মমতাকে কি হারিয়ে দিলেন মোদী, রাজনীতির দলবদলে মাত খেল কি তৃণমূল
কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ে হারিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী তথা তাঁর রাজনৈতিক গুরু আশিস মুখোপাধ্যায়কেই। এবার দুর্গাপুর পুরভোটের আগে হঠাৎ তাঁর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
কংগ্রেস বিধায়ক দল ছাড়ছেন! এটা আর নতুন কথা কি? কিন্তু দল ছেড়ে তিনি কোথায় নাম লেখাচ্ছেন সেটাই এখন লাখ কথার এক কথা। অন্তত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই প্রশ্ন নিয়েই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে।
এই জল্পনার অবতারণা কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পড়িয়ালকে নিয়ে। তিনি তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছিল কান পাতলেই। এখন আবার হাওয়া বদল হয়েছে। শোনা যাচ্ছে তিনি তলে তলে যোগাযোগ রেখেছেন বিজেপির সঙ্গেও। দুর্গাপুরে ভোট প্রচারে গিয়ে বিশ্বনাথবাবুকে নিয়ে মন্তব্য করে সেই জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছেন স্বয়ং বিজেপি সভাপতিই।
বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, বিশ্বনাথবাবু যেখানে-সেখানে যাবেন না। তাঁর জন্য বিজেপির দরজা খেলাই রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিলীপবাবুর এই মন্তব্যের পর শুক্রবার বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী তৃণমূল প্রার্থী রুমা পড়িয়াল সটান দিলীপবাবুর সভায় হাজির হন। প্রকাশ্যেই করমর্দন করেন দিলীপবাবুর সঙ্গে। এরপরই জল্পনার পারদ আরও চড়তে থাকে। তবে কি বিশ্বনাথবাবু পদ্মশিবিরেই নাম লেখাতে চলেছেন? চর্চা শুরু হয়ে যায় রাজনীতির অন্দরে।
আসলে তৃণমূল প্রার্থীর এভাবে বিরোধী দলের সভায় চলে আসার বিষয়টি কোনও সমীকরণেই মেলাতে পারছে না রাজনৈতিক মহল। একমাত্র তৃণমূল প্রার্থী রুমা পড়িয়াল ও তাঁর স্বামী বিশ্বনাথ পড়িয়ালের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেই এটাকে দেখছে রাজনৈতিক মহল।
২০১৬ বিধানসভার আগে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বনাথবাবু। কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ে হারিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী তথা তাঁর রাজনৈতিক গুরু আশিস মুখোপাধ্যায়কেই। এবার দুর্গাপুর পুরভোটের আগে হঠা তাঁর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। মেয়র পদে তাঁকে প্রজেক্ট করা হতে পারে, এমনটাও শোনা যাচ্ছিল। এরই মধ্যে প্রার্থী হন বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী রূমাদেবী। বিশ্বনাথবাবুর ডানহাত চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলের প্রার্থী হন। বিশ্বনাথবাবু তৃণমূলের হয়ে কর্মিসভাও করেন।
ফলে বিশ্বনাথবাবুর তৃণমূলে যাওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু মাঝখানে দিলীপবাবুর একটি মন্তব্য আর তার পরেই তৃণমূল প্রার্থীর সটান বিজেপির সভায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে করমর্দন করা অন্য বার্তা দিচ্ছে। দিলীপবাবু বলছেন, বিশ্বনাথবাবু আপনি একবারই দলবদল করুন। আপনার জন্য আমাদের দরজা খোলা।
বিশ্বনাথবাবু এবং তাঁর স্ত্রী রূমাদেবী বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টি সমূলে উৎখাত করেছেন। দু'জনেই সাফ জানিয়েছেন, দিলীপবাবুর সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভালো। সেই কারণেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রূমাদেবী। দিলীপবাবুর সঙ্গে যোগযোগ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতস্তরে। রাজনৈতিক দূরত্ব তাঁদের মধ্যে যেমন ছিল, তেমনই রয়েছে আজও। তবু বিজেপির সভায় তৃণমূল প্রার্থী হাজির হওয়ার পিছনে যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছে না রাজনৈতিক মহল।