মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে এবার চড়ার সুযোগ পাবেন আপনিও
সাত আসনবিশিষ্টএই হেলিকপ্টার পরিষেবা নিতে গেলে যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে তা অত্যন্ত কম বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল। শুক্রবার বৈঠকে হেলিকপ্টার পরিষেবার জন্য যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে তা অনুযায়ী,বালুরঘাট, শান্তিনিকেতন ও গঙ্গাসাগরে যেতে এক পিঠের মাথাপিছু ভাড়া ১৫০০টাকা। মালদহ যেতে গেলে খরচ আরও কম, এক পিঠের মাথাপিছু ভাড়া পড়বে মাত্র ১৩০০টাকা।
প্রস্তাবিত ভাড়ার তালিকা দেখে ভাড়ার ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একাধিক মহলে
কলকাতা থেকে দূর্গাপুর যেতে গেলে খরচ অপেক্ষাকৃত বেশি। এক্ষেত্রে এক পিঠের মাথাপিছু ভাড়া পড়বে ৪২০০টাকা। তবে আপাতত এক-এক রুটে সপ্তাহে এক দিন চলবে ওই কপ্টার। রবিবার গঙ্গাসাগর, সোমবার দূর্গাপুর, মঙ্গলবার মালদহ, শনিবার শান্তিনিকেতন। বালুরঘাট যাওয়ার ক্ষেত্রে মালদহ হয়ে যাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে শান্তিনিকেতন হয়ে দূর্গাপুর যাওয়ারও সুবিধা রয়েছে।
পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভিআইপি মুভমেন্ট এবং সরকারি কাজের জন্য পবন হংসের একটি হেলিকপ্টার মাসে ৪০ ঘণ্টা ওড়ার চুক্তিতে ভাড়া নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু কোনও মাসেই হেলিকপ্টারটি ৪০ ঘণ্টা ব্যবহার হয় না। ফলে, অধিকাংশ সময়ই বসিয়ে ভাড়া দিতে হয়। তাই এবার সাধারণ মানুষকে কম খরচে সেই হেলিকপ্টার চড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্য রওনা দেবে হেলিকপ্টারটি। তবে এসংক্রান্ত টিকিট কাউন্টারটি এখনই চূড়ান্ত করা হয়নি।
তবে এই প্রস্তাবিত ভাড়ার তালিকা দেখে ভাড়ার ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ভাড়ার হার ট্রেনের বাতানুকূল প্রথম শ্রেণির কাছাকাছি হবে বলে জানানো হয়েছিল সরকারি তরফে। সেই হিসেবে মালদহ ও বালুরঘাটের ক্ষেত্রে রেল ও কপ্টার পরিষেবার ভাড়ার হারের সামঞ্জস্য রয়েছে। অথচ, দুর্গাপুরের ভাড়া ধরা হয়েছে ৪২০০ টাকা, যার ট্রেনভাড়া দেড় হাজারেরও কম। প্রশ্ন উঠেছে একানেই।
প্রশ্নের অবশ্য দুটি ব্যাখ্যা মিলেছে। পরিবহণসচিব জানিয়েছেন,অন্ডালে নতুন বিমানবন্দরের প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রোপলিস এই কপ্টারের সাতটি আসন ভাড়া নিচ্ছে। যাত্রী না হলেও আসন-পিছু প্রতিটি উড়ানে ৪২০০ টাকা করে রাজ্যকে দেবে সংস্থা। অর্থাৎ, যাত্রী হোক বা না হোক, এই রুটের প্রতি উড়ানে সাতটি আসনের ভাড়া সরকারের হাতে আসা নিশ্চিত। সেই কারণেই অন্য গন্তব্যগুলিতে কম ভাড়া নিলেও পুষিয়ে যাবে বলে ব্যাখ্যা করেছেন আলাপনবাবু।
অন্যদিকে, বেঙ্গল এরোট্রোপলিসের এম ডি পার্থসারথি ঘোষের ব্যাখ্যা, তাঁদের সমীক্ষা অনুযায়ী দুর্গাপুর, বর্ধমান এবং সংলগ্ন শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে বছরে সাড়ে ছ'লক্ষ যাত্রী কলকাতা এসে বিমান পরিষেবা ব্যবহার করেন। নির্দিষ্ট সময়ের উড়ান ধরতে অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের রাতে কলকাতায় থাকতেও হয়। ফলে এক দিকে যেমন দমদম আসতে সড়ক বা রেলপথের চেয়ে আকাশপথে অনেকটা সময় সাশ্রয় হবে, তেমনই খরচও বাঁচবে বলে এই হেলি-পরিষেবা যাত্রী-সংখ্যায় পুষিয়ে দেবে বলে মনে করছেন তিনি।
এই হেলিকপ্টার পরিষেবায় যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক দ্রুত হবে, পাশাপাশি রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে বলে প্রসাশনের তরফে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য রোগীদের কথা ভেবে এর আগেই আরজিকর হাসপাতালে যে নতুন ভবনে তৈরি হচ্ছে তাতে হেলিপ্যাডের পরিকল্পনাও রাখা হয়েছে।