চার ঘণ্টা জেরার পর রোজভালিকাণ্ডে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল
দু’দফায় চারঘণ্টা জেরার পর রোজভ্যালিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে। শুক্রবার তৃণমূলের এই অভিনেতা-সাংসদের বয়ানে অনেক অসঙ্গতি পান সিবিআই-এর আধিকারিকরা।
কলকাতা, ৩০ ডিসেম্বর : দু'দফায় চারঘণ্টা জেরার পর রোজভ্যালিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে। শুক্রবার তৃণমূলের এই অভিনেতা-সাংসদের বয়ানে অনেক অসঙ্গতি পান সিবিআই-এর আধিকারিকরা। তিনি এদিন সিবিআই গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তাই শেষমেশ তাঁকে গ্রেফতার করা সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই। এরপর নিজেদের হেফাজতে নিয়েই তাঁকে জেরা করা হবে।
এদিন জেরায় মূলত দু'টি বিষয় উঠে আসে। প্রথম বিষয়, তিনি বারবার রোজভ্যালি কাণ্ডে নগদ টাকা নিয়েছেন। কেন তিনি টাকা নিয়েছেন। প্রতিবারই তিনি এই প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি টাকা নেননি এমন মন্তব্যও করেন। কিন্তু সিবিআই তরফে জানানো হয়, তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে বারবার নগদ টাকা নিয়েছেন তাপস পাল।
দ্বিতীয় বিষয়, তিনি ২০১১ সালে সেবি ও আরবিআইকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যে চিটফান্ডগুলি বেআইনি ভাবে টাকা তুলছে। কিন্তু সেই তালিকায় তিনি সারদা-সহ ২৫টি চিটফান্ডের নাম রাখলেও, কেনও এক অজানা কারণে তিনি রোজভ্যালির নাম রাখেননি। এদিন সেই প্রশ্নও করা হয় সিবিআই আধিকারিকদের তরফে। কিন্তু সেই প্রশ্নেরও যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে কি তিনি ব্ল্যাকমেলিং করেছিলেন রোজভ্যালিকে? সেই কারণেই তিনি এই চিটফান্ড সংস্থার নাম ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গিয়েছিলেন সেবি ও আরবিআই-এর কাছে পাঠানো তালিকায়।
তাপস পাল একটা সময়ে রোজভ্যালির ফিল্ম ডিভিশনের ডিরেক্টর ছিলেন। ফলে তিনি জানতেন বহু প্রভাবশালী মানুষের এই রোজভ্যালি কাণ্ডে জড়িত। তাঁদের নামও জানার চেষ্টা করা হয়। এদিন প্রথম দফায় তাপস পালের বয়ান রেকর্ড করা হয়। দ্বিতীয় দফায় জেরার পরই তাঁকে অফিসিয়ালি গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামীকাল তাঁকে আদালতে তোলা হবে। তারপর নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে সিবিআই।
তিনদিন আগে রোজভ্যালিকাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তাপস পালকে নোটিশ পাঠানো হয়। শুক্রবার তাঁকে সিবিআইয়ের সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সের অফিসে দেখা করতে বলা হয়েছিল। সেইমতো তিনি দুপুর ১২টার আগে সিবিআই দফতরে পৌঁছন। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী নন্দিনী পাল। এরপর দু'দফায় ৪ ঘণ্টা জেরা করা হয় তাপস পালকে। কিন্তু জেরায় নানা অসঙ্গতি মেলে। তিনি অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যান। কোনও উত্তর দিতে পারেননি।