For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

মহেশতলা যেন বঙ্গের মুঙ্গের, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নের মুখে

  • By Oneindia Bengali Digital Desk
  • |
Google Oneindia Bengali News

উন্নয়নের ধ্বজা উড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর 'সুশাসন'-এ কেন রাজ্য ক্রমে বিহারের মুঙ্গেরে পরিণত হচ্ছে? আরও একবার প্রশ্ন উঠে পড়ল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে। যতই বড়াই করুন মু্খ্যমন্ত্রী, এ রাজ্য যে ক্রমেই অস্ত্র তৈরির আঁতুড়ঘর হয়ে উঠছে, তা অস্বীকার করতে পারবেন না উন্নয়নের কাণ্ডারি। অন্ধকার জগতের মানুষজন এতদিন বিহারের মুঙ্গেরের উপরই নির্ভর করেছে। এবার সেই নির্ভরতা কমতে চলেছে এই বাংলার দাক্ষিণ্যে।

বঙ্গের শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাই মুঙ্গেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। মাত্র এক মাসের মধ্যেই কি না তিন তিনটি অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল শুধু একটা জেলায়। এ ক্ষেত্রে আবার বেশ কয়েক কদম এগিয়ে মহেশতলা। এই পুর এলাকা থেকেই মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দু'টি অস্ত্র কারখানা ট্র্যাক করেছে পুলিশ। দেড় কিলোমিটার ব্যবধানে দু'টি কারখানার অবস্থান। তবে পুলিশকে বাহবা দিতে হবে একটি কারণেই, যে তারা অস্ত্র কারখানাগুলির হদিশ করে সমূলে উপড়ে ফেলতে সচেষ্ট।

মহেশতলা যেন বঙ্গের মুঙ্গের, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নের মুখে

তবে এই সাফল্যের পরেও পুলিশ-প্রশাসন উদ্বিগ্ন। কারণ এতদিন এ রাজ্যে যে সমস্ত অস্ত্র তৈরির কারখানার খোঁজ মিলেছে, সেখানে তৈরি হত বড়জোর ওয়ান শাটার পিস্তল, গোলাগুলি, কার্তুজ। কিন্তু রবিবার যে অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলেছে মহেশতলার রবীন্দ্র নগরে, সেখানে তৈরি হয় অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র! সেভেন এমএম, নাইন এমএম, সেমি অটোমেটিক পিস্তল। আর এতেই চক্ষু চরকগাছ রাজ্য পুলিশের। তবে কি এ রাজ্যে অস্ত্রের জোগানে 'স্বাবলম্বী' হয়ে উঠল অন্ধকার জগতের কারবারিরা। নড়েচড়ে বসতেই হচ্ছ পুলিশ প্রশাসনকে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা মহেশতলা পুর এলাকার রবীন্দ্রনগরের নিউ পাঁচুর মোল্লাপাড়ায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এক তলার তালাবন্ধ দুটি ঘর থেকে উদ্ধার করে নাইন এমএম, সেভেন এমএম এবং সেমি অটোমেটিক মিলিয়ে ৩০টি অত্যাধুনিক পিস্তল। পাওয়া যায় প্রচুর ম্যাগাজিন, পিস্তল ও গুলি তৈরির তৈরির সরঞ্জাম। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অস্ত্র কারখানার ৫টি লেদ মেশিন। তবে কোনও অস্ত্র কারিগরকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পান্ডারা আগেই চম্পট দিয়েছে পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে। ভাড়া দিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে বাড়ির মালিককে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে।

৬-৭ মাস আগে বিহারের বাসিন্দা ৫-৬ জন একতলার দুটি ঘর ভাড়া নেয়। তারাই ওই পিস্তল কারখানা চালাত। পুলিশি তদন্ত উঠে এসেছে, ৭০ হাজার টাকা অগ্রিমের বিনিময়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল বাড়িটি। পুলিশের দাবি, ওই বাড়িতে যে অস্ত্র কারখানা চালানো হবে, সে সম্পর্কে সবটাই জানতেন বাড়ির মালিক। তাই তাকে ধোওয়া তুলসিপাতা ভাবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে কলকাতার উপকণ্ঠে যে, এই সব অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হচ্ছে, তা এতদিন কেন টেরও পায়নি পুলিশ। যখন তারা টের পেল, তখন তো ফাঁদ কেটে পালিয়ে গিয়েছে অস্ত্র কারবারিরা।

পুলিশ এখন সর্বাগ্রে জানার চেষ্টা করছে, এত পিস্তল-কার্তুজ যেত কোথায়? অবশ্যই এই বাংলাতেই বিভিন্ন ঘাঁটেত ছড়িয়ে পড়ল বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র। পুলিশ জানতে পেরেছে, কলকাতা বন্দর সংলগ্ন এলাকা, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করা হত এই মহেশতলা থেকে। চোরাপথেই তা ছড়িয়ে পড়ত উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া বা উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। কারা এই অস্ত্র কিনত, কে বাড়ির মালিকের সঙ্গে ভাড়াটিয়াদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ এই বীজ সমূলে উপড়ে ফেলতে তৎপর।

সাম্প্রতিককালে, রাজ্যে যে সব অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলেছে, সেগুলিতে ওয়ান শটার জাতীয় দেশি বন্দুক কিম্বা গুলি তৈরি হত। অত্যাধুনিক পিস্তল তৈরি কারখানার খোঁজ মিলল এই প্রথম! যা নিয়ে গোয়েন্দাদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। তাই আর কোথাও এমন অস্ত্র কারখানা তৈরি হয়েছে কি না তা খুঁজে বের করতে দফায় দফায় অভিযান চলবে। এ জন্য বাজি কারখানাগুলিকে আতসকাঁচে ফেলছে প্রশাসন। কেননা বাজি কারখানার আড়ালে বহু জায়গায় বেআইনি অস্ত্র কারখানা চলে। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে খুব সহজেই তা চালানো যায়।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতার উপকণ্ঠে এই দক্ষিণ ২৪ পরগনারই বারুইপুরের বেগমপুরে নির্জন একটি বাড়িতে বাজি কারখানার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে রমরমিয়ে অস্ত্র কারখানা চালানো হত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। মণ্ডলপাড়ার ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একটি দেশি পিস্তল, ১৯ রাউন্ড গুলি, ১৬ রাউন্ড ছররা, এক বস্তা গুলির খোল। বন্দুক ও গুলি তৈরির প্রচুর কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতিও উদ্ধার হয় ঘটনাস্থল থেকে।

পুলিশ অবাক ওই বাড়ি থেকে এক বস্তা গুলির খোল উদ্ধার হওয়ায়। খালি কার্টিজ অর্থাৎ ব্যবহৃত গুলির খোল দিয়ে গুলি তৈরি হত এখানে। তৈরি হত বন্দুকও।উৎসবের মরশুমে পুলিশ এখন খুব সাবধানী। সামনেই কালীপুজো আসছে। তার আগে দফায় দফায় অভিযান চালানো হবে। কোনওমতেই বিহারের মুঙ্গের হতে দেওয়া হবে না মহেশতলাকে। শক্ত হাতেই এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য পুলিশ।

English summary
Maheshtala became like Bengal 'Munger'
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X