কংগ্রেসকে ভেঙে কি সম্ভব বিজেপিকে উপড়ে ফেলা! তৃণমূলকে নয়া টার্গেট দিলেন অভিষেক
কংগ্রেসকে ভেঙে কি সম্ভব বিজেপিকে উপড়ে ফেলা! তৃণমূলকে নয়া টার্গেট দিলেন অভিষেক
তৃণমূল চায় বিজেপিকে উপড়ে ফেলতে। কিন্তু দিকে দিকে তারা ভাঙন ধরাচ্ছে কংগ্রেসে। ত্রিপুরার পর গোয়া, গোটার পর মেঘালয়, এখন আবার অসম। সর্বত্রই তৃণমূল কংগ্রেসকে ভেঙে ভিত তৈরি করছে, লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। কিন্তু প্রতি রাজ্যকেই কি পশ্চিমবঙ্গ ভেবে লক্ষ্যপূরণে সফল হবে তৃণমূল? কোন জাদুবলে তা সম্ভব, প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যাচ্ছে।
কংগ্রেসকে ভেঙে বিজেপিকে হারানোর পরিকল্পনা তৃণমূলের
ত্রিপুরা, গোয়া, মেঘালয়ের পর অসমে পা রেখেছে তৃণমূল। কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কের ভরসায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে তারা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অসমে পা রেখে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন। কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি রিপুন বোরাকে দলে নিয়েছে তৃণমূল। আরও অনেক কংগ্রেস নেতা-কর্মী তৃণমূলে এসেছেন। তাঁদের দলে নিয়েই তৃণমূল চাইছে বিজেপিকে শাসন ক্ষমতা থেকে হঠাতে।
বিজেপিকে হটানোর মতো কোনও পন্থা দেখাতে পারেনি ত্রিপুরায়
২০২১-এ বাংলার ভোটে বিজেপির পর্যুদস্ত করার পরই ত্রিপুরাকে পাখির চোখ করেছিল তৃণমূল। তখনই কংগ্রেস থেক তাঁরা ভাঙিয়ে নিয়েছিল মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেবকে। তিনি মূলত অসমের নেত্রী। তাঁর ত্রিপুরা-যোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সন্তোষমোহন দেবের কন্যা সুস্মিতা দেব। সন্তোষমোহন দেবের ত্রিপুরা-যোগকে কাজে লাগিয়ে মেয়ে সুস্মিতা দেব প্রচার শুরু করেন। ত্রিপুরায় কংগ্রেসকে ভেঙেই যাত্রা শুরু করে তৃণমূল। পুরসভা নির্বাচনে প্রাথমিক সাফল্য পেলেও এখনও বিজেপিকে হটানোর মতো কোনও কাজ করে দেখাতে পারেনি।
কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসিয়ে বিজেপিকে সুবিধা গোয়ায়
এরই মধ্যে গোয়ায় পা রেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসকে ভেঙে সংগঠন তৈরি করে তিনমাসের মধ্যেই বিধানসভা অংশ নিয়েছিল তারা। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। কোনও খাতা খুলতে পারেনি তারা। তৃণমূল গোয়ায় পা রাখায় বিজেপিরই সুবিধা হয়েছে। কংগ্রেসকে হারিয়ে ফের ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। কংগ্রেসকে ভেঙে তাদের ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসিয়ে বিজেপিকে সেই কাজে সুবিধা করে দিয়েছে তৃণমূল, এমনটাই অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের।
ত্রিপুরায় কংগ্রেস ভেঙে বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল
শুধু ত্রিপুরা বা গোয়া নয়, এর মধ্যে রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশেও কংগ্রেসকে ভেঙেছে তৃণমূল। আর কংগ্রেসকে ভেঙেছে মেঘালয়ে। মেঘালয়ে এই মুহূর্তে তৃণমূলই প্রাথমিকভাবে প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠেছে। ঠিক যেমন ২০১৬ সালে ত্রিপুরায় কংগ্রেসকে ভেঙে তৃণমূল প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠেছিল। সুদীপ রায় বর্মনের নেতৃত্বে কংগ্রেসের বিধায়করা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। আবার তাঁরাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে ত্রিপুরায় গেরুয়া পতাকা তুলেছিলেন।
ত্রিপুরায় চতুর্মুখী লড়াইয়ে বিজেপি বিরোধী শক্তি তিনভাগ
এবার যে ত্রিপুরায় পা রেখেছে তৃণমূল, সেখানেও একই শর্ত। কংগ্রেসকে নকুন করে ভেঙে তৃণমূলের সংগঠন গড়ে তুলেছেন। বিজেপিতে ভয়ানক গোষ্ঠীকোন্দল থাকা সত্ত্বেও সে অর্থে আঁচড় কাটতে পারেনি তারা। বরং সুদীপ রায় বর্মনরা বিজেপিতে বিদ্রোহী হয়ে ফিরে গিয়েছেন কংগ্রেসে। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় চতুর্মুখী লড়াইয়ে বিজেপি বিরোধী শক্তি তিনভাগে ভাগ। ফলে সুবিধা হবে বিজেপিরই। তাই ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে খোস মেজাজে বিপ্লব দেব অ্যান্ড কোম্পানি।
বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে দিয়ে হবে না, তৃণমূলই পারে
আর এবার অসমের দিকে নজর দিল তৃণমূল। এদিন অসমে গিয়ে পার্টি অফিস উদ্বোধন করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা-নেত্রীকে যোগ দেওয়ালেন তিনি। গুয়াহাটির কর্মিসভা থেকে তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। তাঁর সাফ কথা বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে দিয়ে হবে না। রাস্তায় নেমে লড়াই করতে হবে। সেটা একমাত্র পারে তৃণমূল। আর কংগ্রেস শুধু টুইটারেই সক্রিয় থাকে।
কংগ্রেস ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসালে বিজেপিরই ফায়দা
অর্থাৎ অসমেও যে তিনি কংগ্রেসীদের আহ্বান করছেন, তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট। ফলে কংগ্রেস ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসালে বিজেপিরই যে ফায়দা তা অতি মূর্খও জানবে। অভিষেকের যুক্তি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একদিন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করছিলেন। কেন করেছিলেন, সেটা বুঝতে হবে। তৃণমূল আর কংগ্রেসের লড়াই একরকম নয়। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই কংগ্রেসকে দিয়ে হবে না, তৃণমূলকেই চাই। তৃণমূল এই লড়াইয়ে কখনই পিছপা হবে না।
বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে তৃণমূল চলছে, অভিযোগ কংগ্রেসের
তৃণমূল কংগ্রেসের যা লক্ষ্য, তাতে কংগ্রেস যে দুর্বল হবে, তা পরিষ্কার। তাতে বিজেপির হাতই শক্ত হবে। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল বিজেপির বি টিমের মতো কাজ করছে। কংগ্রেসকে দুর্বল করে ওরা বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাত থেকে বাঁচতেই তারা বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে এই কাজ করছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। বিজেপি এবাবেই ২০২৪-এ তাদের জয়ের পথ প্রশস্ত করতে চাইছে।
আগামিদিনে কি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনিই! টার্গেট জানিয়ে উত্তর দিলেন অভিষেক