‘আমিই পাহাড়ের মুখ্যমন্ত্রী, এখানে আমার রাজ চলবে’, গুরুঙ্গের চ্যালেঞ্জ মমতাকে
পাহাড় অশান্ত করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করে গুরুঙ্গের আক্রমণ— ‘পাহাড়ে কোনও অশান্তি আমি বরদাস্ত করব না। আমি সতর্ক করে দিচ্ছি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে।
নিজেকে পাহাড়ের মুখ্যমন্ত্রী বলে দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুঙ্গ। পাহাড় অশান্ত হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করে শুক্রবার গুরুঙ্গ বলেন, 'সমতলে যেমন মমতার বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ চালান, আমার রাজ চলে পাহাড়ে।' তাঁর হুঙ্কার, 'বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আমাদের শক্তি দেখাচ্ছেন। উনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন আমি জিটিএ-র একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমিই পাহাড়ের মুখ্যমন্ত্রী।'
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'পাহাড়ে কোনও অশান্তি আমি বরদাস্ত করব না। আমি সতর্ক করে দিচ্ছি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। পুলিশ পাহাড়ের মানুষের উপর যে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে, আমরা মেনে নেব না। আমরা এনডিএ-তে রয়েছি। আমরা এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠাবো। এদিন পাহাড়ে রাষ্ট্রপতি শাসনেরও দাবি তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পাহাড়। দার্জিলিং রাজভবনে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মন্ত্রিসভা নিয়ে বৈঠকে ব্যস্ত, তখনই রাজভভনের বাইরে গুরুঙ্গের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। ক্রমেই শৈল শহরের উত্তাপ বাড়তে থাকে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ শুরু মোর্চা নেতাদের, তারপরই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পাহাড়। ইটবৃষ্টি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি, লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসে জখম হন উভয় পক্ষের অনেকেই। তারই জেরে এদিন বনধ ডাকে মোর্চা নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অশান্ত পাহাড়ে পর্যটকদের আশ্বস্ত করেন। মোর্চা নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেন। দু'পক্ষই দু'পক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। এই নিয়ে টান টান উত্তেজনা। পাহাড়কে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে নিজে যেমন ঘুরছেন পাহাড়ের কোণে কোণে, তেমনই সেনা-পুলিশ মোতায়েন করেছেন প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। আর কোনওভাবেই হিংসা ছড়াতে দিতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। তবু এরই মধ্যে পুলিশ প্রহরা না থাকায় মংপুতে আগুন লাগানো হয় নির্মীয়মাণ আইটিআই ভবনে।
এদিন বিমল গুরুং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, পাহাড় অশান্ত হওয়ার জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের উসকানিতেই এই অশান্তি। যখনই আসেন পাহাড়ে অশান্তি ছড়ানোর ইন্ধন দেন। পাহাড়ের পর্তি বঞ্চনা আর মেনে নেবেন না তাঁরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, বিচ্ছিন্নতবাদী শক্তিরাই এই অশান্তি ছড়ানোর জন্য দায়ী। তবে এসব বরদাস্ত করা হবে না। লক্ষ্মণরেখা ছাড়য়ে গিয়েছে মোর্চা। এবার আইনি পথের মোকাবিলা হবে।