে মনে করেন রামবীর। এই জায়গার পর্যবেক্ষণের কেউ না থাকায় তিনিই সেই কাজ নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। গত ২৫ বছর ধরে টানা মসজিদের পরিচর্যা করে চলেছেন বলে জানিয়েছেন।

নিজেই রাজমিস্ত্রি হওয়ায়, অল্পবিস্তর সারাইয়ের কাজটি তিনি নিজেই করেন বলে জানিয়েছেন। এই কাজের জন্য শুধু নিজের গ্রামেই নয়, এলাকাতেও লোকে তাঁকে সম্ভ্রমের চোখে দেখেন বলে জানিয়েছেন রামবীর।

Advertisement

নানহেদা গ্রামের প্রধান দারা সিং জানিয়েছেন, গ্রাম থেকে শেষ মুসলিম পরিবারটি চলে যায় প্রায় ৫০ বছর আগে। কিন্তু সেই সময়ের পর থেকে মসজিদটিকে যেভাবে রক্ষা করা উচিত, সেই ভাবেই তা রাখা হয়েছে। তবে তার পুরো কৃতিত্বই রামবীরের। সে অনেক সময়ই নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে এই মসজিদের পরিচর্যা করে থাকে। কোনও কোনও সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা মসজিদ পরিষ্কারে তাঁকে সাহায্য করেন।

Advertisement

প্রতিবেশী গ্রাম খেদি ফিরোজাবাদের বাসিন্দা খুশনসিব আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি হিন্দু ব্যক্তির ওই কাজে অবাকই হয়েছেন। তবে দেশে যে ভালবাসার জায়গা রয়েছে এই ঘটনা থেকেই তা পরিষ্কার।

দারুল উলুম-এর আসরফ উসমানি বলেছেন, এই জন্যই বলে ভারত মহান। নানহেদার মতো এরকম অনেক উদাহরণ ছড়িয়ে আছে সারা ভারতেই। দেশভাগের পর যখন মুসলিমরা যখন পাকিস্তানে চলে যান, তখন বিশেষ করে পঞ্জাবের মসজিদগুলিকে রক্ষা করছেন হিন্দু এবং শিখরাই। সেরকমই মুসলিমরা মন্দির রক্ষা করে চলেছেন অনেক জায়গাতেই।

Advertisement

এইরকমই একজন হলেন পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার পাত্রা গ্রামের ইয়াসিন পাঠান। এলাকার বহু মন্দির বছরের পর বছর ধরে পরিচর্যা করছেন তিনি।

English Summary

Ramveer Kashyap Selflessly Takes Care Of Mosque He Saved During 2013 Riots in Muzaffarnagar