রাত পোহালেই রাজ্যে উপনির্বাচন, চতুর্মুখী লড়াইয়ে কোচবিহারে নজর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের
রাত পোহালেই উপনির্বাচন। এ রাজ্যের দুই লোকসভা কেন্দ্র ও এক বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হবে শনিবার সকাল থেকেই। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে অপেক্ষা করে আছে চতুর্মুর্খী লড়াই।
কোচবিহার, ১৮ নভেম্বর : রাত পোহালেই উপনির্বাচন। এ রাজ্যের দুই লোকসভা কেন্দ্র ও এক বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হবে শনিবার সকাল থেকেই। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে অপেক্ষা করে আছে চতুর্মুর্খী লড়াই। সেই ভোট লড়াইয়ে কে জিতবে নিশ্চত হবে ভোট কাটাকাটির অঙ্কেই। আর তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই মূলত তৃণমূল বনাম সিপিএমের। মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রেও মূল লড়াই ওই দুই দলের।
কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ রেণুকা সিংহের প্রয়াণে এই আসনটি ফাঁকা হয়ে যায়। ২০১৪ সালে বামফ্রন্ট সমর্থিত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীকে ৮৭ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেছিলেন রেণুকাদেবী। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়। নৃপেন্দ্রনাথ রায়কে প্রার্থী করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। মূল লড়াই তাঁদের মধ্য হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এবার তৃতীয় স্থান থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারে বিজেপি। সেক্ষেত্রে বিজেপিই হবে তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, বামফ্রন্ট প্রার্থী নয়।
উল্লেখ্য, গতবার তৃতীয় স্থানে থাকা হেমচন্দ্র বর্মনকেই প্রার্থী করেছে বিজেপি। কংগ্রেসও প্রার্থী দিয়েছে। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাথাভাঙা, কোচবিহার-দক্ষিণ, শীতলকুচি, সিতাই, দিনহাটা, নাটাবাড়ি বিধানসভা আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। কোচবিহার-উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয় ফরওয়ার্ড ব্লক। গত লোকসভা ভোটে এই সাত বিধানসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, উপ-নির্বাচনে সুবিধা পেয়ে থাকে শাসকদলই। আর বিধানসভা ভোটের পর এ রাজ্যে এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে পরিবর্তন আসতে পারে।
তার ওপর এখন শুরু হয়েছে নোট বাতিল নিয়ে সারা দেশজুড়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট। নোটের হাওয়ায় এবার ভোট হবে। ভোটে নিশ্চয়ই সেই প্রভাবও পড়বে। কোচবিহারে যেহেতু লড়াইটা এই মুহূর্তে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির তাই এই কেন্দ্রের দিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অন্য দুই কেন্দ্র তমলুক ও মন্তেশ্বরে অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই সিপিএমের। এই দুই কেন্দ্রেও কংগ্রেস ও বিজেপি-র প্রার্থী রয়েছে। তবে তাঁদের ভোট কাটাকাটি ফলাফলে সে অর্থে কোনও প্রভাব ফেলবে না।
ভোট প্রচারে সব ইস্যু ছাপিয়ে উঠে এসেছে নোট বাতিলের প্রসঙ্গ। তৃণমূলের ভোটে ইস্যু করছে নোট বাতিলের জেরে মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি। বামেরা এই ইস্যুতে একইসঙ্গে বিঁধছে বিজেপি-তৃণমূলকে। আর বিজেপির হাতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাহসী সিদ্ধান্ত।
তবে রাজনৈতিকভাবে কোচবিহারে যেমন তৃণমূল কংগ্রেস ও বামেদের ভাঙিয়ে দল ভারী করেছে। তেমনি বিজেপিও তাঁদের শক্তি বাড়িয়েছে। নোট ইস্যু ছাড়াও উপ-নির্বাচনে রয়েছে আরও দুটি ফ্যাক্টর। ভোটারদের একটা অংশ গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সমর্থক। আবার সাবেক ছিটমহলের প্রায় ন'হাজার ভোটারও রয়েছেন। ইতিমধ্যেই গ্রেটার কোচবিহারের নেতা অনন্ত রায় বিজেপির দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার ছিটমহল আন্দোলনের নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত যোগ দিয়েছেন বিজেপি-তে। এই দুই শক্তি পেয়ে বিজেপি তেড়েফুঁড়ে লেগেছে তৃণমূলকে হারাতে।