২৩০ কিলোমিটার সড়কপথে নর্থ-ইস্ট করিডোর যোগ করবে রাজ্যের চার জাতীয় সড়ককে
বাংলায় খুলে যাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-দ্বার। পণ্য পরিবহণে সূচনা হবে নতুন দিগন্তের। সাত বছরএর প্রতীক্ষার অবসান। অনুমোদন মিলল নর্থ-সাউথ করিডোর তৈরির।
কলকাতা, ৩ নভেম্বর : বাংলায় খুলে যাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-দ্বার। পণ্য পরিবহণে সূচনা হবে নতুন দিগন্তের। সাত বছরএর প্রতীক্ষার অবসান। অনুমোদন মিলল নর্থ-সাউথ করিডোর তৈরির। এই প্রকল্পের রূপায়নে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের সংযুক্তি তো ঘটবেই, হলদিয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগাযাগ স্থাপন হবে বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটানেরও। ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ নর্থ-সাউথ করিডোরে মিলে যাবে রাজ্যর চারটি জাতীয় সড়ক।
২০০৯ সালে এই করিডোর তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের লাল ফিতের বাঁধনে এতদিন আটকে ছিল স্বপ্নের এই প্রকল্পটি। সাত বছর পর এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের অনুমোদন মেলায় আগামী মাস থেকেই শুরু হয়ে যাবে করিডোর তৈরির কাজ। ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশ টাকা দেবে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক। বাকি ৩০ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার। বার্ষিক ০.৫ শতাংশ হারে সুদ সহ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ঋণ ফেরত দেবে রাজ্য।
এই করিডোর তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। সেই কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের গাইডলাইন মেনেই জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এই বছরের মধ্যই টেন্ডার ডেকে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করে দিতে চায় রাজ্য। রাস্তা তৈরি সম্পূর্ণ হলে চালু হবে টোল ট্যাক্সও। এই করিডোর রাজ্যের মোট চারটি জাতীয় সড়ককে যোগ করবে। উত্তরবঙ্গের দিক থেকে আসতে গেলে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসতে হতো।
আর দক্ষিণবঙ্গে দু' নম্বর ও ছ'নম্বর জাতীয় সড়ক। এই চারটিকেই ছুঁয়ে যাবে ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ নর্থ-সাউথ করিডোর। এর ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। মুর্শিদাবাদের মোরগ্রামের কাছে ৩৪ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এই রাস্তা। কাজ শুরু হবে ওই অংশ থেকেই। এরপর বর্ধমানে দুনম্বর জাতীয় সড়ক ও পূর্ব মেদিনীপুরের মেছোগ্রামে ছ'নম্বর জাতীয় সড়কে সংযুক্ত হবে নর্থ-সাউথ করিডর। ফলে সব দিক থেকে হলদিয়ামুখী গাড়ি এই রাস্তা ধরতে পারবে।
এই সাত বছর সময় অতিবাহিত হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা মন্ত্রকের অনুমোদন পেতে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক, পরিবহণ ও সড়ক মন্ত্রকের অনুমোদন মিলেছে। ঋণের জন্য আবেদন করা হয় এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের কাছে। এই ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শনের পর সবুজ সঙ্কেত দেয়।