নবান্নের সামনে হুলুস্থুল, নিশ্চিন্তে বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক মমতার
‘দিল্লি থেকে গুণ্ডা আসছে, আর মুঙ্গের থেকে অস্ত্র। রাজ্যে তরোয়াল নিয়ে গায়ের জোর দেখানো এ রাজ্যে কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না।’ মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, দিল্লির শাসকদল বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসছে।
নবান্নের সামনে যখন বামেদের অভিযান ঘিরে হুলুস্থুলকাণ্ড, তখন নিশ্চিন্তে বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একটি কথাও খরচ করলেন না বামেদের নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে। বরং তিনি প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে নাম না করে আক্রমণ শানালেন বিজেপিকে লক্ষ্য করেই।
সাফ বললেন, 'দিল্লি থেকে গুণ্ডা আসছে, আর মুঙ্গের থেকে অস্ত্র। রাজ্যে তলোয়ার নিয়ে গায়ের জোর দেখানো এ রাজ্যে কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না।' তিনি অভিযোগ করেন, দিল্লির শাসকদল বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসছে। শুধু দিল্লির শাসকদলকেই নয়, সাবধান করে দিয়েছেন তাঁর নিজের দলের নেতাদেরও। সরাসরি কাজল শেখকে ধমক দিয়েছেন। নির্দেশ দিয়েছেন, এলাকা থেকে সমস্ত অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
মমতা বলেন, পাড়ুই-নানুরে বোমা কারখানা চলবে না। সব বোমা কারখানা বন্ধ করতে হবে। সাবধান হও সবাই। প্রশাসন কিন্তু কাউকে রেয়াত করবে না। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনও বেআইনি বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে কড়া ভূমিকা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন তিনি পুলিশকে আরও নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়খণ্ড সীমান্ত এলাকায় যে সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সেখানে পুলিশ পিকেট বসাতে।
এদিকে বামফ্রন্ট পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নবান্ন অভিযানে সামিল হয়। বিজেপি যখন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, তখন বামেরা শক্তির পরীক্ষা দিতেই বিশাল জমায়েত করে এই নবান্ন অভিযান কর্মসূচি সফল করতে। কলকাতা ও হাওড়ার দিক থেকে পাঁচটি পথে নবান্নের দিকে রওনা দেয় বাম মিছিল।
কিন্তু ব্যুহ রচনা করে নবান্নের অনেক আগেই সমস্ত মিছিল রুখে দেওয়া হয়। পুলিশ ও বাম কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ বাধে। ইটবৃষ্টি করা হয়। পাল্টা টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়। চালানো হয় জলকামান। করা হয় লাঠিচার্জও। বিমান বসু থেকে শুরু করে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ও বাম-নেতাকর্মীরা জখম হন।
এতকিছু ঘটনার ঘনঘটা যখন নবান্ন অভিযানকে ঘিরে, তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক। জেলা নিয়েই তাঁর ভাবনা। ভাবনায় নেই বামেদের অভিযান। তিনি স্বাস্থ্য নিয়ে বার্তা দিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের। বহিরাগত রোগীদের নিয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন বীরভূম জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাইরে থেকে অনেকই আসেন চিকিৎসা করাতে। কোন রোগী কোথা থেকে আসছেন, কী পরিষেবা পাচ্ছেন সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় উন্নয়ন বার্তাও দেন তিনি। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে নির্দেশও দেন।