আকাঙ্ক্ষা খুনে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্বে অবিচল উদয়ন, ফের রায়পুরে যাচ্ছে বাঁকুড়া পুলিশ
আকাঙ্ক্ষা শর্মা খুনে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্বই খাঁড়া করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদয়ন। টানা জেরায় পুলিশকে সে জানিয়েছে, রাজস্থানে আকাঙ্ক্ষার এক বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
বাঁকুড়া, ৯ ফেব্রুয়ারি : আকাঙ্ক্ষা শর্মা খুনে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্বই খাঁড়া করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদয়ন। টানা জেরায় পুলিশকে সে জানিয়েছে, রাজস্থানে আকাঙ্ক্ষার এক বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মুম্বই বাসী এক যুবকের সঙ্গেও আকাঙ্ক্ষার সম্পর্ক ছিল। তার সঙ্গে লিভ ইন করলেও দুই বন্ধুর সঙ্গে সমান্তরাল সম্পর্ক চালিয়ে গিয়েছিল আকাঙ্ক্ষা। সেই আক্রোশ থেকেই সে খুন করেছে প্রেমিকাকে। টানা ছ'ঘণ্টা জেরায় এই একই কথা বারবার বলেছে উদয়ন।[আকাঙ্খা হত্যা মামলা: প্রেমিকের সন্দেহের জেরে গলা টিপে খুন, পরে পুঁতে রাখা হয় দেহ]
বাঁকুড়া পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বুধবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় জেরা করেছেন উদয়নকে। কী কারণে আকাঙ্ক্ষাকে সে খুন করে, খুনের পিছনে তার মোটিভ কী ছিল, তা-ই সর্বাগ্রে বের করতে চাইছে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে আকাঙ্ক্ষা আমেরিকা যাবে বলে বাঁকুড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেও, তিনি দেশ ছাড়েননি। উঠেছিলেন উদয়নের ফ্ল্যাটে। তারপর সেখানে দু'জন লিভ ইন করতে থাকে।[আমেরিকান সিনেমা 'ডেভিলস নট'এর অনুকরণে আকাঙ্ক্ষা খুনের ছক উদয়নের!]
পুলিশি তদন্তে উদয়ন ও আকাঙ্ক্ষার ছয় সাক্ষাতের তত্ত্বও উঠে এসেছে। সেই তারিখগুলি দেওয়ালে লাল কালিতে লেখা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ওই লেখাগুলির সঙ্গে দু'জনের সাক্ষাতের দিন মিলে যাচ্ছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাঁকুড়া পুলিশ ফের রায়পুর যাচ্ছে। এদিকে উদয়ন জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, রাজস্থানে পড়াশোনা ও বড় হয়ে ওঠা আকাঙ্ক্ষার। সেখানেই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল এক যুবকের। সেই সম্পর্ক মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত বজায় ছিল বলে তার দাবি। এমনকী মুম্বইয়ের এক যুবকের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।[ফেসবুকে 'রূপকথার সাম্রাজ্য' গড়েছিল সিরিয়াল কিলার উদয়ন দাস!]
এই তথ্যগুলি খতিয়ে দেখতে বাঁকুড়া পুলিশ আকাঙ্ক্ষার বাবা-মাকে জেরা করতে পারে। এমনকী উদয়নের সঙ্গে বসিয়ে জেরা করতে চান তদন্তকারীরা। সেইসঙ্গে উদয়নকে টানা জেরা চালিয়েই যাবে পুলিশ। তাঁরা চাইছে একই প্রশ্ন বারবার করে ভিন্ন উত্তর মেলে না কি অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তা দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যে উদয়েনর দুই কাকার পরিবারের খোঁজ মিলেছে এই বাংলায়। দুই কাকাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।[২০১০ সালে বাবা-মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল উদয়ন, খুনের মোটিভ চমকে দেওয়ার মতো]
পুলিশ উদয়ন জিজ্ঞাসাবাদ করে এখন ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব ছাড়া, টাকা পয়সার হাতানোর ব্যাপারে একটি কথাও বের করতে পারেনি। অথচ পুলিশ মনে করছে, আকাঙ্ক্ষার অ্যাকাউন্টের ১ লক্ষ ২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল উদয়নই। কিন্তু উদয়ন তা স্বীকার করতে চাইছে না। তার একটাই জবাব, ত্রিকোণ প্রেমের কারণেই আক্রোশ মেটাতেই এই খুন ।