মাওবাদীদের পদ্ধতিতে তৈরি বোমায় বিস্ফোরণ কালিম্পঙে, স্পষ্ট হয়েছে জঙ্গি যোগ
কালিম্পঙ থানার সামনে বিস্ফোরণের যে বিস্ফারণ ব্যবহার হয়েছিল, তা মূলত ব্যবহার করে মাওবাদীরা, ফলে বিস্ফোরণের সঙ্গে মাওবাদী যোগ আরও স্পষ্ট হল ।
কালিম্পঙ থানার সামনে গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনায় বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তকারীদের সামনে। বোমা বানানোর পদ্ধতি ও বোমায় ব্যবহৃত বিস্ফোরক পরীক্ষা করে পাহাড়ে মাওবাদী যোগ আরও স্পষ্ট হয়েছে পুলিশের কাছে । এই মাওবাদীরা নেপাল দিয়েই পাহাড়ে ঢুকছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে নাগাল্যান্ডের এনএসসিএন জঙ্গি গোষ্ঠীও পাহাড়ে অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কালিম্পঙ ও দার্জিলিংয়ে সকেট বোমা তৈরির পদ্ধতিতেই বোমা তৈরি করা হয়েছিল। এভাবে একমাত্র মাওবাদীরাই বোমা তৈরি করে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি বোমায় নাইট্রো গ্লিসারিন জাতীয় কিছু ব্য়বহার করা হয়েছে বলেও বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষার পর জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এমনকী পাহাড়ে বসেই এই বোমা তৈরি করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাহলে এই ধরনের বিস্ফোরক যা মাওবাদী ও জঙ্গিরা ব্যবহার করে তা পাহাড়ে এল কীভাবে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পাহাড়ে মাওবাদী যোগ আরও স্পষ্ট হয়েছে তদন্তকারীদের কাছে।
[আরও পড়ুন: পাহাড়ে বিস্ফোরণে দায় কার, মোর্চার পাশে দাঁড়িয়ে সিবিআই তদন্ত দাবি দিলীপের]
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাত ধরেই পাহাড়ে মাওবাদী ও জঙ্গিদের আমদানি হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। নেপাল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য থেকেই বিস্ফোরক ও নাশকতার সরঞ্জাম পাহাড়ে মজুত করা হয়েছে। তবে কোনও প্রাণহানির উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র প্রশাসনকে ভয় দেখাতেই ফাঁকা জায়গায় অথবা মাঝরাতে বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এসবের জন্য মোর্চা নেতৃত্বের কাছে টাকা আসছে কোথা থেকে। এখন এই প্রশ্নও ভাবিয়ে তুলেছে তদন্তকারীদের। তাঁদের অনুমান, জিটিএ-র তহবিলে ব্যাপক কারচুপি করেই টাকা নয়ছয় করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সেখানে থেকে সরানো টাকা দিয়েই মোর্চা এখন জঙ্গি ভাড়া করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সেকারণেই নবান্নের অডিট টিম পৌঁছনোর আগেই জিটিএ-র দফতরে আগুন লাগিয়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কালিম্পঙে থানার সামনে বিস্ফোরণের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। দুষ্কৃতীদের খোঁজে পাহাড়জুড়ে শুরু হয়েছে চিরুনি তল্লাশি। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে কালিম্পঙকে। থানার সামনে দিয়ে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।