ফের জমি-আন্দোলন বৃহৎ রূপ নিচ্ছে বাংলায়, আনন্দপুরে উচ্ছেদের আশঙ্কায় বিক্ষোভ মহিলাদের
কলকাতা, ২১ সেপ্টেম্বর : 'জমির বদলে জমি চাই। পাট্টা যখন আমাদের আছে, জমির প্রকৃত মালিক আমরাই। অথচ আমাদেরকে অন্ধকারে রেখে লিগ্যাল নোটিশ না দিয়েই জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে।' কলকাতা শহরতলির আনন্দপুরে জমি উচ্ছেদের আশঙ্কায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু করলেন কৃষিজীবী মানুষরা।
জমি ফেরানোর আন্দোলন ফের দানা বাঁধছে রাজ্যে। সিঙ্গুরে হারানো জমি অনিচ্ছুক চাষিদের ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতেই রাজ্যের অন্যান্য অংশের কৃষকরা জমি ফেরত পেতে আন্দোলনমুখী। রাজারহাটের পর বুধবার জমি ফেরত পাওয়ার এই আন্দোলনের ছবি ধরা পড়ল আনন্দপুরে। বোলপুরেও একই দাবিতে সরব হলেন কৃষকরা। আনন্দপুরের কৃষিজীবী মানুষের দাবি, বাম আমলে তাঁদের জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। বর্গার সেই কাগজপত্র তাঁদের কাছে আছে।
প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা কারও কারও কাছ থেকে সেই বর্গার কাগজ হাতিয়ে নিলেও, তার জেরক্স কপি রয়েছে তাঁদের হাতে। এখন হঠাৎই এই জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তখনই উচ্ছেদের আশঙ্কায় বিক্ষোভে শামিল হন কৃষকরা। এই আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন মহিলারা। গোলমালের আশঙ্কার ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনীও।
আন্দোলনকারীদের দাবি, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই জমি চাষ করে আসছি। সরকার আমাদের চাষের জন্য পাট্টা বিলি করেছে। হালে জল বন্ধ করে দিয়ে আমাদের কৃষিকাজে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই জমিই আমাদের একমাত্র সম্বল। এখন আবার সরকারের তরফে ওই জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের কিছুই জানানো হয়নি আগে থেকে। কারা জমি নিচ্ছে, কেন নিচ্ছে, আমরা কিছুই জানি না। তাই উচ্ছেদের ভয়ে আমরা এককাট্টা হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন, জোর করে জমি নেওয়া হবে না। আমরা তাঁর কথায় ভরসা রেখেই প্রশাসনকে বাধা দিতে প্রস্তুত।
একই চিত্র বোলপুরেও। সেখানে আবার শিল্প হলে জমি দিতে রাজি জমির মালিকরা। কিন্তু মাল্টিস্টোরেজ বিল্ডিং হলে তাঁরা জমি দেবেন না। কেননা তাঁদের বিশ্বাস শিল্প হলে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হবে। কিন্তু আবাসন হলে তা সম্ভব নয়। সিঙ্গুরের জমি ফেরতের পর রাজারহাটের কৃষকরা জমি ফেরত পাওয়ার আশায় সল্টলেকে হিডকোর অফিসে দাবিপত্র পেশ করেন। একে একে জমি ফেরানোর আন্দোলন ফের তীব্র রূপ নিচ্ছে রাজ্যে।