প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পার্সেল বোমা পাঠিয়ে প্রেমিকাকে হত্যা, প্রেমিক-সহ যাবজ্জীবন দু’জনের
প্রেমিক মিথ্যে বলায় সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়নি প্রেমিকা। সেই কারণে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল প্রেমিক। ৬০০ পাতার বইয়ের সঙ্গে পার্সেল বোমা পাঠিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল প্রেমিকা
মালদহ, ২৩ ডিসেম্বর : প্রেমিক মিথ্যে বলায় সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়নি প্রেমিকা। সেই কারণে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল প্রেমিক। ৬০০ পাতার বইয়ের সঙ্গে পার্সেল বোমা পাঠিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল প্রেমিকা অপর্ণা বিশ্বাসকে। পাঁচ বছর পর সেই ভয়ানক ঘটনায় প্রেমিক প্রিন্স ঘোষ ও তার এক সহযোগী রাজকুমার ঋষিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল মালদহ আদালত। ঘটনার পাঁচ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডে সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক।
কর্মসূত্রে মালদহ শহরের কৃষ্ণপল্লিতে ভাড়া থাকতেন স্কুল শিক্ষিকা অপর্ণা বিশ্বাস। প্রিন্স নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার বলে পরিচয় দিয়ে অপর্ণার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে অপর্ণা জানতে পারেন, প্রন্স ইঞ্জিনিয়ার নন, একজন টিভি মেকানিক। এরপর আর তিনি সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজি হননি। আর প্রেমিকার এই প্রত্যাখ্যান মেনে নিতেও পারেনি প্রিন্স। তখনই স্থির করে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবে অপর্ণাকে।
সেইমতো পরিকল্পনা ছকে ফেলে প্রিন্স। এই কাজে রাজকুমার ঋষি নামে এক যুবকের সহায়তা নেয় সে। ৬০০ পাতার একটি বইয়ের ভিতরে পার্সেল বোমা বানায় রাজকুমার। ২০১১ সালের ২২ এপ্রিল মালদহের গাজল থেকে কুরিয়ার করে রাজকুমার। কিন্তু অপর্ণার কাছে পার্সেলটি পৌঁছয়নি। তখন প্রিন্স কুরিয়ান সংস্থায় ফোন করে জানতে চায়, কেন পার্সেলটি পৌঁছয়নি।
২৪ এপ্রিল পার্সেলটি হাতে পাওয়ার পর বইয়ের মলাট খুলতেই তীব্র বিস্ফোরণ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় অপর্ণার। এই ঘটনায় শোরগেল পড়ে যায় রাজ্যে। পুলিশ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে। কিন্তু পার্সেল বোমার প্রেরক কে, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। কুরিয়্যার সংস্থার ডিলিভারি বয়কে জেরা করতেই বেরিয়ে পড়ে সমস্ত সত্য।
কুরিয়্যার সংস্থার কাছ থেকেই ওই পার্সেলের প্রেরকের ফোন নম্বর পায় পুলিশ। দু'দিনের মধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় প্রিন্স ও রাজকুমার। এই মামলায় ৩২ জড়ের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করার পর দু'জনের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করা হয় বৃহস্পতিবার।