দুর্গোৎসব শেষ, চন্দননগরে শুরু জগদ্ধাত্রী আরাধনার কাউন্টডাউন
চন্দননগর, ১৪ অক্টোবর : দশমীর শেষে মায়ের বিদায় বার্তায় আকাশ-বাতাস যখন ভারাক্রান্ত, চারিদিকে যখন বিষাদের ছায়া, তখন হুগলির চন্দননগর মেতে উঠল জগদ্ধাত্রী পুজো-প্রস্তুতির আনন্দে। দুর্গা প্রতিমা ভাসানের সঙ্গে সঙ্গেই জগদ্ধাত্রীর কাঠামো পুজোয় উৎসবের কাউন্টন্ডাউন শুরু হল ঢাক-ঢোল পিটিয়ে। চিরাচরিত প্রথা মেনেই চন্দননগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী উৎসবের কাঠামো পুজো হয় বিজয়া দশমীতে।
মণ্ডপ-সজ্জা থেকে প্রতিমাসজ্জায় অভিনবত্বের ছোঁয়া এনে দর্শনার্থীদের কাছে নিজেদের সেরা প্রতিপন্ন করতে এদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় তোড়জোড়। আলো নিয়ে চন্দননগরের সুনাম বহু দিনের, সেই আলোকসজ্জার পাশাপাশি নানা থিম ও বিষয় ভাবনায় একেবারেই স্বতন্ত্র চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী আরাধনা। এক উৎসবের রেওয়াজ শেষ হতে না হতেই মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় আর এক উৎসবের আমেজ।
দুর্গাপুজো বাংলা ও বাঙালির কাছে সবথেকে বড় উৎসব হিসাবে গণ্য হলেও, চন্দননগরের মানুষের প্রাণের উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো। তাই বরাবরই এখানে দুর্গাপুজোয় মানুষের উৎসাহ সেভাবে চোখে পড়ে না। দুর্গাপুজো হয় নমো নমো করে। বলা যায় চন্দননগরবাসী অপেক্ষা করে থাকে বিজয়া দশমীর জন্য, যেদিন থেকে কাউন্টডাউন শুরু হয়ে যায় জগদ্ধাত্রী আরাধনার। কলকাতা বা অনান্য জেলায়, এমনকী হুগলি জেলারও অন্য প্রান্তে থিম ও বড় বাজেটের দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু চন্দননগরে সেভাবে থিম বা বড় আকারের দুর্গোৎসব প্রায় নেই-ই।
এখনে পুজো মানে জগদ্ধাত্রী, উৎসব মানে জগদ্ধাত্রী, থিম-বিষয় ভাবনা সব কিছুই জগদ্ধাত্রীকে ঘিরেই। কলকাতার দুর্গাপুজোর মতোই জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগর হয়ে ওঠে লোকে লোকারন্য, আলোর রোশনাইয়ে চারদিনভর এক অনন্য পরিমণ্ডল শহরজুড়ে।
মা দুর্গার ভাসান শুরু হওয়ার পর থেকে চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বরে বহু বড় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। শুধু পুজো কমিটি-ই নয় প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যেও। ইতিমধ্যে নতুন পাড়া সর্ব্বজনীন, লক্ষ্মীবাজার সর্ব্বজনীন, চাউলপট্টি আদি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির মতো মণ্ডপগুলি কাঠামো পুজোর মাধ্যমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।