সংসদীয় দলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত, মুকুল প্রায় ঝরেই গেল তৃণমূলে
কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি : ভরা বসন্তেই পুরোপুরি মুকুল ঝরানোর কাজ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সংসদীয় দলের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করা হল একসময়ে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কে। নতুন চেয়ারম্যান হলেন ডেরেক ও'ব্রায়েন।
এর সঙ্গে দলনেত্রী এটাও স্পষ্ট করে দিলেন যে ভালো-মন্দ যা কিছু বলার বা করার তা দলে একমাত্র তিনিই করবেন। অন্য কেউ পাটিলাইন না মেনে মুখ খুলেছ কি, তৎক্ষণাৎ ঘ্যাচাং ফু। যেমন হলেন এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। যেমন হলেন, মুর্শিদাবাদ জেলার কার্যকরী তৃণমূল সভাপতি হুমায়ুন কবীর বা বীরভূমের সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। মুকুল রায়ের সঙ্গে আগামী দিনে দলের বা নেত্রীর সম্পর্ক সুস্থ হওয়ার রাস্তাও প্রায় একইসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেল।
রেল বাজেটের পর জেটলির ঘরে যান মুকুল। সঙ্গী ছিলেন বিজেপি সাংসদ চন্দন মিত্র। জেটলি তাঁকে সময় দেওয়ায় মুকুলের দলবদল নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ে। এর পরেই রাতে মুকুলকে সরিয়ে দিয়ে তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হয় ডেরেক ও'ব্রায়েনকে।
বিক্ষুব্ধ
ও
বহিঃষ্কৃতের
তালিকাটা
আগামী
কিছুদিনে
আরও
দীর্ঘ
হতে
চলেছে
বলেই
প্রমাদ
গুনছে
রাজনৈতিক
মহল।
সারদার
সঙ্গে
আইআরসিটিসির
চুক্তি
হোক
অথবা
সিবিআইয়ের
কাছে
কালিস্পংয়ের
ডেলোয়
দলনেত্রী
ও
সারদা
কর্তা
সুদীপ্ত
সেনের
সঙ্গে
বৈঠকের
কথা
স্বীকার
করে
আসা,
সবেতেই
মমতার
অস্বস্তি
বাড়িয়েছেন
মুকুল।
তাছাড়া
ঘটনা
পরম্পরায়
মুকুলের
বিজেপির
কাছাকাছি
আসাতেও
সবমিলিয়ে
অস্বস্তি
ক্রমশই
বাড়ছিল
তৃণমূলে।
বিভিন্ন জেলা থেকে একের পর এক নেতার দলবিরোধী মন্তব্য ও প্রকাশ্যে মুকুল রায়কে সমর্থন করা এবং তার পাশাপাশি মুকুল তথা তাঁর ছেলের দলবিরোধী মন্তব্য। সবমিলিয়ে মুকুল রায়ের অপসারণের পথ ক্রমশই প্রশস্ত হচ্ছিল দলে।
রাস্তা হিসেবে তাই প্রথমে নিজের ভাইপোকে যুবরাজ পদে বসিয়ে মুকুলকে কোণঠাসা করার কাজ শুরু হয়। তারপর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে মুকুল রায়ের সঙ্গেই যৌথভাবে সুব্রত বক্সীকে বসিয়ে আরও খানিকটা রাস্তা তৈরি করে রেখেছিলেন দলনেত্রী।
দু'দিন আগে জমি অধিগ্রহণ বিল ইস্যুতে যখন লোকসভার বাইরে ধরনা দিচ্ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব তখনও অনুপস্থিত থেকে অন্য ইঙ্গিত দেন মুকুল। এরপর সংসদীয় কমিটির থেকে মুকুলকে বাদ রেখেই কমিটি তৈরি করে তৃণমূল। সংসদীয় দলের নেতা হওয়া সত্ত্বেও রণকৌশল তৈরির কমিটিতে মুকুলকে ব্রাত্য রাখায় দু-তরফে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা আরও বাড়ে। সংসদে মুকুলের ক্ষমতা খর্ব করতেই দল নতুন কমিটি তৈরি করে দেয় বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। এরপর বৃহস্পতিবার সংসদীয় দলের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করে একসময়ে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে একপ্রকার ব্রাত্যই করে দিল দল।
নতুন দল তৈরি করেন নাকি বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মুকুল এখন সেটাই দেখার।