রাতারাতি লাইন পেতে উত্তর-দক্ষিণ রেল সংযোগের উদ্যোগ, চালু বাস পরিষেবা
বন্যার জল সরতেই নতুন লাইন পেতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্রেন চলাচল শুরু করা যায়, তার চেষ্টাতেই রাতাদিন এক করে কাজ চালাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ল উত্তরবঙ্গে বন্যায় আটকে পড়া মানুষজনের চোখে-মুখে। গড়াল বাসের চাকা। চলল ট্রেনও। শুক্রবার মালদহ থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাস চালানো হয়েছে। রায়গঞ্জ থেকে কাটিহার ও মালদহ পর্যন্ত ট্রেনের ট্রায়াল রান করা হয় এদিন। পরীক্ষামূলকভাবে এই ট্রেন চালানোর অর্থ বন্যায় বিপর্যস্ত রেললাইন ঠিক রয়েছে কি না, তা দেখা।
এদিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নতুন করে রেল লাইন পেতে ট্রেন পরিষেবা শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বারসই থেকে নিউ জলপাইগুড়ি শাখায় সুধানি নদীর উপর ব্রিজ ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল উত্তর ও দক্ষিণের রেল পরিষেবা। তা পুনরায় শুরু করতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই কাজ শুরু হয়েছে।
অন্যান্য স্থানেও রেল লাইন মেরামত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। বন্যার জল সরতেই নতুন লাইন পেতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্রেন চলাচল শুরু করা যায়, তার চেষ্টাতেই রাতাদিন এক করে কাজ চালানো হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানান, এখনও রেল লাইন মেরামতের কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি। জল নামার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সেই কাজ শুরু হচ্ছে।
তিনি জানান, যে জায়গায় জল নামছে, সেই জায়গাগুলিতেই রেল লাইনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সম্পূর্ণ রেল লাইন মেরামতের কাজ শেষ না হলে ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে না। সেইসঙ্গে সুধানি নদীর উপর ভেঙে পড়া রেলব্রিজের কাজও রাতারাতি শেষ করা চেষ্টা চলছে। তবে কবে থেকে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন চালু করা যাবে, তা এখনও বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিন সকালেই মালদহ বাস টার্মিনাস থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাস চালানো হয়েছে। বেসরকারি বাসও চলেছে এদিন। ট্রেন যাত্রীদেরও এই বাসে করে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিন মোট ২৮টি বাস শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। বাস চলাচল শুরু হওয়ায় যাত্রীদের চোখেমুখে হাসি ফুটে উঠে। বন্যার জন্য যাত্রীরা আটকে পড়েছিল চারদিন ধরে। তারা বিভিন্ন স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছিল। এদিন বাস চালু হওয়ায় অনেকে গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেন।
এদিন সকাল থেকেই মালদহের গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে সারি দিয়ে লম্বা লাইন পড়ে যায়। ভোর পাঁচটায় প্রথম বাস শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তারপর বেসরকারি বাসও রওনা দেয় শিলিগুড়ি। এই কদিন মালদহে বিছিন্ন একটা দ্বীপের মতো কেটেছে তাদের। রসদ ফুরিয়ে এসেছিল। ছিল না মাথা গোঁজবার জায়গা। সেই দুর্বিসহ অবস্থা থেকে মুক্তি ঘটল এদিন। প্রায় ৩৮ কিলোমিটার ঘুরে এদিন বুনিয়াদপুর, কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ হয়ে বাস শিলিগুড়ি পৌঁছয়। প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগে বাসগুলির গন্তব্যে পৌঁছতে।