শ্রীনু নাইডু হত্যাকাণ্ডে এবার ‘ডন’ রামবাবুকে হেফাজতে নিতে চায় সিআইডি
রেলশহর খড়গপুরের ‘বেতাজ বাদশা’ শ্রীনু নাইডু হত্যাকাণ্ডে এবার ‘ডন’ রামবাবুকে হেফাজতে নিতে চায় সিআইডি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, শ্রীনু খুনে রামবাবুর প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ ফেব্রুয়ারি : রেলশহর খড়গপুরের 'বেতাজ বাদশা' শ্রীনু নাইডু হত্যাকাণ্ডে এবার 'ডন' রামবাবুকে হেফাজতে নিতে চায় সিআইডি। প্রায় দেড়মাস অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পর তদন্তকারীরা মনে করছেন, শ্রীনু খুনে রামবাবুর প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে। বিশাখাপত্তনমে এক বৈঠকে তিনি অংশ নেন বলেও জানতে পেরেছে সিআইডি।[শ্রীনু হত্যাকাণ্ডে মাস্টার মাইন্ড হিসেবে উঠে আসছে বাসব রামবাবুর নাম!]
গত ১২ জানুয়ারি শ্রীনুকে পার্টি অফিসে ঢুকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তারপর প্রায় দেড়মাস কেটে গিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এবার রামবাবুর দিকে হাত বাড়াতে চাইছে তাঁরা। তদন্তকারীরা মনে করছেন, রামবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাা করলেই অনেক রহস্যের উন্মোচন হয়ে যাবে।['ডনে'র হত্যাকাণ্ডে বড় মাথার হদিশ পেল পুলিশ, নজরে ভিনরাজ্যের ২ সুপারি কিলার]
মোট ১১ জন দুষ্কৃতী পরিকল্পিতভাবে ওইদিন হামলা চালিয়েছিল তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে। আটজন এসেছিল টাটাসুমোতে। আর ৩জন ছিল বাইকে। ইতিমধ্যে সাতজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি টাটা সুমোটি আটক করা হয়েছে। বাকি চার জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।[শ্রীনু হত্যা মামলায় সরকারী আইনজীবীকে প্রাণনাশের হুমকি, 'বাড়াবাড়ি করলে ফল খারাপ হবে']
শ্রীনুকে হত্যার পিছনে ব্যবসায়িক শত্রুতার পাশাপাশি এলাকা দখলের তত্ত্বই এখন পর্যন্ত জোরদার হয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এলাকায় দাপট ধরে রাখা আর রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি দু'টোই শ্রীনু নাইডুর সঙ্গে ছিল।[শ্রীনু হত্যায় এবার সিবিআই তদন্ত চাইলেন খোদ দিলীপ ঘোষ]
তাই
তাকে
সরিয়ে
দিলে
অন্যের
উত্থান
সহজ
হবে
বলেই
তাঁকে
সরিয়ে
দিতে
তাঁর
শত্রুরা
এক
হয়েছিল।
একটা
সময়
রামবাবুকে
সরিয়ে
খড়গপুরে
রাজত্ব
কায়েম
করেছিলেন
শ্রীনু।
উত্থান-পর্বে
তিনি
ছিলেন
বিজেপির
ছত্রছায়ায়।
গত
পুরভোটেও
তিনি
বিজেপি-র
হয়েই
ভোটযুদ্ধে
লড়েছিলেন।
তাঁর
স্ত্রী
পূজা
নাইডু
১৮
নম্বর
ওয়ার্ড
থেকে
বিজেপি-র
টিকিটে
কাউন্সিলর
নির্বাচিত
হন।
অবশ্য বিধানসভা ভোটের আগেই পদ্ম ছেড়ে দলবদলে ঘাসফুল শিবিরে চলে আসেন শ্রীনু। দলবদল করে পূজাও তৃণমূলে আসেন। এই দলবদলের রাজনীতি খুনের পিছনে থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছিল। তবে এখন শ্রীনুর খুনের পিছনে রেল মাফিয়া-চক্র রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন শ্রীনু। সেই কারণে তাঁর একাধিকবার জেল হয়েছে। ছাঁট লোহার ব্যবসা দিয়ে শুরু, তা থেকেই তিনি রামবাবুকে সরিয়ে বনে গেলেন এলাকার ডন। হয়ে উঠলেন খড়গপুরের ত্রাস। তাই সর্বদাই তাঁক প্রাণ হাতে নিয়ে চলতে হত। সম্প্রতি তিনি অপরাধ জগৎ থেকে সরে এসে সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। রাজনীতিতে পায়ের তলার মাটি শক্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তখনই ঘটে গেল খুনের ঘটনা।