অশান্তির পাহাড়ে থেকে গিয়ে ঘোর বিপাকে পর্যটকরা, জবাব দিয়ে দিয়েছে হোটেলও
হঠাৎই কেমন বদলে গিয়েছে পাহাড়। প্রাণোচ্ছ্বল পাহাড় হঠাৎই নিস্তেজ। পর্যটনের ভরা মরশুমে খাঁ খাঁ করছে জনপদ। দোকানপাট বন্ধ। হোটেলেও ঝাঁপ পড়ছে এবার।
চক বাজারে বাসের জন্য দীর্ঘ লাইন। সকাল থেকে দাঁড়িয়ে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে। তবু সমতলে নামার বাস পাননি পর্যটকরা। এদিকে হোটেলের ভাঁড়ারেও টান পড়েছে। সঞ্চিত খাবার শেষ। দোকানপাট বন্ধ। শিশুর মুখে সামান্য কিছু তুলে দেওয়ার মতো সামর্থও নেই পাহাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের। পরিবার নিয়ে পাহাড়ে গিয়ে দীর্ঘদিন পর ফের এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন পর্যটকরা। রবিবারও সেই ছবি ধরা পড়ল পরিবর্তনের পাহাড়ে।
হঠাৎই কেমন বদলে গিয়েছে পাহাড়। প্রাণোচ্ছ্বল পাহাড় হঠাৎই নিস্তেজ। পর্যটনের ভরা মরশুমে খাঁ খাঁ করছে পাহাড়ের জনপদ। দোকানপাট বন্ধ। হোটেলেও ঝাঁপ পড়ার জোগাড়। অনেক হোটেল থেকেই জবাব দিয়ে দেওয়া হয়েছে- এবার আপনারা ফিরে যান। আমাদের রসদও ফুরিয়ে যেতে বসেছে। খেতে দেব কী!
ক'দিন আগেও চিত্রটা এমন ছিল না। হোটেল মালিকদের কথায়, আমরা মনে করেছিলাম দু-একদিনেই থিতিয়ে যাবে বিষয়টি। কিন্তু যা শুরু হয়েছে, তাতে এখনই শান্তি ফেরার লক্ষণ নেই। পর্যটকরাও অনেকে মনে করেছিলেন, শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু কোথায় কী! সপ্তাহ কাটতে গেল- পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তনই নেই। আর কী ভরসায় থাকবেন। অগত্যা বাড়িমুখী হওয়া ছাড়া গতি নেই। কিন্তু ফেরার পথেও যে কাঁটা বিছানো। পথ অতি 'দুর্গম'।
এখনও পাহাড়ে হোটেলকগুলিতে রয়ে গিয়েছেন অনেক পর্যটকই। সাহস করে তাঁরা পাহাড়ে থেকে গিয়েছিলেন অনেক আশা নিয়ে। কিন্তু শনিবারের হিংসার পর আর কেউ সেই সাহসটুকুও করছেন না। এবার সবাই পাহাড় থেকে সমতলে নামার জন্য উদগ্রীব। সেই কারণেই তেনজিং নোরকে বাস টার্মিনাসে সকাল থেকেই লম্বা লাইন চোখে পড়ছে ফের। কিন্তু বাসের দেখা মিলছে না। অনেককে আবার হাঁটাপথেই নামতে দেখা গিয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার ট্রেকিং করে আপাতত শান্তিপুর্ণ একটা গন্তব্যের সন্ধানে পর্যটকরা।
পাহাড় যেন ঠিক বধ্যভূমি। ঝর্নার উচ্ছ্বলতা ম্লান হয়ে গিয়েছে ভারী বুটের শব্দে। রাস্তায় সর্বদা টহল দিচ্ছে সেনা-আধাসেনা-পুলিশ বাহিনী। হাতে রাইফেল। আজ কত অচেনা পাহাড়! এখন আর দার্জিলিং মানেই কল্পনার জগতের সেই ছবিটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে না। শৈল শহের বিরাজ করছে শ্মশানের স্তব্ধতা।