তরুণের গবেষণার বিষয় যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
কলকাতা, ১৬ অক্টোবার : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে যতই তর্কবিতর্ক থাকুক না কেন, তিনি কিন্তু নিজে এবার পিএইচডি থিসিস-এর বিষয় হয়েছেন।
আজ্ঞে হ্যাঁ, তরুণ রেজাউল ইসলাম মোল্লা পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের পিএইচডি করছেন। ছোটবেলা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দক্ষ নেতৃত্ব তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আর তাই নিজের গবেষণার বিষয় হিসাবেও বেছে নেওয়া বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেই।
বর্ধমানের হাতিতোটা গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল। তাঁর কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অদম্য মানসিকতা তিনি শ্রদ্ধা করেন। "সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি দুঃস্থ ও বঞ্চিতদের অধিকারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় লড়ে আসছেম। যখন আমার বাবা-মা পাড়া প্রতিবেশিকে রাজনৈতিক গুণ্ডারা ঘিরে রেখেছিল তখন দেখেছিলাম ওই সাহসী মহিলাকে আমাদের উদ্ধার করতে ছুটে আসতে।" [শেক্সপিয়ার-রবি ঠাকুরে একটু নয় গুলিয়ে গেল, ক্ষতি কী? উনি তো মুখ্যমন্ত্রী!]
ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তরে পড়াশুনা করেছেন রেজাউল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে যেন চোখটা যেন গর্বে চিকচিক করে উঠল রেডাউলের। তাঁর কথায় বামেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে কীভাবে একজন মহিলা জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন তা দেখার মতো। [একটি ঘাসে দু'টি ফুল, দুমুখো তৃণমূল!]
রেজাউল বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সে অর্থে কোনও প্রথাগত 'ম্যানেজেরিয়াল' ডিগ্রি নেই। কিন্তু উনি ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি যেভাবে জানেন তার ধারে কাছে কেই যেতে পারবে না। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলন যেভাবে তিনি সঞ্চালনা করেছেন, এমনকী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও এমন বহু স্পর্শকাতর ঘটনাকে এত সুপটু হাতে সামলিয়েছেন, তা সত্যি ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটগুলিতে পড়ুয়াদের শেখানো উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণ দিয়ে।"
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ রঞ্জন চক্রবর্তী আইএএনএসকে জানিয়েছেন, "রেজাউল সাম্প্রতিক এত জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে গবেষনার বিষয় হিসাবে বেছে নিয়েছে যা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য, কারণ এই বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার সুযোগ কম আছে অপেক্ষাকৃতা, তা জানা সত্ত্বেও ও এই পদক্ষেপ নিয়েছি। ইউজিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুশী, এবং এই বিষয়টিকে অনুমতি দিয়েছে। এই বিষয় নিয়ে রেজাউলের গবেষণার কাজ দেখার জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি।" [(ছবি) একনজরে দেখে নিন মুখ্যমন্ত্রী মমতার কিছু বিতর্কিত মন্তব্য]
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিএইডি ডিগ্রি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ১৯৮৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন লোকসভা ভোটে নির্বাচিত হন তখন তিনি বলেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি পেয়েছেন। যদিও পরে অভিযোগ ওঠে এই ধরণের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবে নেই।