নির্লজ্জ অমানবিকতা সরকারি হাসপাতালে, প্রসূতির প্রসবদ্বার কেটে তুলো-গজ ভরে দিল আয়া!
বেসরকারি হাসপাতালে ‘স্বাস্থ্য’ ফেরাতে যখন নতুন নিদান রচনা হচ্ছে, তখন সরকারি হাসপাতালে ঘটে গেল নির্মম অমানবিক এক ঘটনা।
মুর্শিদাবাদ, ৪ মার্চ : বেসরকারি হাসপাতালে 'স্বাস্থ্য' ফেরাতে যখন নতুন নিদান রচনা হচ্ছে, তখন সরকারি হাসপাতালে ঘটে গেল নির্মম অমানবিক এক ঘটনা। মুর্শিদাবাদের ডোমকল 'সুপার স্পেশালিটি' হাসপাতালে প্রসূতির প্রসবদ্বার কেটে তুলো-গজ ভরে সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আয়ার বিরুদ্ধে। দাবি মতো টাকা না দেওয়ার 'শাস্তি' দিতে 'কু-কীর্তি'র নির্লজ্জ নজির গড়লেন ওই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী।
সরকারি হাসপাতালে এই নির্মমতার বিরুদ্ধে ওই রোগীর পরিবারের সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার কমিশন, স্বাস্থ্য ভবনেও জানানো হয়েছে বিষয়টি। স্বাস্থ্য দফতর এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাসপাতাল সুপার ও ওই আয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডোমকলের তরুণী গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রাতেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সেইসময় হাতপাতালে কোনও চিকিৎসক ও নার্স ছিল না বলে অভিযোগ। আয়াই ওই মহিলার সন্তান প্রসব করান। এরপর তিনি রোগীর পরিবারের কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। অত টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ ছিল না ওই গরিব পরিবারের। তাঁরা পাঁচশো টাকা দেবেন বলে জানান।
এরপরই ঘটে আয়ার কু-কীর্তির ঘটনা। প্রসূতির প্রসবদ্বারে তিন জায়গায় কেটে তুলো-গজ ভর্তি করে সেলাই করে দেওয়া হয়। এরপর তিনদিন কেটে যায়। চিকিৎসক এসে ওই রোগিনীকে চেক-আপ করেন। তখন সাঙ্ঘাতিক রূপ নিয়েছে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা। এরপর তাঁকে বহরমপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে আবার পাঠানো হয় এনআরএস হাসপাতালে।
বর্তমান ওই রোগিনী অনেকটাই সুস্থ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে অমানবিকতা ও নির্মম ঘটনা ঘটল, তার সুরাহা কী হবে? সরকারি হাসপাতালে কি পরিষেবার নামে এই অমানবিকতা চলেই থাকবে? রোগীর পরিবার এই ঘটনায় 'শাস্তি' দিতে চান আয়াকে। সরকারি হাসাপাতলের পরিষেবার এই দৈনদশা তুলে ধরতে চান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী কাছে।
মুখ্যমন্ত্রী ও মানবাধিকার কমিশনে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি লিখেও এর বিহিত চেয়েছে রোগীর পরিবার। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী জানিয়েছেন, তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে এক আধিকারিককে পাঠানো হয়েছে ঘটনার তদন্তে। রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় স্বাস্থ দফতর।