সম্প্রীতির আবহে হিন্দু যুবকের মৃতদেহ কাঁধে শেষকৃত্য সারলেন মুসলিম ভাইয়েরা
সাম্প্রদায়িক অহিষ্ণুতার মধ্যেই সম্প্রীতির বাতাবরণ মালদহে। এক হিন্দুর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে সৎকার করতে গেলেন মুসলিমরা। সহায় সম্বলহীন পরিবারের পাশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা
মালদহ, ২৬ এপ্রিল : সাম্প্রদায়িক অহিষ্ণুতার মধ্যেই সম্প্রীতির বাতাবরণ মালদহে। এক হিন্দু যুবকের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে সৎকার করতে গেলেন মুসলিমরা। সহায় সম্বলহীন একটি পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নজির সৃষ্টি করলেন। প্রমাণ করলেন, সবার ঊর্ধ্বে মানুষ। ধর্ম তারপর। যে যাঁর ধর্ম তাঁর কাছেই। কিন্তু সবার আগে মানবিকতা।
শুধু কি কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া, চিতা সাজানো থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার যাবতীয় কাজকর্ম করলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরাই। সম্প্রীতির এই মেল বন্ধনের খবরে প্রশাসনও আশ্বস্ত। বিডিও থেকে থানার আধিকারিক- প্রত্যেকের তরফ থেকেই ইতিবাচক বার্তা এসেছে।
মালদহের মানিকচকে শেখাপুরা গ্রামের ঘটনা। এই সেই গ্রাম, যেখানে আর্সেনিকের ছোবলে এক এক করে শেষ হয়ে গিয়েছে অনেক পরিবার। গ্রামে রয়েছে মাত্র একটি হিন্দু পরিবার। বাকি সবই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। নগেন রজকের ছোট ছেলে বিশ্বজিৎ দূরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ছেলের চিকিৎসার পিছনে সবকিছু ব্যয় করে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন তিনি। ছেলের অন্ত্যেষ্টি করার মতো টাকাও নেই তাঁর কাছে।
এমতাবস্থায় এগিয়ে এলেন লোকমান আলি, আবদুল মিঞারা। তাঁরাই বিশ্বজিতের দেহ অন্তিম সংস্কারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন। একেবারে হিন্দু রীতি মনে নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে শ্মশানে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সারলেন। সবশেষে গঙ্গাস্নান করে বাড়ি ফেরেন মুসলিম সম্প্রদায়ের শ্মশান যাত্রীরা।