ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুতে রণক্ষেত্র পলতা, প্রাক্তন প্রেমিকের বাড়িতে ভাঙচুর, নামল র্যাফ-কমব্যাট ফোর্স
ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার পলতা। পায়েল দেবনাথ নামে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় জনতা।
উত্তর ২৪ পরগনা, ৮ নভেম্বর : ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার পলতা। পায়েল দেবনাথ নামে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় জনতা। অভিযোগ, প্রতিবেশী যুবক সঞ্জীব বসু ওরফে ছোটকা শারীরিক নির্যাতন চালানোর পর পায়েলকে খুন করে রেল লাইনের ধারে ফেলে দেয়।
ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা অভিযুক্ত যুবক। সোমবার পায়েলের দেহ নিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় ছোটকার বাড়িতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামাতে হয় কমব্যাট ফোর্স, র্যাফ।রবিবার রাতে পলতা স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনের ধার থেকে উদ্ধার করা হয় পায়েলের দেহ। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত নেমে এখনও ধন্দে, ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে, নাকি আত্মহত্যা করেছেন পায়েল।
পায়েল ব্যারাকপুরের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পলতার নবপল্লির বাসিন্দা সে। এলাকারই যুবক সঞ্জীব সরকারের সঙ্গে তাঁর একটা সময় প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ছোটকার আচার-আচরণ ভালো না ঠেকায়, সেই সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন পায়েল। পায়েল এড়িয়ে চলতে শুরু করায় বেজায় চটে যায় সঞ্জীব। পায়েলকে নানাভাবে বিরক্ত করতে শুরু করে সে। নিত্য ফোনে হুমকি চলত।
রবিবার সন্ধ্যায় পায়েল বাড়িতে একা ছিলেন। বাবা-মা এক আত্মীয়ের মৃত্যু হওয়ায়, তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগ নিয়ে সঞ্জীব পায়েলের ঘরে ঢুকে পড়ে। তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। ব্লেড দিয়েও তাঁর শরীরের আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। এই কাজে সঞ্জীবকে তার মা ও পিসি সহায়তা করে বলেও অভিযোগ। বাবা-মা ফিরে এসে দেখেন মেয়ে বাড়িতে নেই। খোঁজখবর শুরু করে পলতা স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনের ধার থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় গভীর রাতে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত নেমে মনে করছে, হয় খুন করে ওই দেহ রেল লাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নতুবা প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে লজ্জায়-অপমানে ওই তরুণী আত্মঘাতী হয়েছে। পায়েলের এই রহস্যমৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সঞ্জীবের খোঁজে তল্লাশি চলছে। সোমবার ময়নাতদন্তের পর রাতে তাঁর দেহ নিয়ে সঞ্জীব বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। ভাঙচুর চালানো হয় সঞ্জীবের বাড়িতে।
পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে, এলাকায় কমব্যাট ফোর্স, র্যাফ নামাতে হয়। পুলিশি ঘেরোটোপ সোমবার রাত ১টা নাগাদ পায়েলের শেষকৃত্য করা হয়। এলাকার মানুষের দাবি, পায়েলের এই শোচনীয় মৃত্যুতে আমরা ওই যুবক ও যুবকের পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পুলিশ এই আশ্বাস দেওয়ার পরই প্রশমিত হন প্রতিবেশীরা।