দাসত্বের নরক-যন্ত্রণা কাটিয়ে আরব মুলুক থেকে ঘরে ফিরলেন জয়ন্ত
চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে আরব মুলুকে পাড়ি দিয়ে ভাগ্যের ফেরে দাস বনে গিয়েছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত বিশ্বাস। পাঁচমাসের নরক-যন্ত্রণা কাটিয়ে অবশেষে ঘরে ফিরলেন তিনি।
কলকাতা, ১৬ নভেম্বর : চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে আরব মুলুকে পাড়ি দিয়ে ভাগ্যের ফেরে দাস বনে গিয়েছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত বিশ্বাস। পাঁচমাসের নরক-যন্ত্রণা কাটিয়ে অবশেষে তিনি ঘরে ফিরলেন। মঙ্গলবার তিনি সৌদি আরবের রাজধানি রিয়াধ থেকে মুম্বইয়ে পৌঁছন। বুধবার সকালে মুম্বই থেকে কলকাতা হয়ে তাঁর ফেরা নৈহাটির গ্রামে।
তিনি ভাবেননি যে আবার বাড়ি ফিরতে পারবেন। আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রক ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জন্যই তাঁর বাড়ি ফেরা সম্ভব হল। এতদিন পর কলকাতায় ফিরে স্বভাবতই খুশি জয়ন্ত। খুশি তাঁর পরিবারও। নৈহাটির বাড়িতে ফেরার পরে তাঁকে বরণ করে নেন পরিবারের লোকজন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছেন, তাই ছেলের জন্য তাঁর প্রিয় খাবারগুলি রান্না করেছেন জয়ন্তর মা। নৈহাটির বিশ্বাস পরিবারে অনেকদিন পর আজ খুশির হাওয়া।
উত্তরবঙ্গের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন জয়ন্ত। তারপর উজ্দ্বল ভবিষ্যতের খোঁজে দিল্লি ও মুম্বইয়ের কিছু দালালের মারফত পৌঁছে যান সুদূর আরব মুলুকে। সেখানে ভালো কোম্পানিতে চাকরি বদলে জোটে এক শেখের উটের ফার্মের কাজ। শুরু হয় জয়ন্তের দাসত্বের জীবন। সে এক অসহনীয় কষ্ট। জয়ন্তই বর্ণনা করছিলেন, খেতে দিত না। হাড়ভাঙা পরিশ্রম।
কাজে বিরত হলেই জুটত মার। শরীর খারাপ হলেও রেহাই মিলত না। এরই মধ্যে পালানোর চেষ্টা করে আরও মারধর খেতে হয়েছে। তাঁকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। শেষপর্যন্ত পালাতে সক্ষম হলেও জুটল চোর অপবাদ। তারপর জেল। অবশ্য জেলে গিয়েই তিনি যোগাযোগ করতে পারেন পরিবারের সঙ্গে। পরিবারের চেষ্টায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও বিদেশমন্ত্রকের সাহায্যে আবার জয়ন্ত দেশে ফিরে পেলেন মুক্তির স্বাদ।