জনরোষে চোখের সামনে জ্বলল থানা, অসহায় পুলিশের কান্নাই সম্বল
আতঙ্ক গ্রাস করেছে পুলিশের চোখে-মুখে। ভয়ে কেউ থানা ছেড়ে পালিয়েছেন, কেউ লুকিয়ে পড়েছেন থানায়। কারও চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছে পুরো থানা।
বর্ধমান, ২৮ জানুয়ারি : আতঙ্ক গ্রাস করেছে পুলিশের চোখে-মুখে। ভয়ে কেউ থানা ছেড়ে পালিয়েছেন, কেউ লুকিয়ে পড়েছেন থানায়। কারও চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছে পুরো থানা। কিছু করার নেই, চেয়ে দেখা ছাড়া। অসহায় পুলিশ। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা একেবারে তলানিতে। আতঙ্কে কাঁদছে পুলিশ।[জনরোষে জ্বলছে থানা, আইসি অপসারণের দাবিতে উত্তেজিত জনতার তাণ্ডব আউশগ্রামে]
কম করে হাজার তিনেক লোক একযোগে আক্রমণ করে থানায়। থানা লক্ষ্য করে বড় বড় পাথর ছুড়তে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। সংখ্যায় অপ্রতুল পুলিশ জনরোষের মুখে তীব্র অসহায়। প্রাণ বাঁচাতে থানা ছেড়ে পগার পার হয়ে যায়। আর ফাঁকা মাঠে তাণ্ডব চালায়া বিক্ষুব্ধ জনতা। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে থানায়। নথি, আসবাবপত্র, পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই জনরোষের ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না পুলিশ। গ্রামবাসীকে উসকানোর জন্য পুলিশের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। প্রাক্তন পুলিশ কর্তারা বলছেন, পুলিশের এই করুণ দশায় কোনও সমবেদনার জায়গাই নেই। পুলিশ পুলিশের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বলেই প্রশাসনিক এই সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। স্কুলের জায়গায় একটা অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে যাঁরা অবৈধ নির্মাণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন না নিয়ে, আটক করল স্কুল পরিচালন সমিতির লোকজনকে। তাতেই আগুন ছড়ালো।
সেই আগুনেই এখন জ্বলছে থানা। এখন পুলিশের কান্না ছাড়া আর কিছুই করার নেই। এ জন্য দায়ী পুলিশই। প্রাক্তন পুলিশ কর্তাদের মতে, পুলিশ এখন তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দু'বার ভাবছে, খাতা বের করে অঙ্ক কষছে, যে অপরাধী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে কারও রোষানলে পড়তে হবে কি না। তারপর পুলিশ অ্যাকশন নিচ্ছে। আসলে নিরপেক্ষতার অভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পুলিশ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে পারছে না।
শুধু আউশগ্রামই নয়, এই একই ছবি মাত্র কয়েকদিন আগে দেখেছেন রাজ্যবাসী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার রসপুঞ্জেও জনতার বিক্ষোভের মুখে অসহা আত্মসমর্পণ করেছে পুলিশ। রসপুঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ অসহায় হয়ে থানা ছেড়ে পালিয়েছে। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে সমস্ত নথি, আসবাবপত্র।