বামেদের সঙ্গে জোট না করার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা, রাহুল গান্ধীর দাবি ঘিরে ব্যপক জলঘোলা!
নয়াদিল্লি, ২ ফেব্রুয়ারি : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে ঠেকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে মরিয়া হয়ে জোট চাইছে বাম নেতৃত্ব। কংগ্রেসের একটা বড় অংশই সে ভাবনায় সম্মতি জানিয়ে ইতিমধ্যে কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। সোমবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কাছে নিজেদের জোট ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন প্রদেশ নেতারা। আর সেই সময় মমতার পরামর্শ নিয়ে রাহুলের দাবি ঘিরেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যপক জলঘোলা। ['বাম জোট চায় মানুষই', প্রদেশ নেতাদের বক্তব্য শুনলেন রাহুল গান্ধী]
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এদিন প্রদেশ নেতাদের জোট ভাবনার কথা শোনার পর, রাহুল দাবি করেন, পাটনায় নীতিশকুমারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে একান্ত আলাপচারিতায় নানা কথা হয় তাঁর ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা রাহুলকে বামেদের সঙ্গে জোট না করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে দাবি রাহুলের। তিনি বিষয়টি মাথায় রাখবেন বলে দিদি-কে যে আশ্বাস দিয়েছিলেন সে কথাও এদিন জানিয়ে দেন রাহুল।
যদিও রাহুলের এই দাবির কড়া নিন্দা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলের। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিয়ে মনগড়া গল্প ফাঁদছেন রাহুল। এমন কোনও পরামর্শই দিদিমণি রাহুলকে দেননি। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে এই ধরনের গল্প প্রচার শুরু করা হলে তৃণমূল কংগ্রেস কড়া প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হবে। [আমি বসন্তের কোকিল নই, যে সময়ে আসব ফের উড়ে যাব : রাহুলকে আক্রমণ মমতার]
এদিকে রাহুলের মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের মতে, অনেক অনুষ্ঠানেই ভিন্ন দলের দুই নেতার একান্ত আলাপচারিতা হয়েই থাকে। কিন্তু তাতে কী কথা হয়েছে তা এভাবে প্রকাশ্য করা কোনও নেতারই উচিত নয়। মমতা যদি রাহুলকে বামেদের সঙ্গে জোট না করার বিষয়ে বলেও থাকেন তা রাহুল গান্ধীর কখনও উচিত নয় প্রদেশ নেতারাদের সামনে এভাবে তুলে ধরা। যদিও এবিষয়ে কং নেতৃত্বের তরফে আর কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, প্রদেশ নেতা মানস ভুঁইয়া প্রথম থেকেই বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের বিরোধিতা করছেন। সোমবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে প্রদেশ নেতাদের আলোচনার সময়ই মানসবাবু কেন কংগ্রেসের একলা চলা উচিত এই ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আজ মঙ্গলবার, ফের একবার কং সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করবেন তিনি। তবে প্রদেশ নেতারা যাই বলুন না কেন, যত যুক্তিই তারা খাঁড়া করুন না কেন, বামেদের সঙ্গে কংগ্রেস জোটে যাবে কি না, নাকি জোট নাকোচ করে বৃহত্তর স্বার্থে বাংলার শাসকদলকে খোলা মাঠে খেলার সুযোগ করে দেবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিন্তু সোনিয়াই নেবেন।