ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বেহালার এই সরকারি স্কুল
বড়িশা পূর্বপাড়া হাইস্কুল এখন বেহালার সরকারি 'স্মার্ট' স্কুল। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির মতো পড়ানো হয় প্রোজেক্টরের মাধ্যমে। পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় এগারোশো
বছরের শুরুতে স্কুলে ভর্তির সময় সরকারি স্কুলগুলিতে যেখানে চাহিদা থাকে না বললেই চলে, সেখানে বেহালার বড়িশা পূর্বপাড়া হাইস্কুলের চিত্রটা কিন্তু অনেকটাই আলাদা। এই সরকারি স্কুলটি ইতিমধ্যেই স্মার্টস্কুলের তকমা পেয়েছে। আর বছরের শুরুতে অভিভাবকদের কাছে এই স্কুলের এতটাই চাহিদা, যে ভর্তির সময়ে বিপাকে পড়তে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে।
যেখানে সর্বশিক্ষা অভিযানে রাজ্যের স্কুলগুলির বেহাল দশা, সেখানে ৪ বছরেই ভোল বদলে গেছে বেহালার জেমস লঙ সরণির বড়িশা পূর্বপাড়া হাইস্কুলের। পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধূলার ওপরও নজর দেওয়া হয় এই স্কুলে। তবে বিশেষ নজর দেওয় হয় ছাত্রীদের ওপর।
এখন স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এগারোশোর মতো হলেও, একসময় এলাকায় খাটাল স্কুল নামে পরিচিত এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল নগণ্য। নতুন করে গড়ে তুলতে ২০১৩ সালে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে এলাকারই স্বেচ্ছাসেবক রাজু অধিকারীকে স্কুলের দায়িত্ব তুলে দেন কলকাতার মেয়র। তারপর থেকেই স্কুলের ভোল বদলে যেতে থাকে।
ভোল বদলানোর শুরুতেই নজর দেওয়া হয় স্কুলের পড়াশোনার ওপর। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির মতো এই স্কুলেও প্রোজেক্টরের মাধ্যমে পড়ানো শুরু হয়। দীর্ঘ দিনের ব্ল্যাক বোর্ড তুলে দিয়ে আনা হয় হোয়াইট বোর্ড। পানীয় জলের সমস্যা দূর করতে পরিষোধিত পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা হয়। স্কুলটিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতও করে দেওয়া হয়। আর বিদ্যুতের বিল কমাতে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে স্কুলের ছাদে বসানো হয় সোলার প্যানেল।
কর্তৃপক্ষের দাবি, ছাদে বসানো প্যানেল স্কুলের পুরো বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে দিচ্ছে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জাতীয় ও রাজ্যস্তরের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এই মুহূর্তের ক্যারাটেতে তালিম দেওয়ার সঙ্গে নিজস্ব ফুটবল টিম রয়েছে ছাত্রীদের।
এলাকার সেরা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলকে টার্গেট করে নিয়েই এগনো স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার ৯৭ শতাংশ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্কুল পরিচালনায় দৃষ্টান্ত স্বরূপ মাসখানেক আগে থাইল্যান্ড থেকে স্বীকৃতিও মিলেছে।
তবে কিছুটা আর্থিক অনটনের কারণে একাধিক দেশ থেকে আসা আমন্ত্রণ গ্রহণ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রেসিডেন্ট রাজু অধিকারী।