সিঙ্গুরের জমির জন্য ১৫৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইল টাটা মোটরস!
কলকাতা, ১৭ সেপ্টেম্বর : সিঙ্গুরের জমি এখন টাটার কাছে অতীত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে কৃষকদের কাছে। ১৪ সেপ্টেম্বর সিঙ্গুর উৎসবের দিন ৯৯৭ একর জমির পরচা বলি করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং সেই মঞ্চ থেকেই ফের একবার টাটা সহ সকলের কাছে শিল্পের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। [ডেস্টিনেশন গোয়ালতোড়, মমতার বার্তায় জোর তৎপরতা]
যেদিন সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে টাটাদের শিল্প করার কার্যত আহ্বান জানাচ্ছেন মমতা, সেই সময়েই রাজ্য সরকারের কাছে 'ক্ষতিপূরণ' চেয়ে আর্জি জানিয়েছে টাটা। কোম্পানির তরফে বলা হয়েছে, সিঙ্গুরের জমির জন্য ১৫৪ কোটি টাকা তাদের ফেরত দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। [১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনকে ঢাল করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার সিপিএমের]
বাম আমলে ২০০৬ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার থাকাকালীন এই জমি টাটারা কিনেছিল। সেইসময়ে যা খরচ হয়েছিল আজ তা ৮ গুণ হয়ে গিয়েছে সুদে আসলে। গুজরাতে সানন্দে ন্যানো কারখানা সরাতে গিয়ে অনেক বেশি খরচ করতে হয়েছে। আর সেজন্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে। [সিঙ্গুর ইস্যুর টাইমলাইন একনজরে]
টাটাদের সিঙ্গুরে শিল্প করতে যাওয়া এবং সেটার বিরোধিতা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্থান এবং পরে লালবাড়ির অধিকার দখল। গোটাটাই কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যের চেয়ে কম নয়। ২০১১ সালে বাম সরকারের ৩৪ বছরের সাম্রাজ্যের পতন ঘটানোর প্রথম বীজ বপন হয়েছিল সিঙ্গুর আন্দোলনের মধ্য দিয়েই। [সিঙ্গুরের রায়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলছেন]
তবে সম্প্রতি সিঙ্গুরের জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পরে সরকার নিজে উদ্যোগী হয়ে টাটাদের শিল্পের প্রস্তাব দিয়েছে। মনোমালিন্য ভুলে পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি জমি ব্যাঙ্ক থেকে জমি দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী ভেবে দেখার জন্য টাটাদের একমাস সময়ও দিয়েছেন।
এছাড়া গত বৃহস্পতিবার টাটার অধীনস্ত সংস্থা টাটা মেটালিকসের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে রাজ্য সরকারের। তার ফলে প্রতি বছর ১২০০ জনকে স্কিল ডেভলেপমেন্ট সেন্টারের মাধ্যমে শিল্প দক্ষ করে তোলা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়েই এই প্রশিক্ষণ হবে যেখানের জমি মমতা টাটাদের নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে সিঙ্গুর নিয়ে নতুন করে টাটারা ক্ষতিপূরণ চাওয়ায় সরকারি তরফে কি জবাব আসে সেটাই এখন দেখার। শিল্পের খাতিরে রাজ্য কি টাটার দাবি মেনে নেবে? আগামী সময়ই তার জবাব দেবে।