‘আলোচনায় বসুন মুখ্যমন্ত্রী’, পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে মমতাকে আর্জি রাজনাথের
দু্-মাস অতিক্রান্ত পাহাড় অচল হয়ে রয়েছে। অনির্দিষ্টকালীন বনধের জেরে পাহাড়ের মানুষ কষ্টে রয়েছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে পাহাড় পুড়ছে হিংসার আগুনে। এবার আলোচার রাস্তায় শান্তির পথ বের করার আর্জি।
পাহাড় শান্তি ফেরাতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবিলম্বে বৈঠকে বসার আর্জি জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। রবিবার নয়াদিল্লিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে বৈঠকের পর রাজনাথ সিং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমার অনুরোধ, পাহাড়ে সমস্যা মেটাতে অবিলম্বে আলোচনায় বসুন আপনি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও তার সহযোগীরা যাঁরা পাহাড়ে অনির্দিষ্টকালীন বনধ চালাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে সমাধানের পথ বের করুন।'
দু্-মাস অতিক্রান্ত পাহাড় অচল হয়ে রয়েছে। অনির্দিষ্টকালীন বনধের জেরে পাহাড়ের মানুষ কষ্টে রয়েছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে পাহাড় পুড়ছে হিংসার আগুনে। রাজ্যের তরফে পুলিশ ও সেনা পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও, তাতে কোনও ফল হয়নি। পাহাড়ের পরিস্থিতি আদৌ স্বাভাবিক হয়নি পুলিশ-সেনা মোতায়েনের পরও। এবার তাই আলোচনার পথে ফেরার আর্জি জানালেন রাজনাথ।
তিনি এর আগে পাহাড়ের আন্দোলনকারীদের চিঠি দিয়েছিলেন। মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংও কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছিলেন বারবার। এর আগে কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দরবারও করেছিলেন রোশন গিরিরা। এতদিন পর রাজনাথ সিং মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরই মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছেন আলোচনার টেবিলে আসার জন্য। ফলে পাহাড়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের একটা আবহ তৈরি হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানানো হয়েছে মোর্চা নেতৃত্বের কাছেও। তিনি অনুরোধ করেন, অনশন ও বনধ তুলে পাহাড়ের জনজীবন ফের স্বাভাবিক করে তুলুন। পাহাড়ের মানুষের কাছে সর্বপ্রকার পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার আর্জিও জানান তিনি। সেইসঙ্গে পাহাড়ের অর্থনীতিকে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়াও দরকার বলে তিনি আবেদন জানান।
৮ জুন থেকে পাহাড়ে যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে, সেই আগুনে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। অনেক সম্পত্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আদতে কোনও পক্ষেরই কোনও লাভ হয়নি। ক্রমেই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সমতলে। মানুষ দার্জিলিংয়ের নাম শুনলে ভয় পাচ্ছে। অথচ পুজোর মরশুমে পাহাড়ে পর্যটনের রমরমা শুরু হয়ে যায়। এখন কেউ আর পাহাড়মুখো হওয়ার নাম করছেন না। পাহাড়়ের এই অশান্তি ভিনদেশের কাছেও ভারতের মাথা হেঁট করে দিচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি জরুরি। এগিয়ে আসুন সবাই। আলোচনাই হোক সমাধানের রাস্তা। ডাক দিলেন রাজনাথ।