‘বাংলায় এলে ১৫ দিনের মধ্যে ধর্ষিতা হবেন!’ এ কেমন মন্তব্য রূপার, কড়া প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের
বসিহাটের হিংসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা করে পদত্যাগ দাবি করেছেন বিজেপি। কিন্তু তৃণমূল সরকারের সমালোচনায় রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবার যা বললেন, তাতে বাংলার মাথা হেঁট হয়ে গেল।
ভিনরাজ্য থেকে কোনও মহিলা বাংলায় এলে তাঁর কোনও নিরাপত্তা নেই। ১৫ দিনের মধ্যে ধর্ষিতা হবেন তিনি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি দেশের নেতাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, আপনারা রাজ্যের শাসকদলের আনুকূল্য ছাড়া একবার মেয়ে-বউদের পাঠিয়ে দেখুন, কী হয়!
বসিহাটের হিংসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বন্দ্যোপাধ্যয়ের কঠোর সমালোচনা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁর পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সরকারের আমলে বাংলার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবার যা বললেন, তা বাংলার সংস্কৃতির পরিপন্থী। বাংলা সম্পর্কে ভিনরাজ্যের মানুষের কাছে অন্য বার্তা যাবে তাঁর এই মন্তব্যে। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই বক্তব্যকে জঘন্য রূচির পরিচয় বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আগে বিজেপি নেত্রীই জানান তিনি কতবার ধর্ষিতা হয়েছেন বাংলায়? তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে চিত্রটা।'
শুক্রবার এক সংবাদসংস্থায় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেন। তাচ্ছিলের হাসি হেসে তিনি বলেন, 'দেশের প্রত্যেকটি নেতার কাছে আবেদন, নিজের ঘরের মেয়ে-বউকে যেন একবার বাংলায় পাঠান। সরকারি আনুকূল্য ছাড়া যদি ওই মহিলারা বাংলায় থাকেন তবে ১৫ দিনের মধ্যে ধর্ষিতা হবেন।
তিনি এমনও বলেন যে, বাংলায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও নারীসুরক্ষা কোথায় নেমে গিয়েছে তা কল্পনাতীত। বাইরের মহিলারা ১৫ দিনের মধ্যে কেউ যদি ধর্ষিতা না হন, তখন তিনি বাকি কথা বলবেন। এই কথা বলে তিনি রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে চূড়ান্ত হতাশা ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতির জন্য বিজেপির উসকানি রয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। দুই দলের মধ্যে তা নিয়ে বিতর্ক চলছে সমানে। তারপর এমন কুরুচিকর মন্তব্য দু'দলের বিরোধে আলাদা মাত্রা দেবে। সেইসঙ্গে এমন দাবিও তুলেছে বুদ্ধিজীবী মহল, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের এ ধরনের মন্তব্য দেশের কাছে মাথা হেঁট করে দেবে বাংলার।
শোভনদেববাবু বলেন, 'রাজনৈতিক বিরোধিতা করতে গিয়ে তিনি বাংলাকে কতখানি খাটো করলেন, তা একবার ভেবে দেখুন রূপাদেবী। যখন উনি গোটা রাজ্যের বদনাম করছেন একটা মন্তব্যে, তখন ওনার আগে ভাবা উচিত বাংলায় থেকে নিজে কতবার ধর্ষিতা হয়েছেন। সেই উত্তর সামনে এলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ওনার বক্তব্যের সারবত্তা। তাহলে এ ধরনের মন্তব্যের প্রকৃত সত্যও সামনে এসে যাবে সহজেই।'