পুলিশের পোশাকে গুলি চালিয়েছে বহিরাগত দুষ্কৃতীরাই! উদ্ধার পুলিশের উর্দি
বাইরের দুষ্কৃতীরা পুলিশের পোশাকে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে পুলিশের পোশাকও। তাতে এই আন্দোলন নতুন মাত্রা নিতে চলেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ১৮ জানুয়ারি : জমি আন্দোলনের সেই পুরনো ছবিই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। যুযুধান দুই পক্ষ। একদিকে বন্দুকধারী খাঁকি পোশাকের পুলিশ, অন্যদিকে লাঠিহাতে গ্রামবাসী। আবারও সেই চেনা ছবি। চলল গুলি। মৃত্যু হল গ্রামবাসীর। ইতিমধ্যেই চার গুলিবিদ্ধের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দু'জনের। মৃতরা হলেন মফিজুল আলি খান ও আলমগির। এলাকায় গুলি চলার পরই এলাকাবাসীর ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।[ভাঙড়ে যে গুজবের কারণে পাওয়ার গ্রিডের জমি নিয়ে আন্দোলনে গ্রামবাসীরা]
কিন্তু কে চালাল গুলি? গ্রামবাসীদের দাবি পুলিশই চালিয়েছে গুলি। কিন্তু পুলিশের দাবি গুলি চালিয়েছে বহিরাগতরা। রাজ্য পুলিশের এডিজি অনুজ শর্মা গ্রামবাসীদের দাবি খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ কোনও গুলি চালায়নি, গুলি চালিয়েছে বহিরাগতরা। সেই প্রমাণও রয়েছে পুলিশের হাতে।[ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ২ গ্রামবাসী]
তাঁর দাবি, বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতী ইন্ধন দিয়ে ভাঙড়ের আন্দোলনকে বড় আকার দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বাইরের দুষ্কৃতীরা পুলিশের পোশাকে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে পুলিশের পোশাকও। তাতে এই আন্দোলন নতুন মাত্রা নিতে চলেছে। সন্দেহ দানা বেঁধেছে উদ্ধার হওয়া পুলিশের উর্দিতে।[জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়, প্রয়োজনে পাওয়ার গ্রিড সরানো হবে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
সোমবার দুই আন্দোলনকারীকে গ্রেফতারের পর থেকেই রণসাজে সেজে উঠেছিল ভাঙড়। মঙ্গলবার ভাঙড়ের গ্রামে সারাদিন সেই ছবিই পরিস্ফুট হয়েছে। তারপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রাম থেকে পুলিশ হটানোর অভিযানে হঠাৎ গুলি চালায় পুরো পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল। রক্তাক্ত ভাঙড়ে জ্বলতে আরম্ভ করল একটার পর একটা পুলিশের গাড়ি। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হল।[অশান্ত ভাঙড়, নিজের এলাকায় ঢুকতেই পারলেন না রেজ্জাক]
রাতভর গ্রামে গ্রামে ব্যারিকেড জনতার। কিছউতেই গ্রামে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না পুলিশকে। রাতে পুলিশ হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কায় ঘর ছেড়ে প্রচন্ড ঠান্ডায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ব্যারিকেড করেছেন। বুধবারও এলাকা থমথমে। পুলিশ নেই বটে, তবে গ্রামের মানুষের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
গ্রামবাসীদের দাবি, অনেকে ঘরছাড়া হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১০-১৫ জন নিখোঁজ হয়ে রয়েছেন সোমবার থেকে। এদিন অবশ্য এলাকা বনধের চেহারা নিয়েছে। মঙ্গলবারের মতো যুদ্ধং দেহি ভাব অবশ্য নেই। সরকার পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পরও আতঙ্ক যায়নি গ্রামবাসীদের মন থেকে। গ্রামবাসীদের দাবি, সরকারের প্রতি আমাদের কোনও আস্থা নেই।