নোট বাতিলে টান পড়েছে পুলিশের ‘বকশিসে’ও, এখন রেট ২০ থেকে ২০০
পুলিশও সার ভেবেছে এই বাজারে খুচরো যা আসে, তা-ই ভালো। অলিখিত নিয়ম শিথিল করতে হয়েছে বাধ্য হয়েই। না-হলে যেটুকু মিলছে, তাও যে আর পকেটে আসত না।
কলকাতা, ২৪ নভেম্বর : নোট বাতিলের জেরে টানা পড়েছে পুলিশের ভাঁড়ারেও। এখন আর নিয়ম মেনে 'মাশুল' আদায় করতে পারছে না পুলিশ। পুলিশও সার ভেবেছে এই বাজারে খুচরো যা আসে, তা-ই ভালো। অলিখিত নিয়ম শিথিল করতে হয়েছে বাধ্য হয়েই। না-হলে যেটুকু মিলছে, তাও যে আর পকেটে আসত না। আর এই ফাঁকে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে চলেছেন ট্রাক চালকরা।
জাতীয় সড়ক দিয়ে পণ্য বোঝাই লরি নিয়ে যেতে পুলিশকে বখশিস দেওয়াই দস্তুর ছিল। কিন্তু এখন নোট বাতিলের ধাক্কায় এখন সেই নিয়ম লঘু হয়েছে। এখন খুচরো অভাবে যাহোক কিছু দিয়েই রেহাই মিলছে চালকদের। তাই উপরি ইনকামের ভাঁড়ারে টান পড়ছে পুলিশের। রাজ্যজুড়েই এই চিত্র জাতীয় সড়কগুলিতে।
এক ধাক্কায় এই উপরি ইনকাম কমে দাঁড়িয়েছে চার-পাঁচ হাজারে। আগে অন্তত ১৫-২০ হাজার তো আসত কম করে। মুর্শিদাবাদের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কই হোক বা হাওড়া-পূর্ব মেদিনীপুর-হুগলির ছ'নম্বর বা দু'নম্বর জাতীয় সড়ক- সর্বত্রই প্রতিদিন হাজার হাজার লরি যাতায়াত করে। লরি যাতায়াত করে ভিনরাজ্যেরও।
সন্ধ্যা নামলেই বাড়ে পুলিশের তোলাবাজি। সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে লরি, ম্যাটাডর, ছোট গাড়ি- কেউ বাদ যায় না। মোদি ৫০০ ও হাজারের নোট বাতিল করার পরে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন চালকরা। পুলিশ এখন আর জেদাজেদি করছেন না। যা দেওয়া হচ্ছে খুশি মনে তা পকেটে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। বেমালুম বলে চলেছেন এক ড্রাইভার। বেশ গদগদ বলেই মনে হল তাঁকে।তাঁর এমনই ভাব, এমন অচলাবস্থা চললেই বেশ হয়!
গাড়ির কাগজপত্র, অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ, কত হ্যাপা। এখন খুচরোর ধাক্কায় সমস্ত আইনই লঘু। পুলিশের অলিখিত ফতোয়াও নেই। আগে ছিল 'ফেলো কড়ি মাখো তেল'। এখন 'কড়ি'ই নেই আর বখশিসের টানাপোড়েন। পুলিশ বরং জোর দিয়েছে ২০ থেকে ২০০ টাকা আদায়ে। কারণ তাদের ঘরেও যে খুচরোর হানা।