কু-কথার যুদ্ধ জারি! দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘তৃণমূলের ভাষাতেই আক্রমণ করতে জানি’
‘কু’কথার যুদ্ধ জারিই রয়েছে। সংঘাত চরমে তৃণমূল ও বিজেপি-র। প্রধানমন্ত্রীকে দিনের পর দিন তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তার পাল্টা কু-কথায় পঞ্চমুখ বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
কলকাতা, ১২ ডিসেম্বর : 'কু'কথার যুদ্ধ জারিই রয়েছে। সংঘাত চরমে তৃণমূল ও বিজেপি-র। প্রধানমন্ত্রীকে দিনের পর দিন তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তার পাল্টা কু-কথায় পঞ্চমুখ বিজেপি রাজ্য সভাপতি। প্রথমে আধপাগলা মুখ্যমন্ত্রী বলে আক্রমণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারপর চুলির মুটি ধরে দিল্লি থেকে বের করার হুমকি।
আর
বিজেপি
রাজ্য
সভাপতির
এ
ধরনের
মন্তব্য
নিয়ে
রাজ্য
রাজনীতি
যখন
সরব,
তখনও
তিনি
এতটুকু
অনুতপ্ত
নন।
বরং
তিনি
আক্রমণের
তীব্রতা
আরও
বাড়িয়ে
বলে
দিলেন,
'আমি
যে
ভাষায়
কথা
বলেছি,
সেই
ভাষাটা
তৃণমূলের
কাছ
থেকেই
শেখা।
ওরা
যে
ভাষাটা
বোঝে,
আমি
সেই
ভাষাতেই
কথা
বলার
চেষ্টা
করেছি।'
শনিবার
ঝাড়গ্রাম
শহরে
যুব
মোর্চার
সম্মেলনে
বিজেপি
রাজ্য
সভাপতি
দিলীপ
ঘোষ
বাংলার
মুখ্যমন্ত্রী
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়কে
'আধপাগল'
বলে
কটাক্ষ
করেন।
বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম নবান্নের ছাদে উঠে তিনি গঙ্গায় ঝাঁপ দেবেন। ওই মহিলার মাথার ঠিক নেই। কখন যে কী করে বসেন! বাংলার মানুষ এখন বুঝতে পারছেন, কী ভুল তাঁরা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনে। তিনি আরও বলেন, 'শালীনতা কেন শিখব তৃণমূলের কাছে? তৃণমূল কি শালীন ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী যদি মুখ বন্ধ না করেন, তবে আরও অশালীন কথা বলব।' দিলীপবাবু মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মোদিজিকে উনি কোমরে দড়ি দিচ্ছেন, কিন্তু মনে রাখবেন দিলীপ ঘোষ আরও কড়া কথা বলতে জানে।
শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, দিলীপবাবুর আক্রমণেই মুখে বাদ আননি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নিজের মেয়ে বলে উল্লেখ করেন। স্পষ্টতই বলে দেন, বিজেপি তৃণমূলের দাদাগিরি মানবে না। দাদাগিরি করবে বিজেপিই। আর খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, খাদ্যমন্ত্রী বলে পার পাবেন না। শুধু এখানেই নয়, বর্ডার পার করে গোরুপেটা করব।'
স্বভাবতই বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই ধরনের মন্তব্যে রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে। কু-কথার বাণ ছাড়েন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি দিলীপ ঘোষকে 'গুণ্ডা ঘোষ' বলে অভিহিত করেন। তাঁর মানসিক ভারসাম্য নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন পার্থবাবু। রাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন ব্যক্তিগত আক্রমণের দিকে চলে গিয়েছে পুরো বিষয়টি।
দু'পক্ষই একে অপরের দিকে কুরুচিকর মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছেন। কলুষিত হচ্ছে রাজনীতির আঙিনা। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কটূ মন্তব্য করায় আইনের আশ্রয় নিতে পারে বলেও জানিয়েছেন পার্থবাবু। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও পাল্টা দেন দিলীপবাবুকে। তিনি বলেন, 'উনি এবার উত্তর ২৪ পরগনায় প্রবেশের চেষ্টায় করলে উত্তম-মধ্যম পেটানো হবে। এমনই পেটাব যে দিল্লির নেতারাও ওঁকে রক্ষা করতে পারবেন না।'
এই লড়াইয়ে এইখানেই শেষ হবে না, তা বোঝাই যাচ্ছিল। দিলীপবাবু এতটুকুও না দমে গিয়ে বলেন, 'এই য়ে দিদি, দু'তিনদিন ধরে দিল্লিতে নাচন-কোঁদন করে এলেন। আমরা চাইলে তাঁকে চুলের মুঠি ধরে বের করে দিতে পারতাম। ঠিক একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন সিপিএমের সাংসদ অনিল বসু।
তিনি বলেছিলেন, আমি চাইলে মমতার চুলের মুঠি ধরে কালীঘাটে পৌছ দিতে পারতাম। আবারও সেই এক মহিলার চুলের মুঠি ধরে ছুড়ে ফেলার আস্ফালন। তারই প্রক্ষিতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা, তাঁর চুলের মুঠি ধরার অর্থ নিজের মায়ের চুলের মুঠি ধরা। মুখ্যমন্ত্রীর কাশ স্পর্শ করার আগে তৃণমূল কর্মীরা দিলীপ ঘোষের হাত-পা গুঁড়িয়ে দেবে। সুঁচ-সুতো দিয়ে সেলাই করে দেওয়া হবে তাঁর মুখ।
দিলীপবাবু প্রত্যুত্তরে দিলীপ ঘোষ সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেন, দেখাই যাক, কে কত দুধ খেয়েছে।গুন্ডা-মস্তান পুষে দাদগিরি করবেন, তা মানব না। আমরাও জানি মস্তানি করতে। দিলীপবাবু আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী একজন জনপ্রিয় নেতা। তাঁকে প্রত্যেকদিন অশ্লীল আক্রমণ করে গিয়েছেন। এখন পাটকেল খেয়েছেন বলে রাগ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে কটূ কথা বলা বন্ধ না করলে আরও পাল্টা খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
কাউকে কটূ মন্তব্য করা আমাদের কাজ নয়, ওনারা যে ভাষায় কথা বলেন, সেই ভাষাতেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। পার্থবাবুকে আক্রমণ করে বলেন, উনি নিজেই নিজের পার্টিতে ঝুলে রয়েছেন। দিদি যা বলেন, তা-ই তো বলে বেড়ান। তিনি গোটা রাজ্যজুড়ে আগামী ২১ ডিসেম্বর বিক্ষোভ প্রদর্শনের ডাক দিয়েছেন। সব মিলিয়ে নোট কাণ্ডে রাজ্যেও যুযুধান তৃণমূল বনাম বিজেপি।