আলোচনা ভেস্তে গেল, খড়গপুর আইআইটি-র গবেষক-পড়ুয়ারা এবার অনশন আন্দোলনে
ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ফের আন্দোলনে সামিল হলেন খড়গপুর আইআইটি-র গবেষক পড়ুয়ারা। এবার সরাসরি আমরণ অনশনের ডাক দিলেন তাঁরা।
পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ ডিসেম্বর : ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ফের আন্দোলনে সামিল হলেন খড়গপুর আইআইটি-র গবেষক পড়ুয়ারা। এবার সরাসরি আমরণ অনশনের ডাক দিলেন তাঁরা। আইআইটি গবেষক পড়ুয়াদের দাবি, যতক্ষণ না হস্টেল ফি-র বিপুল বৃদ্ধি প্রত্যাহার করা হয়, ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। বৃহস্পিতবার রাত সাড়ে আটটা থেকে অনশন শুরু করেছেন দুই শতাধিক আইআইটি পড়ুয়া। সকাল থেকেও অনশন-আন্দোলন চলছে।
৪৮ ঘণ্টা অবস্থান-বিক্ষোভ চালানোর পর বৃহস্পতিবারই দুপুরে তা তুলে নেওয়া হয়। আইআইটি-র গবেষক পড়ুয়াদের পক্ষা থেকে। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়ায় গবেষক পড়ুয়ারা আলোচনায় বসতে রাজি হন। তখনই অবস্থান তুলে নিতে মনস্থ করে। কিন্তু খড়গপুর আইআইটিতে জরুরি বৈঠক ডেকেও সমাধান সূত্র বের না হওয়ায় পুনরায় আন্দোলনকেই হাতিয়ার করলেন পড়ুয়ারা। হস্টেল ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত।
তিনদিনে পড়ল খড়গপুর আইআইটির ছাত্র-আন্দোলন। মঙ্গলবার থেকে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল আইআইটি ক্যাম্পাসে, বুধবার খানিক নমনীয় হয়ে ডিরক্টর ও ডিনদের ঘেরা মুক্ত করেছিলেন আইআইটি পড়ুয়ারা। টানা ২৫ ঘণ্টা ঘেরাও থাকার পর মুক্ত হয়ে স্বস্তি মিলেছিল ডিরেক্টর ও ডিনদের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নমনীয় হয়নি। তাঁরা আলোচনাতেও রাজি ছিলেন না। তাই গবেষক পড়ুয়ারা বিক্ষোভ-অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষপর্যন্ত আরও একদিন পর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয় আলোচনায় বসে সমস্ত সমস্যার সমাধান করা হবে। সেইমতো রণে ভঙ্গ দিয়ে আলোচনার টেবিলে যান পড়ুয়ারা। কিন্তু দফায় দফায় আলোচনার পরও সমাধান সূত্র মেলনি। তাই আলোচনার টেবিল থেকে ফিরে গিয়ে ফের আন্দোলনেই আস্থা রাখেন তাঁরা।
এর আগে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কখনও এইরূপ ঘেরাও বিক্ষোভ অভিযান চালানো হয়নি খড়গপুর আইআইটি। একেবারেই যাদবপুরের ধাঁচে এই ঘেরাও চলে। খড়গপুর আইআইটি-র পড়ুয়াদের দাবি, একান্ত নিরূপায় হয়ে আমাদের বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হয়েছে। গতরাতে বিশাল মিছিল বের করেন তাঁরা।
তারপরই মূল ভবনের সামনে অনশনে বসেন। গতকাল মিটিংয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস মেলে, এই বর্ধিত ফি কমানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া এখনই সম্ভব নয়। এ জন্য আলোচনা প্রয়োজন। তখন ছাত্রছাত্রীরা দাবি তোলেন তাহলে পিছিয়ে দেওয়া হোক ফি জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট তারিখটি। উল্লেখ্য ২৬ ডিসেম্বর এই ফি জমা দেওয়া কথা।
ছাত্রদের দাবি, যখন আলোচনা ছাড়া সিদ্ধান্ত জানানো সম্ভব নয়, তবে কোন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে না ওই তারিখ? এই ইস্যতেই ভেস্তে যায় বৈঠক। অবশ্য শুক্রবার সকালে অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের কাছে কর্তৃপক্ষের একটি বার্তা এসেছে। এখন দেখার পড়ুয়ারা আবার আলোচনার টেবিলে ফেরেন কি না।