যত কুৎসা করবে, ততই এগোবে তৃণমূল : মমতা
‘আমরা ক্রমশ দিল্লির দিকে এগোব। বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে দিল্লি আর বেশি দূরে নয়। মনে রাখবেন, ওরা যত কুৎসা করবে, আমরা ততই এগোব।’
মুর্শিদাবাদ, ১২ এপ্রিল : কোমর সোজা করে যারা দাঁড়াতে পারে না, তাদের গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন। মুর্শিদাবাদের ডোমকলের সভা থেকে এই ভাষাতেই বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেইসঙ্গে বার্তা দিলেন, 'আমরা ক্রমশ দিল্লির দিকে এগোব। বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে দিল্লি আর বেশি দূরে নয়। মনে রাখবেন, ওরা যত কুৎসা করবে, আমরা ততই এগবো।'
এদিন মমতা বললেন, 'আমাকে যত ইচ্ছা গালমন্দ করুন। ভগবান, আল্লা যেন ওদের ক্ষমা করেন। গালি দিন, আমার গায়ে ফোস্কা পড়বে না। আমার বাবা-মা শিখিয়েছেন সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা। সেই ভাষাতেই আমি কথা বলব। তিনি আরও বলেন, বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি। এখানে সাম্প্রদায়িক হানাহানির স্থান নেই। এখানে একই বৃন্তে দু'টি কুসুমের মতো বিরাজ করে হিন্দু ও মুসলিম।
মমতা এদিন বিজেপি নাম না করেই বার্তা দেন, 'আমরা দাঙ্গা করি না। আমরা দাঙ্গা করতেও দেব না। আমাকে ধমকে চমকে লাভও হবে না। কে কী খাবে তা তা কেউ ঠিক করে দিতে পারে না। সরকারে থাকলে এসব নিয়ে কোন কথা বলা যাবে না।
এদিন কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করে মমতা বলেন, এতদিন কোনও কাজ করেনি এরা। কোনও উন্নয়ন করেনি। তৃণমূলের সরকার এই জেলার জন্য উন্নয়নের ডালি সাজিয়ে হাজির হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কাজ হবে এই জেলায়। ৯০ শতাংশ মানুষ উপকৃত হয়েছে। কেউ না কেউ কোনও না কোনওভাবে উপকৃত।
সাগরদিঘিতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের চতুর্থ ইউনিটের উদ্বোধন করেন মমতা। সেইসঙ্গে পাঁচ নম্বর ইউনিটের শিলান্যাসও করেন তিনি। এছাড়া এই জেলায় একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন। এরপর ডোমকলের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দেন জেলার আরও উন্নয়নের। ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ মানুষ বিদ্যুৎ পরিষেবা পাবেন বলে মন্তব্য করেন মমতা। তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই ইউনিট তৈরি হয়েছে।
এদিন তিনি আবার বলেন, কৃষকদের সমস্ত খাজনা মকুব করে দিয়েছি। কৃষকদের আর খাজনা দিতে হবে না। মানুষের সেবা করাটাই আমার কাজ, সেই কাজই আমি করে যেতে চাই। তাই চাষিদের স্বার্থের কথা ভেবেই এই খাজনা মকুবের সিদ্ধান্ত। এছাড়া জেলায় তিনটি মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে। সরকারি চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। দু'টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। ৪০ লক্ষ কন্যাশ্রী, ২.৫ লক্ষ বেকারকে যুবশ্রী, সবুজসাথী, খাদ্যসাথী- একটার পর একটা প্রকল্পের কাজ হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। এই জেলার বাড়তি পাওনা কান্দি মাস্টারপ্ল্যান। বেলডাঙায় বিশেষ হাবও তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গঙ্গার ভাঙন রোধে পাওনা দীর্ঘদিনের। কোনও টকা দেয়নি কেন্দ্র। ভাঙন রোধে ৭০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ২০ বছর ধরে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র।