প্রথম দফার ভোট : দু'দিনের মাথায় ভোটের হার ৩.৩ শতাংশ বেড়ে হল ৮৪.২২ শতাংশ, সমালোচনায় বিরোধীরা
কলকাতা, ৭ এপ্রিল : গত সোমবার ৪ এপ্রিল পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর মিলিয়ে জঙ্গলমহলের ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের মোট ৪৯৪৫টি বুথে ভোটগ্রহণ ভোটগ্রহণ হয়। রাতে ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুনীল গুপ্তা ঘোষণা করেন, তিনজেলা মিলিয়ে গড়ে ভোটদানের হার ৮০.৯২ শতাংশ।
এরপর ৭২ ঘণ্টা কাটার আগেই সেই ভোটের হার সংশোধন করল নির্বাচন কমিশন। জানানো হল, প্রথম দফার প্রথম পর্যায়ে ভোটদানের হার ৮৪.২২ শতাংশ। অর্থাৎ ভোটের হার বাড়ল মোট ৩.৩ শতাংশ।
আর এখানেই ফের প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। ভোট মিটে যাওয়ার তিনদিনের মাথায় কি করে এতটো বাড়তে পারে ভোট? এত প্রযুক্তি, এত মেকানিজম সত্ত্বেও কী করে এমন ঘটনা ঘটে? প্রশ্ন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের।
তাঁর অভিযোগ, ভোটের ৪৮ ঘণ্টা পর কী করে হিসাব বদলে গেল। পুলিশের একাংশ তৃণমূলকে সাহায্য করছে। ভোটে জেতাতে নেমেছে। আসলে ছলে বলে কৌশলে ভোটে জিততে চাইছে শাসকদল।
যেসকল জায়গায় কেন্দ্রে বা বুথে ভোট বেড়েছে তা কীভাবে এবং কেন বাড়ল, কোথায় গুনতিতে গলদ ছিল কমিশনের তা জানানোর দাবি করেছে বিরোধী দলগুলি। তৃণমূলের কোনও স্বচ্ছ্বতা নেই। কিন্তু কমিশনের কাছ থেকে এমন অপেশাদার মনোভাব দেখে বিস্মিত বিরোধীদের প্রশ্ন, সামনের ভোটে কোথায় কোন ফাঁদ পাতা রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে হবে কমিশনকেই।
প্রথম পর্বের প্রথম দফার ভোট মিটে যাওয়ার পরে বিরোধী দলগুলিকে খানিকটা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ একজোট হয়ে পথে নেমে ভোট দিয়েছেন বলে সুর চড়িয়েছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র থেকে শুরু করে অধীর চৌধুরীর মতো বিরোধী দলের নেতারা। কিন্তু কমিশনের সংশোধিত ভোটের হার কার পক্ষে গেল তা নিয়ে ভাবনা ইতিমধ্য়েই শুরু হয়ে গিয়েছে।
সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম জানান, ওইসব বুথে তৃণমূলের এজেন্ট যারা ছিলেন এখুনি তাদের ধরতে হবে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব চাইবেন বলেই জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ৪ এপ্রিল ভোট হওয়া মোট ১৮ আসনের মধ্যে ১৩টি বিধানসভাই মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে সবচেয়ে বেশি ৯০.১৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। অন্যদিকে পুরুলিয়া বিধানসভা আসনে সবচেয়ে কম ৭৯.৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।