উদয়নের ‘নেক্সট টার্গেট’ ছিল আকাঙ্ক্ষার পরিবার, দেওয়া হয়েছিল মার্কিন ভিসার টোপ
আকাঙ্ক্ষার পর উদয়নের ‘নেক্সট টার্গেট’ ছিল আকাঙ্ক্ষার পরিবার। সেই লক্ষ্যে আকাঙ্ক্ষার পরিবারকে মার্কিন ভিসার টোপও দিয়েছিল বাঙালি সাইকো কিলার উদয়ন দাস।
বাঁকুড়া, ১০ ফেব্রুয়ারি : সম্পর্কের টানা পোড়েন নাকি টাকার নেশা- কী কারণে আকাঙ্ক্ষাকে খুন করে উদয়ন, তা নিয়ে এখনও ধন্দ কাটেনি। তবে এরই মধ্যে বাঁকুড়া পুলিশ জানতে পেরেছে, উদয়নের 'নেক্সট টার্গেট' ছিল আকাঙ্ক্ষার পরিবার। সেই লক্ষ্যে আকাঙ্ক্ষার পরিবারকে মার্কিন ভিসার টোপও দিয়েছিল বাঙালি সাইকো কিলার উদয়ন দাস।
উদয়ন ফোন করে আকাঙ্ক্ষার পরিবারকে জানিয়েছিল, 'আমরা আমেরিকা থেকে ভোপালে ফিরছি, আকাঙ্ক্ষা বাঁকুড়া যেতে চাইছে না। আপনারা ভোপালে চলে আসুন। তারপর আমাদের সঙ্গে আমেরিকা থেকেও ঘুরে আসবেন।' কিন্তু আকাঙ্ক্ষার পরিবার উদয়নের এই প্রস্তাবে গররাজি হয়। তাই পরবর্তী লক্ষ্যপূরণ করে উঠেত পারেনি সে। পুলিশ তদন্তে নেমে একটা ব্যাপারে অন্তত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, উদয়ন গোটা পরিকল্পনা সাজিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মাথায় রেখে।
মার্কিন মুলুকে না গেলেও, তার কথায় বারবার ফিরে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়ার কথা। হোয়াইট হাউসে কাজ থেকে গবেষণা- সব কিছুতেই তাঁর মার্কিন ছাপ। এমনকী তাঁর পাসপোর্টেও নকন মার্কিন স্ট্যাম্প মারা রয়েছে। পুলিশি তদন্ত উঠে এসেছে, উদয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে না গেলেও তিনবার বিদেশে গিয়েছিল সে। একবার ভিয়েতনাম, তারপর সিঙ্গাপুর ও মস্কোতেও গিয়েছিল উদয়ন।
মা-বাবাকে খুনের পর তাদের সম্পত্তি হাটিয়ে মা.এর গয়না বিক্রি করে সে পালিয়ে গিয়েছিল বিদেশে। তারপর আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। আকাঙ্ক্ষাকে খুন করার পরও তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে দু'বার টাকা তোলে উদয়ন। তাঁর গয়নাও বিক্রি করা হয়। এরপরই আকাঙ্ক্ষার পরিবারকে ভোপালে নিয়ে যাওয়ার ফাঁদ পেতেছিল এই সাইকো কিলার। পুলিশের ধারণা টাকার নেশাই এই খুনের প্রধান কারণ। প্রেমর সম্পর্কের জটিলতা এই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ হিসেবে একেবারেই গৌন।
পুলিশি জেরায় উদয়ন স্বীকার করেছে তাঁর অপরাধের কথা। সে এমনও জানিয়েছে যে, 'আমার যেন ফাঁসি হয়। আমি আর বাঁচতে চাই না। আকাঙ্ক্ষার মুখটা খুব মনে পড়ছে।' চারদিন টানা জেরার পর তাঁর এই স্বীকারোক্তিতে হতভম্ব পুলিশও। সত্যিই কি উদয়ন ভেঙে পড়েছে। না কি তার এই কান্নার পিছনে রয়েছে অন্য কোনও অভিসন্ধি? পুলিশও তা নিয়ে ঘোর ধন্দে।