বিধানসভা ভোট ২০১৬ : ইনি একমাত্র প্রার্থী যিনি দুটি দল থেকে বহিঃষ্কৃত হয়ে ভোটে লড়ছেন
রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না। একথা যেন ফের একবার প্রমাণ করেছেন 'চাষার ব্যাটা' রেজ্জাক মোল্লা। কৃষক পরিবারের সন্তান রেজ্জাক সাহেব ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেই থেকে শুরু।
বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য রেজ্জাক মোল্লার
এরপর ১৯৭৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ক্যানিং পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে বিধায়ক হন। তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাননি। ২০১১ সালে প্রবল পরিবর্তনের হাওয়ার মধ্যেও তিনি বিধানসভা নির্বাচনে জিতে যান।
বাম আমলে দীর্ঘদিন ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলানো রেজ্জাক মোল্লা বরাবরই স্পষ্টভাষী ও বিতর্কিত। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে বাম সরকারের মন্ত্রী থাকাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
নিজের দলের দেব ও মুনমুন সেনকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য রেজ্জাক মোল্লার
পরিবর্তনের পরে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরও নানা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেঠো কায়দায় বারবার আক্রমণ করেছেন তিনি। কখনও তা শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছে, কখনও তা জনমানসে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি করেছে।
ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লার ভোট সামলাবেন আরাবুল, নির্দেশ মমতার
এহেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ রেজ্জাক মোল্লাকে ২০১৪ লোকসভা ভোটের আগে দলবিরোধী কাজের জন্য সিপিএম থেকে বহিঃষ্কার করা হয়। তারপরই তিনি তৈরি করেন ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টি। তবে নিজের হাতে গড়ে তোলা সেই দল থেকে বাকি সদস্যরা একযোগে বহিঃষ্কার করে রেজ্জাক মোল্লাকে।
এরপর নানা বিতর্ক, সমালোচনার পরে অবশেষে বিধানসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখান চাষার ব্যাটা। তবে দীর্ঘদিনের ক্যানিং থেকে লড়তে চাইলেও ভাঙড় থেকে তাঁকে লড়ার নির্দেশ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আর একেই বোধহয় বলে বিধির বিধান। একসময়ে সিপিএমে থাকাকালীন আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে মেরে কোমর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন 'চাষার ব্যাটা' রেজ্জাক মোল্লা। এবার সেই আরাবুলের হাত ধরেই নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে হবে তাঁকে।
রাজনীতির ময়দানে দলবদল বা বহিঃষ্কৃত প্রার্থীর অন্য দলে নাম লেখানোটা বড় কথা নয়। তবে রেজ্জাক সাহেবই সম্ভবত একমাত্র প্রার্থী যিনি পরপর দুটি আলাদা দল থেকে বহিঃষ্কৃত হয়ে গলাধাক্কা খাওয়ার পরে ভোটের ময়দানে তৃতীয় কোনও দলের প্রতীকে ভোটে লড়বেন। এই নজির রাজ্য কেন সারা দেশ বা বিশ্বে আর কোথাও রয়েছে কিনা সন্দেহ।